বাবর কিন্তু ঘুমাবেন না!

একদম নিশ্চিত হাতের  মুঠোয় থাকা একটা ম্যাচ। অন্তত শেষ ৮ বল পর্যন্ত সমীকরণে পাকিস্তানের দিকেই ম্যাচটা ঝুঁকে যাচ্ছিল। কিন্তু এরপরেই ছন্দপতন। মেলবোর্নের মহারণে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সামনে থেকে মুখের গ্রাস ছিনিয়ে নেয় ভারত। বিরাট কোহলির বিধ্বংসী ইনিংসে তীরে এসে তরী ডোবে পাকিস্তানের। 

এমন ম্যাচের পর সঙ্গত কারণেই পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের হতাশায় মুষড়ে পড়া স্বাভাবিক। ম্যাচ শেষে তাদের চোখে মুখের অভিব্যক্তিই সেটি বুঝিয়ে দিচ্ছিল। তবে অধিনায়কদের তো ‘বিগ হার্টেড’ হতে হয়। বাবর আজমও সেই পরিস্থিতি ভালভাবেই সামলেছেন। ম্যাচের পর ড্রেসিংরুমে এসে সবাইকে চাঙ্গা করেছেন। আইসিসি তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ড্রেসিং রুমের সেই দৃশ্যও প্রকাশ করেছে।

সেখানে বাবর আজম প্রথমে ক্রিকেটারদের হতাশা কাটিয়ে নব উদ্যমে ফেরানোর জন্য বলেন, ‘দারুণ একটা ম্যাচ ছিল। আমাদের সবার প্রচেষ্টা ভাল ছিল। আমাদের কিছু ভুল হয়েছে। তবে সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। টুর্নামেন্ট কেবল শুরু হয়েছে। এখনও আমাদের বেশ কিছু ম্যাচ আছে। সেটার দিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের এগোতে হবে। আর আমরা কোনো একজনের জন্য ম্যাচ হারিনি। আমরা দল হিসেবে ম্যাচ হেরেছি। নির্দিষ্ট কারোর দিকে আঙুল তোলা ঠিক হবে না। আমরা যেমন দল হিসেবে হেরেছি, দল হিসেবে সামনে জিতবও। শুধু আমাদের নিজেদের ভুল গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।’

ম্যাচের শেষ ওভারে ১৬ রান ডিফেন্ড করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন মোহাম্মদ নওয়াজ। তবে সব ছাপিয়ে অনেকেই মনে করে তাঁর অতিরিক্ত বলের কারণেই ম্যাচ হেরেছে পাকিস্তান। কারণ নওয়াজ সে ওভারে একটি নো আর দুটি ওয়াইড দিয়ে পুরো ৯ বলে ওভার শেষ করেন। তাই পাকিস্তানের ম্যাচ হারের জন্য তাঁর দিকেই আঙ্গুল তোলা হচ্ছে বেশি। 

তবে সেই ভিডিওতে দেখা যায়, বাবর আজম নওয়াজকে আশ্বস্ত করেই বলছেন, ‘নওয়াজ, চিন্তার কোনো কারণ নেই। তুমি আমাদের ম্যাচ উইনার। তুমি অনেক ভাল এফোর্ট দিয়েছ। এটা অনেক ক্লোজ গেম ছিল। আর সেই চাপের মাঝে তোমার প্রচেষ্টা ভাল ছিল। এখন এটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল। সতেজ হয়ে আবার নতুন করে শুরু কর। আমরা দল হিসেবে ভাল খেলেছি আর সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। তাই এগিয়ে যাও। শুভকামনা।’

বাবর আজমের সময়ে ড্রেসিংরুমে এসে খেলোয়াড়দের উদ্দীপ্ত করা অবশ্য এটিই প্রথম নয়। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তিনি ড্রেসিংরুমে এসে সবাই উজ্জীবিত করেছিলেন।

আগামী ২৭ অক্টোবর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিশ্চয় জয়ের দিকেই চোখ থাকবে বাবর আজমের। না হলে এর ব্যত্যয় ঘটলে সেমিতে ওঠা বেশ কষ্ট সাধ্যই হয়ে যাবে পাকিস্তানের জন্য। অবশ্য পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাও নিশ্চিতভাবেই এমন ভরাডুবির শামিল হতে চাইবে না। 

নিশ্চয়ই বাবর আরেকটা বার ভারতকে সামনে পাওয়ার অপেক্ষাতেই থাকবেন। আর তাঁর মানসিকতা যেমন, তাতে একটা পরাজয় প্রতিপক্ষকে ফিরিয়ে না দিলে রাতে ঠিক মত তিনি ঘুমাতে পারবেন না।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link