ব্যাটিং ব্যর্থতায় ডুবল বাংলাদেশ, আরেকবার

ব্যাটিং ব্যর্থতায় আবারও আরেকটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালের দোরগোড়া থেকেই বিদায় নিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে হারল পাঁচ উইকেটে। ব্যাটিংয়ে আরও ২০-৩০ রান থাকলে ম্যাচটা ভিন্ন রকম হতে পারত। সেমিফাইনালে টিকেট পেল পাকিস্তান।

জিতলেই সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত। পাকিস্তানের বিপক্ষে এরকম সমীকরণ সামনে রেখেই ভার্চুয়াল কোয়ার্টার ফাইনালে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরকম প্রেসার ওয়ালা ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পারে নি তাদের নার্ভ ধরে রাখতে। সেই সাথে পারেনি বাংলাদেশও। ব্যাটারদের পরে ব্যর্থ ছিল বোলিং এবং ফিল্ডিং লাইন আপও। ছেড়েছে কিছু সহজ ক্যাচ এবং রান আউটের সুযোগ।তবে সব ছাপিয়ে এই ম্যাচে আলোচনায় রইবে আম্পায়ারিং।

অ্যাডিলেড ওভালে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অ্যাডিলেডে এ পর্যন্ত আগের ১১ টি-টোয়েন্টিতে টস জেতা কোন অধিনায়কই ম্যাচ জিততে পারে নি।

শুরুতেই ইন ফর্ম ওপেনার লিটন দাস শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরত গেলে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এরপর  তিনে নামা সৌম্য এবং ওপেনার শান্ত  দেখে শুনে খেলে ৫২ রানের জুটি গড়ে তুলে দলকে বড় সংগ্রহের ভীত এনে দেন। কিন্তু দলের একাদশতম ওভারে ঘটে এই বিশ্বকাপের বাজে আম্পায়ারিং এর অন্যতম কালো ঘটনা।

শাদাব খানের বলে প্রথমে সৌম্য সরকার আউট হওয়ার পরে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু শাদাবের বল সাকিবের পায়ে লাগলে লেগ বিফোরের আবেদন করে পাকিস্তান। আবেদনের অনেক পরে আম্পায়ার আঙুল তুলে আউট দিলে নাখোশ সাকিব সাথে সাথে রিভিউ নেন।

রিভিউ তে পরিষ্কার ভাবে বল ব্যাটে লাগলেও থার্ড আম্পায়ার সেটাকে আউট দিয়ে দেয়,এতেই মূলত বাংলাদেশের মনোবল ভেঙে যায়। সাকিব এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে অনেকক্ষন মাঠে থাকা আম্পায়ারদের সাথে কথা বলে প্যাভিলিয়নে ফেরত আসে।মূলত এর পরই বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে পরে।

শেষ দিকে পাকিস্তানের পেসার দের দাপুটে বোলিংয়ে ২০ ওভার শেষে মাত্র ১২৭ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।দলের পক্ষে নাজমুল হাসান শান্ত সর্বোচ্চ ৫৪ এবং আফিফ ২৪ রান করেন।পাকিস্তানের শাহীন শাহ আফ্রিদি ২২ রানে ৪ উইকেট লাভ করেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই তাসকিন আহমেদর বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের কাছে ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিন্তু সেই সহজ ক্যাচ ফেলে দেন নুরুল। এরপর বাবর এবং রিজওয়ান দেখে শুনে খেলে ৫৭ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ করেন। মূলত এই পার্টনারশিপই বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। শেষ দিকে পরপর কয়েকটি উইকেটের পতন ঘটলেও মোহাম্মদ হারিসের ১৮ বলে ৩১ এবং শান মাসুদের ১৪ বলে ২৪ রানে পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়। এই জয়ের ফলে পাকিস্তান সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল।

পাকিস্তানের পক্ষে রিজওয়ান ৩২, হারিস ৩১ এবং মাসুদ ২৪ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে নাসুম, সাকিব এবং মুস্তাফিজ একটি করে উইকেট লাভ করেন। বোলিং নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ম্যাচটা যে বাংলাদেশ দল ব্যাটিংয়ের জন্যই হেরেছে – সেটা প্রকাশ্য দিবালোকের মত সত্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link