এক ওভারে দুই আঘাত। আর্শদ্বীপ আসা মাত্রই যেন ভাঙনের সুর বইতে শুরু করে আয়ারল্যান্ডের শিবিরে। অন্যদিকে, আর্শদ্বীপ যেন জানান দিতে চাইলেন, তিনি এসেছেন ধ্বংসযজ্ঞের মানসিকতা নিয়ে। এতদিন ধরে তাকে ঘিরে থাকা নীরবতা তিনি এক লহমায় উড়িয়ে দিতে চাইলেন।
একটা গোটা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ কেটে গেল। কেউ আলোচনায় রাখেনি আর্শদ্বীপ সিংকে। অবশ্য ব্যাটারদের জয়জয়কার হওয়া একটা আয়োজনে বোলারদের সকল পারফরমেন্স লেগেছে সাদামাটা। ব্যাটার স্বর্গে দাঁড়িয়েও ১৪ ম্যাচে ১৯টি উইকেট শিকার করেছিলেন বাঁ-হাতি এই বোলার।
তবুও তাকে নিয়ে হয়নি আলোচনা। জাসপ্রিত বুমরাহ ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। জাতীয় দলের সিনিয়র সতীর্থের সাফল্য তাকে খানিকটা অনুপ্রাণিতই করেছিল বোধহয়। তাইতো তিনি বিশ্বকাপের মঞ্চে নিজের সক্ষমতার পরিচয়টা দিতে চাইলেন সবচেয়ে দারুণভাবে।
নতুন বল হাতে নিজের দ্বিতীয় ওভারে জোড়া আঘাত করে বসেন আর্শদ্বীপ। আইরিশদের স্বল্প রানের লজ্জা দেওয়ার রাস্তা খুলে দেন তিনিই। প্রথমে তিনি তুলে নেন পল স্টার্লিংয়ের উইকেট। অসম বাউন্সের যুক্তরাষ্ট্রের উইকেটে পুল করতে চাইলেন স্টার্লিং। তবে প্রত্যাশার খানিকটা বেশি বাউন্সি বলে লাগে ব্যাটের খোঁচা। দূর আকাশে পানে উড়ে যাওয়া বলটা জমা পড়ে উইকেটরক্ষক ঋষাভ পান্তের দস্তানায়।
এরপর সেই ওভারের শেষ বলে উপড়ে ফেলেন অ্যান্ডি বালবির্নির স্ট্যাম্প। খানিকটা নিচু হওয়া বলটা ঠিকঠাক আন্দাজই করতে পারেননি বালবির্নি। এরপর সেখান থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি ভারতকে। আইরিশদের উপর চেপে বসেন মোহাম্মদ সিরাজ ও হার্দিক পান্ডিয়ারা।
তবে শেষ ওভারে যেন একেবারেই ভিন্ন ধাঁচের এক আর্শদ্বীপের দেখা মিলল। বাউন্ডারি হজম করতে করতে রীতিমত নাকাল অবস্থা হয়ে যায় তার। শুরুর সেই দারুণ বোলিং মুহূর্তের মধ্যেই হয়েছে বিলীন। নিজের কোটার ৪ ওভার পূর্ণ করেন আর্শদ্বীপ।
সেই দুই উইকেট শিকারের পর আর উইকেটের দেখা পাননি। লাইন-লেন্থের খানিক গড়মিল হয়েছিল তার। ঠিক সে কারণেই শেষের দিকে বোলিং ফিগার হয়েছে দৃষ্টিকটু। ৮.৫০ ইকোনমি রেটে ৩৪ রান খরচা করেছেন আর্শদ্বীপ। ঠিকঠাক সূচনাই হয়েছে, এখন স্রেফ ধারাবাহিকভাবে নীল জার্সির হয়ে পারফর্ম করে যাওয়ার পালা।