প্রতিভাবান ফুল-ব্যাক জুলিও সোলার যেন ইউরোপে যাওয়ার জন্যই প্রস্তুত হয়েছেন। লানুসের হয়ে আর্জেন্টিনার প্রিমেরা ডিভিশনে তার অসাধারণ উত্থান ঘটে। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই তিনি ইউরোপের বড় বড় ক্লাবের নজরে এসেছেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং লিভারপুলের মধ্যে তার জন্য দলে ভেড়ানোর লড়াই হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে ।
ইউনাইটেডের আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় নেওয়ার ঐতিহ্য বেশ সমৃদ্ধ। ভারোন থেকে শুরু করে লিসান্দ্রো মার্টিনেজ পর্যন্ত, রেড ডেভিলরা বারবার আর্জেন্টিনার তারকা খেলোয়াড়দের দলে এনেছে। এবার তাদের নজরে জুলিও সোলার। একজন প্রতিশ্রুতিশীল লেফট-ব্যাক। যিনি ইতোমধ্যেই জাতীয় দলের সিনিয়র পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
সোলারের যাত্রা ইউরোপের উজ্জ্বল আলো থেকে অনেক দূরে শুরু হয়েছিল। ২০০৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্যারাগুয়েতে জন্ম নেওয়া সোলার ছোটবেলায় আর্জেন্টিনায় চলে আসেন। সেখানে তার ফুটবল যাত্রা শুরু হয় তার বাবার তত্ত্বাবধানে। যিনি নিজেও একজন পেশাদার ফুটবলার ছিলেন। ডিয়েগো মারাডোনার মতো তারকা উৎপাদনকারী আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের অ্যাকাডেমিতে গড়ে ওঠেন তিনি। লানুস তার প্রতিভা দেখে ২০১৭ সালে তাকে দলে ভেড়ায়। ধাপে ধাপে উন্নতি করে ১৭ বছর বয়সে সিনিয়র দলে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
তারপর থেকে লানুসের হয়ে সোলার দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন। তার প্রতিরক্ষামূলক দৃঢ়তা, গতি এবং আক্রমণাত্মক মানসিকতা তাকে সবার নজরে এনেছে। এই বছর তিনি কোপা সুদামেরিকানার সেমি-ফাইনালে লানুসকে সাহায্য করেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, প্যারিস অলিম্পিকে আর্জেন্টিনার হয়ে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তিনি নিজের পরিপক্বতার প্রমাণ দিয়েছেন। যদিও দলটি খুব বেশি এগোতে পারেনি।
সোলারের খেলার ধরণ তাকে আলাদা করেছে। একজন ফরোয়ার্ড-মাইন্ডেড লেফট-ব্যাক হিসেবে, তিনি দ্রুত, বুদ্ধিমান এবং ওয়ান ভি ওয়ান মোকাবেলায় আক্রমণাত্মক। বলের উপর তার নিয়ন্ত্রণ এবং আত্মবিশ্বাস তাকে এগিয়ে রাখে। যদিও ফাইনাল থার্ডে তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা উন্নতি প্রয়োজন। লানুসে তিনি রক্ষণ ও আক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে এলিট পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য তার প্রভাব আরও ধারালো হতে হবে।
লিভারপুল এবং ইউনাইটেড উভয়ই সোলারের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। লিভারপুল তাকে অ্যান্ডি রবার্টসনের দীর্ঘমেয়াদী উত্তরসূরি হিসেবে দেখতে পারে। কারণ তাদের খেলার ধরণে অনেক মিল রয়েছে। অন্যদিকে, ইউনাইটেডের লেফট-ব্যাকে শূন্যতা পূরণের জন্য সোলারের মতো খেলোয়াড়ের প্রয়োজন। লুক শ এবং টাইরেল মালাশিয়ার ইনজুরির কারণে ইউনাইটেডের এই মুহূর্তে বিকল্প খুবই সীমিত।
লানুসের সঙ্গে সোলারের চুক্তি ২০২৮ সাল পর্যন্ত রয়েছে। তবে এটি ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলির জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলারের একটি সম্ভাব্য দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তার জন্য। ইউনাইটেড, লিভারপুল বা অন্য যে কোনো ক্লাবেই তিনি যান। এটি নিশ্চিত যে সোলারের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে, তাকে ইউরোপিয়ান মঞ্চের ভবিষ্যৎ তারকাই বলা যায়!