২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে মাথায় রেখেই প্রস্তুতির প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত দলগুলো। তবে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে বোধহয় অস্ট্রেলিয়া। যে ধরনের এপ্রোচে তারা টি-টোয়েন্টি খেলছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ভারতসহ তা যেকোনো দলের জন্যই ভীতিকর। তবে কিভাবে তৈরি হচ্ছে এই ভয়ঙ্কর অস্ট্রেলিয়া?
চলমান অস্ট্রেলিয়া–দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি সিরিজের দিকে তাকালে দেখা যায় অজিদের শক্তির প্রদর্শনী। প্রথম ম্যাচে তারা ১৩টি ছক্কা হাঁকায়, বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার সংখ্যাটা ছিল মাত্র দুই। এই পাওয়ার হিটিংটাই মূলত টি-টোয়েন্টিতে পার্থক্য গড়ে দেয়।
তাই তো ৫.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে দলটির স্কোরবোর্ডে যখন ৭০ রান, অষ্টম ওভারের পর যা দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৭৫। সেই ইনিংসের রানই আবার ২০ ওভার শেষে হয়েছিল ১৭৮। এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দেয় কিভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছে তারা।
২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ভারতের কাছে পরাজিত হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। যার নেপথ্যে ছিল পরিকল্পনার অভাব, ওয়ার্নারের অবসর, স্টিভ স্মিথকে দলে না রাখা এবং ম্যাথু ওয়েডের ধীরগতির ব্যাটিং—এসব ভুলের মাশুল গুনতে হয়েছিল অজিদের।
তবে এবার আর সেই ভুল করতে চায় না তারা। রক্ষণশীল মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং কৌশল বেছে নিয়েছে দলটি। টিম ডেভিড, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ক্যামেরন গ্রীনদের মতো বিগ হিটারদের নিয়ে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে বড় পরিসরে।
অস্ট্রেলিয়ার এই পরিবর্তনে অবশ্য বিগ ব্যাশের ভূমিকা বেশি মাত্রায় রয়েছে। সেখান থেকেই মূলত ব্যাটারদের আক্রমণাত্মক মানসিকতা তৈরি হচ্ছে। ফলাফলস্বরূপ পাওয়ার হিটারদের সংখ্যা বাড়ছে জাতীয় দলের রাডারে।
ভারতের দিকে তাকালে তারাও আক্রমণাত্মক কৌশল অবলম্বন করছে ঠিকই তবে পুরোপুরি পাওয়ার হিটিং নির্ভর ক্রিকেটে মনোনিবেশ করেনি। দলটিতে যেমন ব্যাট হাতে ঝড় তোলার মতো তারকা আছে তেমনই ইনিংস গড়ার কারিগরও আছে। তাই তো অজিদের এই অতি আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সব সময় তো আর আক্রমণ করলে চলে না, বিরূপ পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষার পথটাও খোলা রাখতে হয়।
২০২৬ বিশ্বকাপের আসর বসবে ভারত এবং শ্রীলঙ্কায়। এশিয়ার কন্ডিশনগুলো বেশিরভাগই স্পিন বান্ধব হয়ে থাকে। ব্যাটারদের জন্য রান করাটা তাই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। আর এখানেই মূলত মুখ থুবড়ে পড়তে পারে অস্ট্রেলিয়ার পরিকল্পনা। বাউন্সি উইকেটে অভ্যস্ত অজিরা, উপমহাদেশে এসে নিজেদের কৌশল কতটা বাস্তবায়ন করতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়।