বাড়িভর্তি মেহমান থাকলে ছেলেপুলেদের পড়ালেখা হয় না!

কলম্বো টেস্টে হল ভরাডুবি। সিংহলিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সামান্যতম লড়াইয়ের আভাসও মিলল না। হারতে হল ইনিংস ব্যবধানে।

বাড়িভর্তি মেহমান, উৎসবের মঞ্চ। পারিবারিক মিলন মেলায় মহা সমারোহে চলছে আড্ডা। এর মধ্যে পড়ার টেবিলে মন বসার কথাও নয়।

বাড়ির ছোট ছেলেটাও তাই গুবলেট পাকাল। না পড়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ডাহা এক ফেল করে বসল। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের রজত জয়ন্তির উদযাপনের আয়োজনে জল ঢেলে দিল বাংলাদেশের টেস্ট দল।

২৫ বছরের টেস্ট ইতিহাতে মাত্র ২৩ টা ম্যাচ বাড়ির অবিভাবকদের এত রমরমা আয়োজনই যেন বাড়াবাড়ি। গল টেস্টে আর যাই হোক, বাংলাদেশ জিতে যেতেও পারত।

কিন্তু, কলম্বো টেস্টে হল ভরাডুবি। সিংহলিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সামান্যতম লড়াইয়ের আভাসও মিলল না। হারতে হল ইনিংস ব্যবধানে।

চতুর্থ দিন সকালটা বাংলাদেশের জন্য স্থায়ী হল মাত্র ২৭ মিনিটের জন্য। বাংলাদেশ অলআউট হল মাত্র ১৩৩ রানে। শ্রীলঙ্কা জিতে গেল ইনিংস ও ৭৮ রানের ব্যবধানে। এসএসসিতে চারটা ম্যাচ খেলে তিনটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হারল সো-কল্ড টাইগাররা।

গলে একেবারেই নীরব থাকা প্রভাত জয়াসুরিয়া জ্বলে উঠলেন কলম্বোতে। নিলেন পাঁচ উইকেট। ম্যাচের শেষ সেশনে যে চারটা উইকেটের পতন হয় এর মধ্যে তিনটাই নিয়েছেন জয়াসুরিয়া।

আসলে, প্রথম দিনের শুরু থেকেই শ্রীলঙ্কান বোলাররা ছন্দে ছিলেন। সহজ ব্যাটিং উইকেটেও বাংলাদেশকে মাত্র ২৪৭ রানে গুটিয়ে ফেলা ছিল তাঁদের দারুণ এক সাফল্য। তবে, সেখানে শ্রীলঙ্কার সাফল্যের চেয়ে বাংলাদেশের ব্যর্থতাই বেশি।

এর জবাবে ব্যাট হাতে যেন ঝড় তোলেন পাথুম নিশাঙ্কা। চোখ ধাঁধানো এক ইনিংসে করেন ১৫৮ রান, দলের ভিত গড়ে দেন। সাথে ছিলেন দীনেশ চান্দিমাল আর কুশল মেন্ডিস — তাঁদের দৃঢ়তায় গড়ে ওঠে এক পাহাড়সম লিড, পুরো ২১১ রান!

বাংলাদেশের ওপর তখন চাপ, মানসিকভাবেই যেন ভেঙে পড়েছিল সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে তা বোঝা গেল স্পষ্টভাবে। শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা যেন নিশ্বাস বন্ধ করে দিয়েছিল প্রতিপক্ষের — প্রতিটি ওভারেই ছিল শ্বাসরুদ্ধকর চাপ।

চতুর্থ দিন সকালে সেই চাপটা বাংলাদেশ দল নিতে পারল মাত্র ৩৩ বল! হ্যাঁ, বাড়িভর্তি এত আয়োজন থাকলে সত্যিই ছেলে-পুলেদের পড়ালেখা হয় না।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link