উইকেটরক্ষকেই নেতৃত্বের আস্থা বাংলাদেশের

বাংলাদেশও এখন সেই একই পথে হাঁটছে। লিটন দাস কিংবা নুরুল হাসান সোহানরা সাফল্য আনতে পারলেই কেবল সেই পথটা পৌছাতে পারে চূড়ান্ত গন্তব্যে।

গ্লাভস হাতে কাউকে খুঁজে বের করতে হবে। অধিনায়কত্ব খোঁজার মিশনে এটাই এখন বাংলাদেশের মূল রেসিপি। লিটন দাস এখন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। টেস্ট দলের দায়িত্বও পেতে পারেন। নিগার সুলতানা জ্যোতি নারী দলের অধিনায়ক।

দুই দলে দুই কিপার। দু’জনই দাঁড়িয়ে থাকেন উইকেটের পেছনে। কিন্তু, আসলে তাঁরা থাকেন সামনে। মানে, সামনে থেকে দলের নেতৃত্ব দেন। উইকেটের পেছনে থেকে পুরো খেলা নিয়ন্ত্রন করেন। অধিনায়কের দায়িত্ব যেখানে সবচাইতে কঠিন, সেখানে ক্রিকেট মাঠে সবচেয়ে ক্লান্তিকর দায়িত্ব পালন করেন উইকেটরক্ষক।

প্রতি বলেই তাঁর মনোযোগ থাকে ব্যাটারের মতোই তীক্ষ্ণ। তার উপর দলকে চাঙ্গা রাখার কাজটাও তাঁর ঘাড়ে। মাঠে সবচেয়ে বেশি চিৎকার করেন যিনি, তিনি সেই উইকেটকিপারই। তাই দিনশেষে মাঠ ছাড়ার সময় সবচেয়ে ক্লান্ত চোখজোড়াই থাকে এই মানুষটার। এই অবস্থায় উইকেটেরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন কি তাঁর জন্য বাড়তি চাপ নয়?

দায়িত্ব মানেই তো চাপ, সেই বাস্তবতা থাকবেই। তবে, নিজের ফিল্ডিং পজিশনের জন্যই একজন উইকেটরক্ষকের গেম অ্যাওয়ানেসের সুযোগ থাকে সবচেয়ে বেশি। ম্যাচটাকে তিনি অন্য যে কারও চেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করতে পারেন। মহেন্দ্র সিং ধোনি অধিনায়কত্বের সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছেন এই উইকেটরক্ষকের পজিশনে। উপমহাদেশে এর আগে রশিদ লতিফ, মইন খানরা পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব করেছেন।

বাংলাদেশেও অধিনায়ক হিসেবে আদর্শ পছন্দ উইকেটরক্ষকরা। মুশফিকুর রহিমের অনেক আগেই খালেদ মাসুদ পাইলট ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় লিটন দাস নুরুল হাসান সোহানরা নেতৃত্বে এসেছেন। আকবর আলী অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা সাফল্য এনেছেন।

মহেন্দ্র সিং ধোনি ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দায়িত্ব নিয়ে ভারতকে এনে দিলেন শিরোপা। কালক্রমে তাঁর অধীনে সকল আইসিসি ইভেন্টের শিরোপা জিতে নেয় ভারত। ধোনির সাফল্যের পর ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে মানসিকতা। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা কুমার সাঙ্গাকারাকে তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক বানায়। যদিও টেস্টে কিপিং না করে শুধু নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।

সাঙ্গাকারা একবার বলেছিলেন, ‘অধিনায়ক হলে দ্রুত মানুষের বয়স বাড়ে।’ ভারত-শ্রীলঙ্কার ফর্মূলা অনুসরণ করে পরে পাকিস্তানও উইকেটরক্ষকের হাত ধরে পায় ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা। অধিনায়ক ছিলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সরফরাজ আহমেদ।

বাংলাদেশও এখন সেই একই পথে হাঁটছে। লিটন দাস কিংবা নুরুল হাসান সোহানরা সাফল্য আনতে পারলেই কেবল সেই পথটা পৌছাতে পারে চূড়ান্ত গন্তব্যে।

Share via
Copy link