সুনীল নারাইনের নাড়ী নক্ষত্র

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুনীল নারাইনকে ফেরাতে চেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড। অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল খুব করে চেয়েছিলেন তাঁকে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন না এমনটা জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই সেটা মন খারাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সমর্থকদের, আর সেই মন খারাপের পরিমাণ বেড়ে গেলো লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে তাঁর পারফরম্যান্স দেখার পরে।

চলতি আইপিএলে মেন্টর হিসেবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর। এরপরই নারাইনকে ওপেনিংয়ে পাঠানোর পুরনো কৌশল আবারো কাজে লাগান। সাবেক সতীর্থের আস্থা বৃথা যেতে দেননি তিনি, টুর্নামেন্ট জুড়ে হয়ে উঠেছেন দুর্দান্ত ধারাবাহিক। তাঁর ব্যাট থেকে একের পর এক মনের রাখার মত ইনিংস।

সবশেষ লখনৌর বিপক্ষে স্রেফ ৩৯ বলে ৮১ রান করেন এই ব্যাটার। ছয় চার আর সাত ছয়ে সাজানো ইনিংসটিতে স্ট্রাইকরেট স্বাভাবিকভাবেই আকাশ ছুঁয়েছে, সংখ্যার হিসেবে সেটা ২০৮! তাঁর এমন ব্যাটিংয়ের ফলে কলকাতা পেয়েছে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ, আর তিনি নিজে উঠে এসেছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকার তিন নম্বরে।

এদিন প্রথম থেকেই আগ্রাসী ছিলেন এই বাঁ-হাতি; নাভিন উল হককে টানা দুই চার মেরে তাণ্ডবের শুরুটা করেছিলেন। এরপর মহসিন খানের পাঁচ বল থেকে আদায় করেছেন আরো ১৮ রান। পাওয়ার প্লে শেষে তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছিল ১৩ বলে ৩০ রান! অর্থাৎ দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়ার যে দায়িত্ব তাঁকে দেয়া হয়েছে সেটা দারুণভাবে পালন করেছেন।

তবে এতটুকুতেই তুষ্ট হননি এই অলরাউন্ডার, স্রেফ ২৭ বলে হাফসেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেন। তারপরও থামেনি তাঁর ঝড়ো ব্যাটিং, পরের ১১ বলে আরো ২৮ রান করেন। শেষপর্যন্ত বারোতম ওভারে রবি বিষ্ণয়ের ডেলিভারিতে থামতে হয় তাঁকে, ততক্ষণে অবশ্য দলকে বিশাল সংগ্রহের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন তিনি।

চলতি আইপিএলে অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছেন উইন্ডিজ তারকা। বরাবরের মত বল হাতে অবদান রাখছেন ঠিকই, তবে আসল চমক উপহার দিয়েছেন ব্যাট হাতে। ইতোমধ্যে চারশর বেশি রান করেছেন তিনি, অরেঞ্জ ক্যাপের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বিরাট কোহলির সঙ্গে। বলতেই হয়, ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে পরিপূর্ণ রূপে দেখা যাচ্ছে তাঁকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link