বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ইতিহাসে সেরা ব্যাটারদের একজন মুশফিকুর রহিম, দেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও তাঁর অবস্থান অনেক উঁচুতে। অথচ তাঁকে একটা বিপিএল ট্রফির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ক্যারিয়ারের শেষ লগ্ন পর্যন্ত। তবু শেষমেশ অপেক্ষা ফুরিয়েছে, ফরচুন বরিশালের হয়ে বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়েছেন তিনি।
আরেক পান্ডব মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও বিপিএলের প্রতি আসরেই নিজের সেরাটা দিয়েছেন। কিন্তু কখনোই পারেননি আরাধ্য শিরোপাতে হাত রাখতে, তবে বরিশালের জার্সি গায়ে তাঁর শিরোপা খরা কেটেছে। বুড়ো বয়সে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে তাই বাচ্চা বনে গিয়েছিলেন তিনি; হয়েছিলেন উৎসবে মাতোয়ারা।
২০২৪ বিপিএলে মুশফিক-রিয়াদ শিরোপা জিতবেন সেটা অবশ্য শুরুর দিকে কম মানুষই বিশ্বাস করেছিল। এরই মাঝে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের তিনটিতেই হেরে বসেছিলেন তাঁরা, ফলে প্রায় সবাই ধরে নিয়েছিল টুর্নামেন্ট থেকে এই দলের বাদ পড়া সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু সব শঙ্কা বাতাসে উড়িয়ে দিয়ে প্রত্যাবর্তনের এক গল্প লিখেছে দলটি; ডার্ক হর্সের মতই সবাইকে বিস্মিত করেছে। এরপর এলিমেনেটর, কোয়ালিফায়ার, ফাইনাল – টানা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জিতে স্বপ্নকে পূর্ণতা দিয়েছে তাঁরা। আর এমন সাফল্যের পিছনে সরাসরি অবদান রেখেছেন দুই ডানহাতি। দু’জনের অভিজ্ঞতা আর ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের অপূর্ব মিশেলেই এসেছে কাঙ্ক্ষিত মাহেন্দ্রক্ষণ।
১৫ ইনিংস ব্যাট করে মুশফিক করেছেন ৩৭৯ রান, তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। অন্যদিকে, মাহমুদউল্লাহ হাঁকিয়েছেন দুইটি হাফ-সেঞ্চুরি, সেই সাথে ১৩ ইনিংসে করেছেন ২৩৭ রান।
‘ইম্প্যাক্টফুল পারফরম্যান্স’ এর বিবেচনায় তাঁরা অবশ্য সমানে সমান। সংখ্যাতত্ত্বের বাইরেও সরব উপস্থিতি ছিল তাঁদের। অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করেছেন তামিম ইকবালকে; ফিল্ডিং সাজানো সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর উপর চাপ কমিয়েছেন মুশি-রিয়াদ। সেজন্যই তো ট্রফি তাঁদের উৎসর্গ করেছেন অধিনায়ক, এই ট্রফি তো তাঁদের প্রাপ্যই বটে।
এর আগেও দুইবার ফাইনাল খেলেছিলেন মি. ডিপেন্ডেবল; দুইবারই হেরে গিয়েছিলেন। মাহমুদউল্লাহরও আছে রানার আপ হওয়ার স্মৃতি। দেশের ক্রিকেটের সেরা সন্তানেরা ঘরোয়া অঙ্গনের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ট্রফি জিতবে না সেটা বোধহয় ক্রিকেট বিধাতা মানতে পারেননি; তাই তো বরিশালের জার্সিতে তাঁদের এক করেছেন, একসাথে জিতিয়েছেন শিরোপা।