মানুষ নাকি তাঁর স্বপ্নের সমান বড়, স্বপ্ন দেখতে না জানলে কখনোই আকাঙ্খার জিনিস নিজের করে পাওয়া হয় না। আর স্বপ্ন দেখাই যথেষ্ট নয়, নিজের ওপর বিশ্বাস থাকাটাও জরুরি – এই সবকিছুই যে সাফল্যের প্রধানতম নিয়ামক তা আরো একবার প্রমাণ করেছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
বিশ্বকাপ জেতার মাধ্যমে তো বটেই, সম্প্রতি অ্যাস্টন ভিলার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নেয়ার মধ্য দিয়েও তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন কিছু অর্জন করতে হলে সেটা প্রকাশ্যে বলার সাহস থাকতে হয়। এইতো গত বছর যখন অ্যাস্টন ভিলা স্রেফ মাঝারি মানের একটা দল ছিল তখন তাঁর মুখেই প্রথম শোনা গিয়েছিল ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে স্থান করে নেয়ার ঘোষণা।
খামখেয়ালি ভেবেছিল অনেকে, অনেকে মনে করেছিল কেবলই স্বান্তনা। কিন্তু এক বছরের ব্যবধানে উনাই এমেরির কোচিং আর স্কোয়াডের সব ফুটবলারের অসামান্য পারফরম্যান্সের সুবাদে বদলে গিয়েছে দৃশ্যপট। মৌসুমের শেষপ্রান্তে এসে তাঁরা এখন টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
শেষ সপ্তাহে যাই ঘটুক, এই অবস্থানে থেকেই লিগ শেষ করবে দলটি। অর্থাৎ ২০২৪/২৫ মৌসুমে তাঁদের দেখা যাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে; ৪২ বছর পর এই টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছে তাঁরা। একটা সময় রেলিগেশন এড়ানোর মিশন নিয়ে মাঠে থামা দ্য ভিলান্স এখন ইউরোপ সেরাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে ভাবতেই নিশ্চয়ই সমর্থকদের রোমাঞ্চ হিমালয়সম হয়ে উঠেছে।
আর্জেন্টিনাকে ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতানোর পরেই মূলত লাইমলাইটে উঠে এসেছিলেন এমি মার্টিনেজ। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, বিশ্বকাপে গোল্ডেন গ্লাভস জিতে তবেই থেমেছেন তিনি। আত্মবিশ্বাস আর দাম্ভিকতাই মূলত তাঁকে বাকিদের চেয়ে আলাদা করেছে। বিশেষ করে টাইব্রেকার বা পেনাল্টির সময় তাঁর মানসিকতা স্রেফ অনন্য।
কোন সংশয় ছাড়াই আলবিসেলেস্তারা এই তারকাকে দেবতা মানেন। অ্যাস্টন ভিলার জার্সি গায়ে যেভাবে পারফরম করে যাচ্ছেন তিনি, যেভাবে আপন করে নিয়েছেন ক্লাবে; শীঘ্রই ইংলিশ ক্লাবটার ভক্তরাও তাঁকে সম্মানের সেই জায়গাটুকু দিবে নিশ্চয়ই – একজন ফুটবলারের জন্য বোধহয় এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার নেই।