টি-টোয়েন্টি নাকি অলরাউন্ডারদের খেলা।
সীমিত ওভারের এই ক্রিকেটে প্রতিটা দলই চায় এমন কিছু খেলোয়াড়দের খেলাতে যারা কিনা বিপদের সময়ে ব্যাট আর বল দুটোতেই অবদান রাখতে পারবে। বাংলাদেশও এই চিন্তার বাইরে নেই।
ফরহাদ রেজা, জিয়াউর রহমান ঘুরে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে মেহেদী হাসান মিরাজ, সাইফউদ্দিনদের খেলিয়ে যাচ্ছে ব্যাটিং-বোলিং দুটোতেই সুবিধা পাওয়ার আশায়। কিন্তু, এই ‘অলরাউন্ডার’ তকমা নেওয়া অলরাউন্ডারদের ব্যাটিং কিংবা বোলিং গড় কিন্তু তাঁদের হয়ে কথা বলছেনা। আজ তাই টি-টোয়েন্টিতে এমন পাঁচজন বাংলাদেশি অলরাউন্ডারদের নিয়ে কথা হবে, যারা ন্যুনতম ১০ ম্যাচে মাঠে নেমেছে আর এতেই যাদের ব্যাটিং গড়ের চাইতে বোলিং গড় ঢের বেশি। সোজা কথায়, অলরাউন্ডার মাপার যে মাপকাঠি ব্যাটিং বোলিং গড়ের পার্থক্য সেখানেই এদের ঠিক ‘অলরাউন্ডার’ তকমা দেওয়া কঠিন!
- মেহেদি হাসান মিরাজ
তালিকার প্রথম নাম মেহেদি হাসান মিরাজ। এখন অবধি বাংলাদেশের হয়ে তিনি টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছেন ১৩ ম্যাচে। এই ১৩ ম্যাচে বাংলাদেশ ক্রিকেটে ব্যাট হাতে মিরাজের অবদান ১০ গড়ে মাত্র ৯৪। আপনি হয়তো ভাবছেন, মিরাজকে খেলানো হয় বোলার হিসেবে। কিন্তু পরিসংখ্যান তা ভাবছেনা। পরিসংখ্যান বলছে এই ১৩ ম্যাচে মিরাজ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ৪ টা। উইকেট প্রতি রান দিয়েছেন আশিরও বেশি (৮২.৫০) ।
মিরাজের ব্যাটিং-বোলিং গড়ের পার্থক্য তাই দাঁড়াচ্ছে -৭২.০৫
- সোহাগ গাজী
সোহাগ গাজীকে একটা সময় বাংলাদেশ খেলিয়েছে নিয়মিত স্পিনার হিসেবেই। এরপর রেকর্ড গড়া ব্যাটিংয়ের পর বাংলাদেশ একসময় ভাবতেও শুরু করেছে যে গাজী হয়তো অলরাউন্ডার হিসেবে অবদান রাখতে পারবে। আপাতদৃষ্টিতে সেটা সত্যি হয়নি।
বাংলাদেশের হয়ে ১০ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমে ব্যাটিং কিংবা বোলিং কোনটাতেই অবদান রাখতে পারেননি সোহাগ গাজী। ১০ ম্যাচে ব্যাট হাতে করেছেন ১৪.২৫ গড়ে ৬৭ রান, বল হাতে ৭৪.২৫ গড়ে নিয়েছেন মাত্র ৪ উইকেট।
সোহাগ গাজীর ব্যাটিং-বোলিং গড়ের পার্থক্য তাই দাঁড়াচ্ছে -৬০.৪৯
- ফরহাদ রেজা
বাংলাদেশ একটা সময় হন্যে হয়ে নিজদের দলে একটা পেস বোলিং অলরাউন্ডার খুঁজে ফিরেছে। আর ঠিক সে সময়ই এই জায়গাতে বারবার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ফরহাদ রেজাকে। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও খেলেছেন তিনি। তবে পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে রেজাকে ঠিক অলরাউন্ডার বলা যায় কিনা সে বিষয়ে ভ্রম হয়।
বাংলাদেশের হয়ে ১৩ ম্যাচে তিনি করেছেন ৭২ রান, গড় ৮! বোলিংয়ে অবশ্য আগের দুজনের চাইতে রেজার অবস্থা একটু ভাল , অবশ্য ৪৩.৫০ গড়ে ৬ উইকেট নেওয়াকে যদি ভাল বলতে চান তবেই আরকি!
ফরহাদ রেজার ব্যাটিং-বোলিং গড়ের পার্থক্য তাই দাঁড়াচ্ছে -৩৫.৪৯!
- জিয়াউর রহমান
জিয়াউর রহমানের দলে থাকার কারণও ছিল ঐ ‘পেস বোলিং অলরাউন্ডার’ স্বত্ত্বা। ২০১২-২০১৪ এই সময়ে বাংলাদেশের হয়ে তিনি খেলেছেন মোট ১৪টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, ১৩ গড়ে করেছেন ১১৭ রান। তবে ব্যাটিং এর রান একশো পার করলেও জিয়াউর রহমানের বোলিংয়ে রীতিমত তথৈবচ অবস্থা- ৪২.৩৩ গড়ে নিয়েছেন মাত্র ৩ উইকেট!
জিয়াউর রহমানের ব্যাটিং বোলিং গড়ের পার্থক্য তাই দাঁড়াচ্ছে -২৯.৩৩
- সৌম্য সরকার
সৌম্য সরকার এদের মধ্যে ম্যাচ খেলেছেন সবচাইতে বেশি। মোট ৫১ ম্যাচে মাঠে নেমে তিনি রানও করেছেন ৮৯০ এর মত। তবে আট শতাধিক রান করলেও সৌম্যের ব্যাটিং গড়ের কোন উন্নতি হয়নি, সেটা ১৮.৫৪ এর ঘরেই রয়ে গেছে। সৌম্য অবশ্য ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংও করেন, দলে তিনি এসেছিলেনই ‘পেস বোলিং অলরাউন্ডার’ হয়ে। তবে বোলিংয়ে তিনি ৪৫.১৬ গড়ে নিয়েছেন ৬ উইকেট।
সৌম্য সরকারের ব্যাটিং-বোলিং গড়ের পার্থক্য তাই দাঁড়াচ্ছে -২৬.৬২