এশিয়ার ক্রিকেট আবহাওয়া গরম করেছে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথ। মর্যাদা অটুট রাখতে এক বিন্দু ছাড় দিতে রাজি নয় দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড। বিসিসিআইয়ের চাওয়া ছিল পাকিস্তানের বাইরে এশিয়া কাপ। অপরদিকে পিসিবি এশিয়া কাপ আয়োজন করতে না পারলে বিশ্বকাপ বয়কট করতেও ছিল প্রস্তুত।
দ্বৈরথ মেটাতে পাকিস্তান সফর করেছিল আইসিসি প্রধান। পাকিস্তানি দৈনিক দ্য ডনকে এক ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আইসিসি প্রধানের পাকিস্তান সফরের কারণে পাকিস্তান বিশ্বকাপে যেতে রাজি হয়েছে৷ একই সাথে হাইব্রিড মডেল মানতে ভারতকে রাজি করিয়েছে আইসিসি৷
এশিয়া কাপের জন্য পাকিস্তান সফর করতে কোনভাবে রাজি ছিল না ভারত। ক্রিকেটের এই মোড়ল দেশটির কারনে ‘হাইব্রিড’ মডেল সাজিয়েছিল পাকিস্তান। ভারতের ম্যাচগুলো দিতে চেয়েছিল নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। তবে ভারতের চাওয়া ছিল পুরো এশিয়া কাপ পাকিস্তানের বাইরে।
এশিয়া কাপ নিয়ে ভারত সাজিয়েছিল ভিন্ন পরিকল্পনা। প্রয়োজনে বাকিদেশগুলোকে নিয়ে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে চেয়েছিল দলটি। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে নতুন ছক সাজায় পাকিস্তান। অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্বকাপ বয়কটের ঘোষণা দেয় পিসিবি।
সমর্থকদের চাই বিশ্বকাপে দুই দলের ম্যাচ। পাকিস্তানের সাথে আলোচনায় বসেছিলেন আইসিসি প্রধান। এসময় পিসিবি মত বদলিয়ে ভেন্যু নিয়ে দিয়েছিল শর্ত। সেই শর্ত মেনে নিয়েই সময়সূচী তেরি করে বিসিসিআই।
পাকিস্তান সরকার চাইলে বিশ্বকাপ খেলতে আগ্রহী পিসিবি। বিশ্বকাপ মিমাংসা অনেকটা হলেও এশিয়া কাপ আয়োজন করতেই চায় বোর্ড। নিজেদের ‘হাইব্রিড’ নিয়মে দেশ পরিবর্তন করে দিয়েছে নতুন প্রস্তাব। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলঙ্কায়।
পাকিস্তানের দেওয়া এই প্রস্তাব এসিসি গ্রহণ করবে জানিয়েছে ক্রিকেট ভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো। ভারত ফাইনালে উঠলে ম্যাচটি হবে শ্রীলঙ্কাতেই।
এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের মাঝে সামনে এসেছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ইস্যু। গুঞ্জন উঠেছিল ২০২৫ সালে এই টূর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারবে না পাকিস্তান। যদিও এই গুঞ্জন একদিন পরেই বন্ধ হয়েছিল। গুঞ্জন সত্যি হলে সমস্যা বাড়তো কয়েকগুনে।
এশিয়ার দুই পরাশক্তির মধ্যকার চলমান দ্বৈরথ সুন্দর সমাপ্তির দিকে। দায়িত্বের জায়গা থেকে দারুণ কাজ করেছেন আইসিসি প্রধান। কর্মকর্তাদের নিয়ে পাকিস্তান সফরের পর দৃশ্যপট বদলাতে শুরু করে।
কর্মকর্তাদের সাথে বিশ্বকাপ খেলতে পাকিস্তান শর্ত জুড়ে দিয়েছিল। ভারতও সেই শর্ত মেনে নিয়েছে আয়োজনের স্বার্থে। দুই দলের শীতল সম্পর্কের শুরু এখান থেকেই।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানে টানটান উত্তেজনা। কথার লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকেন দুই দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা। তবে এবার স্নায়ু যুদ্ধে নেমেছিল দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড। শেষ পর্যন্ত এই পরিস্থিতি দূর হলে প্রশান্তি সমর্থকদের জন্য।