সাকিব আল হাসানের প্রতি এখন আর কোন বিদ্বেষ নেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের। একটা টাইমড আউট, গোটা দুনিয়ার বুকে আলোড়ন তুলেছিল। পক্ষ-বিপক্ষের নানান যুক্তি-পালটা যুক্তি। কতকিছুই তো ঘটে গেছে বিশ্বকাপের মঞ্চে সাকিবের নেতৃত্বে ম্যাথুস টাইমড আউট হওয়ার পর।
বিদায় বেলায় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। ক্রিকেটের বনেদী ফরম্যটে যে ভেন্যুতে অভিষেক তার, সেই গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই ম্যাথুস খেলতে চলেছে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। ১০০তম টেস্ট ম্যাচটাও তিনি খেলেছিলেন সমুদ্রের কোলে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দন ক্রিকেট ময়দানে।
পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা ডাচ দূর্গের মত তিনি শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের দূর্গ হতে চেয়েছে প্রতিবার। বাইশ গজে ব্যাটে-বলে নিঙড়ে দিয়েছেন, জিতিয়েছেন বহু ম্যাচ। বিশ্বকাপের মঞ্চে শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ লড়াইয়েও তিনি হতে পারতেন এক্স ফ্যাক্টর। পরিস্থিতি অনুযায়ী তিনি হতে পারতেন জয়ের নায়ক।
বাংলাদেশ জানত সে কথা, সাকিব অবগত ছিলেন ম্যাথুসের সামর্থ্যের। তাইতো ক্রিকেটের আইন মেনে তিনি আবেদন করেছিলেন টাইমড আউটের। ম্যাথুস বেশ অবিশ্বাস নিয়ে বহুবার সাকিবকে বোঝাতে চেয়েছেন তার সমস্যা। কিন্তু সবুজের বুকে দাঁড়িয়ে সাকিব সেদিন বন্ধুত্বের তোয়াক্কাও করেননি। সবার আগে তো দেশ নাকি!
বেশ ক্ষোভ নিয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ছেড়েছিলেন মাঠ। তার হৃদয় জুড়ে যেন বয়ে যাচ্ছিল উথাল-পাতাল ঢেউ। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে, সকল ঢেউই তো সমুদ্রের বিশালতার মাঝে মিলিয়ে যায়। ম্যাথুসের ক্ষেত্রেও ঘটেছে তাই। তাকে সামনে পেলেই যে সেই পুরনো ঘটনার উপর থেকে ধূলো সরবে, সেটা তো সবারই জানা।
তবে ম্যাথুস শীতল কণ্ঠে বললেন, ‘আমি কোন কিছু ধরে রাখতে চাই না। সেটা খুব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ছিল। কিন্তু আমি আশা করব এমনটি যেন আর না ঘটে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন আক্রোশ পুষে রাখিনি, তারা (বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা) আমার ভাল বন্ধু। আমি তাদেরকে শুভকামনা জানাই।’
এভাবেই অতীতকে পেছনে ফেলে সামনের পানে এগিয়ে যাওয়ার আজ ১৭টি বছর। পর্দা উঠছে এক বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস একজন ভদ্রলোকের বেশে পেছনের সকল অনাকাঙ্খিত ঘটনা পেছনে ফেলেই এগিয়ে যাচ্ছেন শেষের অধ্যায়ের দিকে।