অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের ‘অপেক্ষা’

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় আইপিএলের ১৪তম আসর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষনা করা হয়। তারপর বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়াকে(বিসিসিআই) আইপিএলের সাথে যুক্ত বিদেশি ক্রিকেটারদের করোনা বিধি নিষেধ মেনে নিজ নিজ দেশে ফেরাতে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।

ভারতের সাথে সব ফ্লাইট বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের দেশে পাঠাতে। প্রথম সমাধাণ হিসেবে বিসিসিআই তাদের মালদ্বীপে পাঠিয়েছে। সেখানে তারা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৪ দিনের কোয়ারান্টাইন করে তারপর অস্ট্রেলিয়ায় যাবে।

ক্রিকেটার ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ান কোচ, ধারাভাষ্যকার ও ম্যাচ অফিসিয়াল মিলিয়ে ৪০ জন আইপিএলের সাথে যুক্ত ছিলেন। আপিএল স্থগিত হওয়ার পরই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছিলো, ক্রিকেটারসহ সংশ্লিষ্টদের দেশে ফেরাতে সরকারের কাছে তারা বিশেষ আবেদন করবেন না। ভারতে ভয়াবহ মাত্রায় করোনা বেড়ে যাওয়ায় ভারতকে করোনার রেড জোন ঘোষনা করে গত কিছুদিন ধরেই ভারতের সাথে সকল ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। অন্তত ১৫ মে পর্যন্ত সকল ফ্লাইট বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন।

এক যৌথ বিবৃতিতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও দেশটির পেশাদার ক্রিকেটারদের সংগঠন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিএ) বলে, ‘ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ ১৫ মে পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার, ক্রিকেটর অস্ট্রেলিয়া (সিএ) ও এসিএ এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়, আমরা এর কোন ব্যতিক্রম চাইবো না।’

তাই বিসিসিয়াই তাদের বিশেষ উদ্যোগে দেশে ফেরাতে প্রথমে মালদ্বীপ পাঠিয়েছে। সেখানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন করেই তারা অস্ট্রেলিয়ার জন্য রওনা দিবে। এর আগে অবশ্য ভারত থেকে তাদের সবার কোভিড টেস্ট করানো হয়েছে এবং সবারই নেগেটিভ এসেছে।

তাদের সবাইকে প্রথমে বিশেষ বিমান ব্যবস্থায় অস্ট্রেলিয়ায় পাঠাতে চাইলেও ভারতের উপর অস্ট্রেলিয়া সরকারের কড়া নিষেধাজ্ঞায় তা সম্ভব হয়নি। এমনকি এই নির্দেশনা অমান্য করলে ৫ বছরের জেল অথবা মোটা অংকের জরিমানা ভরতে হতে পারতো।

সেই সময় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছিলেন, ‘দেশের মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবে যেই ক্রিকেটারর আইপিএল খেলতে ভারতে গিয়েছে, তাদের এই মুহূর্তে কোন ভাবেই দেশে ফেরানো যাবে না।’

তবে এখন দেশে ফেরানোর ব্যাপারে বিসিসিআই এর সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ানরা দেশে ফেরার আগে মালদ্বীপে থাকবে। ওদের কোন চিন্তাও করতে হবে না। ওদের ওখানে দেখভাল করা হবে। মালদ্বীপে কোয়ারেন্টিন কাটিয়ে অজিরা দেশে ফিরে যাবে। আশা করি এই নিয়ে কোন ইস্যু হবে না।’

মালদ্বীপ ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বিসিসআই। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহি টড গ্রেনবার্গ ক্রিকেটারদের এই পরিস্থিতিতে এরকম অভিজ্ঞতার আলোকে বলেছেন, ‘তারাও মানুষ, কারো ছেলে, কারো স্বামী, কারো বাবা। এমত অবস্থায় অনেক মানসিক অবসাদের মধ্যে ও যেতে হয়, এই অভিজ্ঞতা ভুলবার নয়।’

এছাড়াও ক্রিকেটারদের কোন ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে চুক্তিভুক্ত হওয়ার আগে সার্বিক করোনা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা নিয়ে হোম ওয়ার্ক করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে ঘোলাটে একটা অবস্থাতেই আছেন অজি ক্রিকেটাররা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link