ক্রীড়াবিদ হলেই কী ভালো-মন্দ খাওয়া বন্ধ?
না, অনেক ভোজনরসিক খেলোয়াড়ও আছেন। তারা এই খেলাধুলার জীবনেও দিব্যি চালিয়ে যান পছন্দের খাওয়া। তবে সেটা অবশ্যই হিসেব নিকেশ করে। এই যেমন মোহাম্মদ আমির। রসনাকে তিনি বিসর্জন দেননি।
পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমির খাবার-দাবারে যেমন রসিক, তেমনই সচেতন। সম্প্রতি ইএসপিএন ক্রিকইনফোর মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি এ সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্নের।
কোন খাবারটা আপনি বারবার খেতে পছন্দ করেন?
আমি তুর্কি খাবার পছন্দ করি। বলতে পারেন এটা আমি প্রতিদিনই খেতে পারব। এই খাবারটা অনেকটা গ্রিল করা আর বেশ স্বাস্থ্যকর আর রিকভারি আইটেম। মিক্সড গ্রিল খাবার গুলো আমি বেশি পছন্দ করি।
এমন একটা খাবারের নাম বলুন যেটা আপনি নিজের জন্যে রান্না করতে পারবেন?
নেই! আমি কিছুই রাঁধতে পারিনা। আমি ভীষণ অলস মানুষ; এতটাই যে চা-ও বানাতে পারিনা।
আপনার কোন সতীর্থ রান্নার ব্যাপারে পারদর্শী?
অনেকেই আছে। ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় মনে আছে, সাঈদ আজমল দারুণ রান্না করেছিল। ও এত সুন্দর করে ডাল রান্না করেছিল, দারুণ! আমরা কিছু হালাল খাবার খুজছিলাম, পরে সাঈদ ভাই বলল আমরা নিজেরাই বরং রান্না করে নিই।
লিগ টুর্নামেন্ট চলার সময় আপনি বিশেষ কোন খাবারটা খান? টেস্ট আর লিগের ম্যাচের দিনের খাবারের মেন্যু কি আপনার আলাদা হয়?
আমি তুর্কি আর লেবানিস খাবার পছন্দ করি; আর দুবাই এলে এটাই খাই। এখানে কোন ফ্যাট নেই বরং কার্বোহাইড্রেট আর প্রোটিন আছে। আবার বিপিএলের মত জায়গায় আমি ভাত আর ডাল খাই। বাংলাদেশে আমার এটাই ভাল লাগে। ওখানে গেলে বেশিরভাগ সময় আমি ভেজিটেরিয়ান খাবার খাই। আবার পাকিস্তানে ফিরে এলে, আমার স্ত্রী একজন ভাল কুক তো পাস্তা, ম্যাশড পটেটোস, চিকেন স্টেক এসব খাওয়া হয়।
একজন খেলার মানুষ হিসেবে আমি মনে করি ব্রেকফাস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি ব্রেকফাস্ট না করেন তাহলে সারাদিন আপনাকে সমস্যায় পড়তে হবে। আর আমি সবসময় ঠিক সময়ে খাবার খাই। সাড়ে সাতটা থেকে নয়টার মধ্যে ব্রেকফাস্ট করে ফেলি। বারোটা থেকে দুটোর মধ্যে লাঞ্চ সেরে নিই আর সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে ডিনার করি। খেলোয়াড় হিসেবে আমাকে মাঠে সময় কাটাতে হয়, জিমে যেতে হয়, ট্রেনিং করতে হয়, আমি তাই ঠিকঠাক সময়ে খাবার খাই!
আর নিজেকে আপনারই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আপনিই জানেন আপনার শরীরের কি প্রয়োজন। টেস্ট আর ওয়ানডেতে আমি কোন ভারী খাবার নিই না। বোলিং করার আগে প্রোটিন শেক, অল্প মাছ বা পটেটো স্ম্যাশ নিয়ে নিই। কিন্তু আপনি যদি এ সময় ভাত খান তাহলে আপনার নিজেকে ভারী লাগবে, আপনি মাঠে খেলতে পারবেন না। আপনার ভীষণ অলস লাগবে তখন।
সফরের সময় খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার প্রিয় দেশ কোনটা?
দুবাই আর লন্ডন। লন্ডনে আপনি যা খেতে চাইবেন তাই পাবেন। আমি তাই ওখানে যেতে পছন্দ করি। দুবাইও অনেকটা ওরকম। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজে সফর করাটা কঠিন, কারণ এখানে হালাল খাবার পাওয়া সহজ না।
এমন কোন পাকিস্তানি খাবারের নাম বলুন যেটা অন্য দেশের কোন সতীর্থকে খাওয়াতে চান?
বিরিয়ানি আর মটন-কাচ্চি। করাচি কিংসে খেলার সময় চ্যাডউইক ওয়ালটনকে এটা খাইয়েছিলাম , ও অনেক পছন্দ করেছিল।
এমন কোন খাবার আছে যেটা আপনি আসলেই খেতে চান কিন্তু ফিটনেসের জন্যে বাদ দিয়েছেন?
আমি মাটন কাচ্চি ভীষণ পছন্দ করি। কিন্তু এটা আমাকে স্যাক্রিফাইস করতেই হবে। আমার আইসক্রিমও ভীষণ পছন্দ, চকোলেট ফ্লেভারের। এটা নিয়মিত খেতে পারি আমি কিন্তু আমি খাইনা।
পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে কোন ধরণের ফাস্ট ফুড খাওয়া যাবে?
আমি ম্যাকডোনাল্ডে সপ্তাহে একবার খাই। কারণ আমার মেয়ে ম্যাকডোনাল্ডে খেতে পছন্দ করে, ওকে আমার নিয়ে যেতে হয় তো সাথে খেতেও হয়। আমি ফ্লায়েট-ও-ফিশ আইটেমটা খাই।
সফরের সময় কোন বিশেষ খাবারে কি আটকে থাকেন? বা কিটব্যাগে কোন স্লাকস জাতীয় খাবার নেন?
প্রোটিন শেক আর ইলেকট্রোলাইটস। কিটব্যাগে এটা আমি সাথে রাখি।
ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর আপনি যদি নিজেকে কোন খাবার উপহার দিতে চান সেটা কি হবে?
বিরিয়ানি, তবে সেটা আমার স্ত্রীকে রাঁধতে হবে। ও অনেক ভাল রাঁধুনি আর বিরিয়ানিটা অনেক ভাল রাঁধে ।
ওয়ার্কআউটের আগে/ পরে আপনার প্রিয় খাবার কি?
ক্লাব স্যান্ডউইচ। তবে সেটা সাদা পাউরুটি দিয়ে, বাদামীটা না।