টিকেট কোথায় পাওয়া যাবে? কিউবা মিচেল আসবে কিনা? ফাহমিদুল ইসলাম খেলবে তো? এত এত প্রশ্ন, উত্তরের সন্ধানে হন্যে হয়ে সবাই ঘুরছে সর্বত্র। শেষ কবে বাংলাদেশের ফুটবলকে নিয়ে এতটা উত্তেজনা কিংবা উন্মাদনার জন্ম হয়েছিল? মনে করতে পারবেন না হয়ত। তাইতো বলা যেতেই পারে দেশের ফুটবলে ১০ জুনের ম্যাচটি হতে চলেছে একটি মাইলস্টন।
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ। সেই ম্যাচকে ঘিরে গোটা ফুটবল পাড়া ভীষণ সরব। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে আলাদা করে সংবাদ সম্মেলন করে জানাতে হচ্ছে, ‘টিকিট কোথায় ও কিভাবে পাওয়া যাবে।’
বড়বড় প্রতিষ্ঠান পৃষ্ঠপোষকতার হাত বাড়িয়ে দিতে শুরু করেছে। এই একটা ম্যাচের উপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের ফুটবলের ভবিষ্যত। এর কারণ কি? এমন একটা প্রশ্ন চাইলেই তোলা যায়। প্রথমত হামজা চৌধুরি আর সামিত সোম।
এক হামজার অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের ফুটবল দলকে কতটা শক্তিশালী করেছে, সেটা প্রমাণ হয়েছে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেই। সেই ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হলেও, মধ্যমাঠে ভারতের দাপট স্তিমিত থেকেছে হামজার কারণে। এবার সেই মিডফিল্ডে যুক্ত হচ্ছেন সামিত। এবার যে বাংলাদেশ মধ্যমাঠের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেবে সে কথা না বললেও চলছে।
দর্শক-সমর্থকরা ভাল খেলা উপভোগ করতে চায়। প্রিয় দলের জয় দেখতে চায়, গোলের আনন্দে ভেসে যেতে চায়। সেই আনন্দের একটা প্রতিশ্রুতি যেন ভেসে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। এ কারণেই ১০ জুনের ম্যাচকে ঘিরে চারিদিকে এত আয়োজন, এত আলোচনা।
তাছাড়া দীর্ঘদিনের সংস্কার শেষে জাতীয় স্টেডিয়ামে গড়াচ্ছে খেলা। বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতের আবেগের সাথে মিশে আছে, শহরের ব্যস্ততম অঞ্চলের সেই মাঠটি। সে কারণেও একটা বাড়তি উন্মাদনার সঞ্চার ঘটেছে। একটা ভাল খেলা দেখার প্রতাশা সকলের মাঝে।
তাছাড়া মানুষ ক্রিকেট কিংবা ফুটবল ময়দানে নায়ক খোঁজে। যারা কি-না বিশ্ব দরবারে এই লাল-সবুজের নামকে তুলে ধরে। হামজা চৌধুরি ইউরোপীয়ান ফুটবলের মঞ্চে বাংলাদেশকেই বহন করছেন। তাতে করে ইউরোপের ফুটবলে বুদ থাকা প্রজন্মের কাছেও ১০ জুনের ম্যাচ আলাদা গুরুত্ব বহন করছে।
সবকিছু মিলিয়ে তাই আলোচনা হচ্ছে বেশি। যদিও এক্ষেত্রে বেশ সূক্ষ্মভাবে বাফুফে ও গণমাধ্যমও আলোচনার খোরাক যোগাচ্ছে। বাফুফে হামজা-সামিতদের জন্যে মানুষের মনে তৈরি হওয়া আগ্রহকে কাজে লাগাতে চাইছে। ফুটবলের বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষার্থে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছে ভিন্ন আয়োজনের। সেসব প্রচার ও প্রসারে গণমাধ্যম রাখছে ভূমিকা।
এখন স্রেফ একটা ফলাফলের পালা। হামজা, সামিত, ফাহমিদুলদের পায়ে ভর দিয়ে কোটি সমর্থকদের আবারও হবে পুনর্জাগরণ। এই বাংলায় ফের হবে ফুটবলের জয়গান। ফুটবলের নব জোয়ারে বুদ হবে নতুন প্রজন্ম। শুরুটা হবে ১০ জুন থেকেই, তেমন প্রত্যাশার কুড়েঘর ক্রমশ হচ্ছে দৃশ্যমান।