রিজান হোসেনের একার কাছেই নতজানু সাউথ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব ১৯ দল। ব্যাট হাতে ৯৫ রানের পর বল হাতে ফাইফার। তাঁর জাদুকরী পারফরম্যান্সেই ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের যুবারা।
শুরতেই আফ্রিকার আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। আগ্রাসী জাওয়াদ আবরারের ব্যাট এদিন চলে ধীরগতিতে। ২২ বলে ১৬ রান করে রিফাত বেগ ফিরে গেলে, তিনে নামা আজিজুল হাকিম তামিমও সুবিধা করতে পারেননি। ২৭ বলে সাত রানের মন্থর ইনিংস খেলে দলের চাপ বাড়িয়েছেন।
১৯তম ওভারের মাথায় ৬৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ধুকছে। পরের গল্পটা কালাম সিদ্দিকী আর রিজান হোসেনের। ক্রিজে নেমেই প্রতিআক্রমণ শুরু করেন। দুজনের ব্যাট থেকে আসে ১১৭ রানের জুটি। ৭৬ বলে ৬৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে কালাম সাজঘরে ফেরেন। স্কোরবোর্ডে তখন চার উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান।
তখনও একপ্রান্তে রিজানের দায়িত্বশীল লড়াই চলতে থাকে। ক্রিজে পুরোটা সময় জুড়েই ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তবে ভাগ্যের রোষে কাটা পড়েন ৯৬ বলে ৯৫ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলে। পাঁচ রানের আক্ষেপের সাথে তখনও যোগ হয়েছে রান আউটের বেদনা। শেষদিকে আবদুল্লাহর ২৯ বলে ৩৮ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে এনে দেয় লড়াকু পুঁজি। সাউথ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্যটা দাঁড়ায় ২৭০ রানের।
সূচনাটা ভালোই করে আফ্রিকার দুই ওপেনার। পাওয়ার প্লের ফায়দা কাজে লাগিয়ে বিনা উইকেটেই তোলে ৫৯ রান। ঠিক তখনই আল ফাহাদের হানা, আদনান লাগাদিয়েনকে ফেরান তিনি। আরেক ওপেনার জরিখ ফিরে গেলে দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ বুলবুলিয়া এবং জেসন রোলস। দুজনে যেন হয়ে ওঠেন গলার কাঁটা।
আর তখনই রিজান শুরু করেন নিজের ঝলক। বুলবুলিয়াকে দিয়ে শুরু করেন আর শেষটা হয় মাজোলাকে পকেটে পুরে। মাঝের সময়টাতে আরও তিন শিকার। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডার।
রিজান যেন পাঁচ রানের আক্ষেপ সুদে-আসলে আদায় করেছেন। ৮.৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৩৪ রান দিয়ে তুলেছেন পাঁচ উইকেট। রিজানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ২৩৬-এই থামে আফ্রিকার ইনিংস, বাংলাদেশ জয় পায় ৩৩ রানে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আক্ষেপ একজন আদর্শ পেস বোলিং অলরাউন্ডারের অনুপস্থিতি। রিজান হোসেনের এমন পারফরম্যান্স তাই তো দেশের ক্রিকেটে একটা সম্ভাবনার বীজ বুনে দিচ্ছে, স্বপ্ন দেখাচ্ছে বড় কিছুর। রিজান হবেন কি বাংলাদেশের সেই স্বপ্নসারথি!