ঘোলাটে পরিস্থিতি কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। বাতাসে গুঞ্জন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এনওসি বা অনাপত্তিপত্র দিয়েছে তিন ক্রিকেটারকেই। তাঁরা হলেন সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও মুস্তাফিজুর রহমান। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) শুরু থেকেই থাকছেন তাঁরা। এর অর্থ হল, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান সিরিজের মাঝপথেই দেশ ছাড়বেন তাঁরা। যদিও, এই ব্যাপারে এখনও আসেনি কোনো চূড়ান্ত ঘোষণা।
এর মধ্যে মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে তেমন বড় কোনো জটিলতা নেই। কারণ, তিনি টেস্ট দলের অংশ নন। পুরো আইপিএল খেলতে তাঁকে সর্বোচ্চ একটা টি-টোয়েন্টি মিস করতে হবে বাংলাদেশের। আর সিরিজ জিতে যাওয়া বাংলাদেশ হয়ত এমনিতেই শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুস্তাফিজকে বাইরে রাখত।
কিন্তু, সংকট হল বাকি দু’জন, মানে সাকিব আর লিটনকে নিয়ে। দু’জনই সুযোগ পেয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে। তাঁদের ছাড়া একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ কাটিয়ে দেওয়া গেলেও টেস্ট ম্যাচে একটা বিপদ আসন্ন। কারণ, সাকিব টেস্ট দলের অধিনায়ক। আর লিটন সহ–অধিনায়ক। এই দু’জন না থাকলে আইরিশদের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেবে কে? সিনিয়র ক্রিকেটার ও ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল আগেই বোর্ডকে জানিয়ে রেখেছেন টেস্টে তিনি দলকে নেতৃত্ব দিতে চান না।
ফলে, টেস্ট শুরুর যখন সপ্তাহখানেক সময়ও বাকি নেই – তখন পাঁচ দিনের এই ফরম্যাটে কে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেবেন – সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর জানা যায়নি। অবশ্য, সাকিব-লিটনরা কবে দেশ ছাড়বেন – সেটাও এখনও জানা যায়নি। জানা গেছে, বুধবার রাতের বিমানেই তাঁরা ঢাকায় ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অনুশীলনও ছিল না। ফলে, পুরো বিষয়টাতেই এখনও বিরাট এক ধোঁয়াশা বিরাজ করছে।
আইপিএল শুরু হবে শুক্রবার, ৩১ মার্চ। একই দিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ দল। চার এপ্রিল শুরু হবে দু’দলের মধ্যকার একমাত্র টেস্ট ম্যাচ। এর জন্য বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আগেই সাফ জানিয়ে রেখেছিলেন যে, দেশের খেলা থাকলে কাউকে ছাড়া যাবে না। তবে, কোচ চান্দিকা হাতুুরুসিংহে নাকি আইপিএলের প্রসঙ্গে অনেকটাই নমনীয়। তিনি প্রকাশ্য সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আইপিএলের ম্যাচ খেলাটা খুবই ইতিবাচক।
এবারের আসরের দ্বিতীয় দিন, আসছে এক এপ্রিল নিজেদের প্রথম ম্যাচে কলকাতা মুখোমুখি হবে পাঞ্জাব কিংসের। যদিও, সাকিব বা লিটন একাদশে জায়গা পাবেন কি না – সেটা নিশ্চিত নয়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এখন কম-বেশি সব দলই আইপিএলের ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের এনওসির ব্যাপারে ছাড় দিয়ে থাকে। সেই ছাড়টা সাকিবও পেয়ে এসেছেন আগে। তবে, এবার লিটনও সাথে যোগ হওয়ায় পরিস্থিতি অনেক বেশিই জটিল হয়ে যায়।
হতে পারে এটাই সাকিবের শেষ আইপিএল। সেই ব্যাকগ্রাউন্ডে ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন সাকিব। আর সাকিবকে ছাড়লে, লিটনকে রেখে দেওয়ার মত ‘পক্ষপাতিত্ব’ করতে হয়ত চাইবে না বিসিবি। তবে, শেষ অবধি কি হতে যাচ্ছে – তা হয়তো দুই একদিনের মধ্যেই জানা যাবে।