খোদ আইসিসিও খানিকটা তাচ্ছিল্য করেছিল। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিকরা খেলতে নামবে মাঠে। সেদিন সকাল বেলায় দুই ক্রিকেট পাগল দেশের প্রস্তুতি ম্যাচ মাঠে গড়ায়। ভারত-বাংলাদেশের গা গরমের ম্যাচকে ঘিরেও দর্শকদের আগ্রহ ছিল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের থেকেও বেশি।
একটা চাপা ক্ষোভ হয়ত পুষে রেখেছিলেন অ্যারন জোন্স। তিনি যেন বিশ্বকে বলতে চাইলেন যুক্তরাষ্ট্র দল ও তার খেলোয়াড়দের এতটা হালকা করে দেখবার কিছু নেই। সে প্রমাণের পথে তিনি পেছনে ফেলেছেন ভারতের যুবরাজ সিংকে। এমনকি প্রোটিয়া ব্যাটার রাইলি রুশোকেও ছাপিয়ে গেছেন। ‘ইউনিভার্স বস’ ক্রিস গেইলের সাথে গিয়ে বসেছেন রেকর্ড বইয়ে।
কানাডার দেওয়া ১৯৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামে যুক্তরাষ্ট্র। সেই রান তাড়া করতে নেমে হোঁচট অবশ্য খেয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু সেই হোঁচট যেন জোন্সের মনের চোটকে করেছিল দ্বিগুণ। তাইতো তিনি দেখালেন নিজের শক্তি, বাউন্ডারির ফুলঝুরিতে করলেন নিজের সক্ষমতা প্রদর্শন।
২৩৫ স্ট্রাইকরেটের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন অ্যারন জোন্স। মাত্র ৪০ বলে ৯৪ রান করেছেন আমেরিকান এই ব্যাটার। এই ইনিংস খেলার পথে দশ-দশটি ছক্কা হাকিয়েছেন জোন্স। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে দশটি ছক্কা হাঁকানো ব্যাটার এখন তিনি।
তার খেলা ইনিংসটি তৃতীয়। এর আগে দুই দফা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে ১০ বা তার বেশি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ক্রিস গেইল। একটি ইনিংসে তিনি ১১ বার হাওয়ায় ভাসিয়ে বাউন্ডারি আদায় করেছেন। আরেক ম্যাচে ১০বার বলকে আছড়ে ফেলেছেন সীমানার ওপারে।
ঠিক তার পরের স্থানেই এখন অ্যারন জোন্সের অবস্থান। এমনকি টেস্ট খেলুড়ে দেশের খেলোয়াড়রাও রয়েছে বেশ পেছনে। একটি ম্যাচে ৮টি ছক্কা পর্যন্ত হাঁকিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান রাইলি রুশো। একটা সময় বিশাল সব ছক্কা মারতে পারার সুখ্যাতি ছিল যুবরাজ সিংয়ের। এক স্টুয়ার্ড ব্রডকেই তো তিনি মেরেছিলেন এক ওভারের ছয়টি ছয়।
সেই যুবরাজও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে সর্বোচ্চ ৭টি ছক্কা মেরেছিলেন একটি ইনিংসে। ঠিক এতটাই দুর্দান্ত খেলেছেন মার্কিন ব্যাটার অ্যারন জোন্স। বহুকাল ধরে তিনি উজ্জ্বল আলো বিকিরণ করে যাবেন ইতিহাসের পাতায়। মার্কিন মুলুকের ক্রিকেট ইতিহাসে তার জন্য নিঃসন্দেহে বরাদ্দ হবে আলাদা এক অধ্যায়।