আগের ম্যাচেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল। ইউরোপের কাছে লাতিনের পরাজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে দেয় নি আর্জেন্টিনা,দেননি লিওনেল মেসি। ২-০ গোলের লিড নেয়া আর্জেন্টিনা শেষমেশ জয় পেয়েছে টাইব্রেকারে গিয়ে। মেসির অমরত্বের পথে যাত্রাও টিকে রইলো। শেষ চারে পৌছালো আর্জেন্টিনা।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই খেলার নিয়ন্ত্রণ নেবার চেষ্টা করে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ১৪ মিনিটে আকুনার ক্রস থেকে পাওয়া বলে ম্যাকএলিস্টার বল মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। ২৩ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পেয়েছিলো আর্জেন্টিনা। তবে ডিবক্সের বাইরে থেকে নেয়া মেসির শট লক্ষভ্রষ্ট হলে আবারো সুযোগ হাতছাড়া হয়। খেলার ২৫ মিনিটে সুযোগ তৈরি করেছিলো ডাচরা। কিন্তু বারুইনের শট চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে।
ম্যাচের ৩৫ মিনিটে জাদুকরের জাদুর ছোঁয়া। মাঝমাঠ থেকে বল পায়ে এগিয়ে ডিবক্সের বাইরে থেকে মেসির ডিফেন্স চেড়া পাস। ডাচ ডিফেন্ডারের তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না। মেসির পাস থেকে বল পাওয়া মলিনা ও কোনো ভুল করেননি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
৪১ মিনিটে মেসি আবারো গোলের সুযোগ তৈরি করলেও ব্যবধান দ্বিগুণ করা হয়নি আর্জেন্টিনার। দ্বিতীয়ার্ধের শুধু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলো ডাচরা। তবে এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার ডিফেন্স ছিলো দুর্দান্ত। সম্ভবত এবারের আসরেই সেরা ডিফেন্সিভ পারফরম্যান্স আর্জেন্টিনার। রোমেরো,ওতামেন্দিদের দুর্দান্ত ডিফেন্স প্রাচীর ভাঙতে পারেনি ডাচরা। দুই উইং দিয়ে বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও আর্জেন্টিনার ডিবক্সে প্রতিহত হয় সবগুলো আক্রমণই। উল্টো ম্যাচের ৬২ মিনিটে ডিবক্সের সামান্য বাইরে থেকে নেওয়া মেসির ফ্রি কিক গোলপোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।
ম্যাচের ৭৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করা মেসির গোলে অবশেষে লিড দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। তবে ম্যাচের ৮৩ মিনিটে ম্যাচের ফেরার লাইফলাইন পেয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। ওয়েগহর্স্ট এর দুর্দান্ত হেড থেকে করা গোলে স্কোরলাইন ২-১ হয়। ৮৫ মিনিটেই ম্যাচে সমতা ফেরাতে পারত ডাচরা। তবে ডিবক্সের মধ্যে থেকে নেয়া জোড়ালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকলেও আর গোলের দেখা পাচ্ছিলো না ডাচরা।
ম্যাচের সব রোমাঞ্চ যেন তোলা ছিলো অতিরিক্ত সময়েরও শেষ মুহুর্তের জন্য। ম্যাচের ১০০ তম মিনিটে ডিবক্সের সামন্য বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় ডাচরা। টিউন কুপমেইনার্স দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলে নেদারল্যান্ডসকে খাদের কিনারা থেকে তোলেন ওয়েগহর্স্ট। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ২-২ সমতায়।
অতিরিক্ত সময়ের খেলার প্রথমার্ধে কোনোদলই তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনা বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করে। ১২০ তম মিনিটে আর্জেন্টিনার একটি শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারের প্রথম দুটি শটই মিস করে নেদারল্যান্ডস। শেষ পর্যন্ত ৪-৩ গোলে টাইব্রেকার জিতে শেষ চারে আর্জেন্টিনা। প্রথম দুটি শট অসাধারণ সেভ করে আর্জেন্টিনার জয়ের নায়ক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। শেষ চারে আলবিসেলেস্তেদের প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া।