মুশফিক-মুস্তাফিজকে বাদ দেওয়ার সাহস আছে?

এখন দেখার বিষয়, নামের ভারে ঝুকে যায় বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট, নাকি সাহস দেখিয়ে মুস্তাফিজ ও মুশফিককে বসিয়ে রাখে। 

বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের বুকের পাটা ঠিক কতটুকু, তা আন্দাজ করা যাবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টাইগারদের দ্বিতীয় ম্যাচে দু’টো পরিবর্তন ভীষণ প্রয়োজন। এক মুশফিকুর রহিম, দুই মুস্তাফিজুর রহমান। আর এই পরিবর্তন নেওয়ার সাহস বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট দেখাবে নাকি, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।

দীর্ঘদিন ধরেই অফফর্মের গ্যারাকলে আটকে আছেন মুশফিকুর রহিম। ২০২৪ সালের মার্চে ওয়ানডে ম্যাচে শেষ অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। এরপরের চার ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন তিনি। তাও আবার সেই মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছেন মুশফিক।

এতে অবশ্য দুশ্চিন্তার খুব বড় কারণ হতো না, যদি বাকি ফরম্যাটে তিনি রানের ধারাতে থাকতেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯১ রান করেছিলেন তিনি রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে। এরপর টেস্টে খেলেছেন দশ ইনিংস। সেই দশ ইনিংসে নেই কোন ফিফটি। সেই দশ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন একটি ইনিংসে ভারতের বিপক্ষে।

এখানেই শেষ নয়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তিনি খেলেছেন সর্বশেষ আসরেও। চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের জার্সিতেও রানখরায় ভুগেছেন মুশফিকুর রহিম। সেখানে ১৪ ম্যাচে মাত্র ২৬ গড়ে ১৮৪ রান করেছেন। যেখানে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেছেন ৪২ রানের।

এই যখন অবস্থা, তখন দলের প্রয়োজনে তাকে বাদ রেখে একাদশ করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে তার পরিবর্তে একাদশে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে খেলানো উচিত। উইকেটরক্ষন নিয়েও বিশেষ বেগ পোহাতে হবে না। জাকের আলী অনিক রয়েছেন স্কোয়াডে। ভারতের বিপক্ষে তার খেলা দায়িত্বশীল ইনিংসের পর তাকে একাদশ থেকে বাদ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ফিট হয়ে উঠবেন কি-না ম্যাচের আগে। তাছাড়া আরও একটা শঙ্কা জাগতে পারে অনেকের মনে, জাকেরের উইকেট কিপিং তো সেই অর্থে যুতসই না। আগে তো ব্যাটিং-বোলিংটা ঠিকঠাক করা প্রয়োজন, পরে না উইকেটকিপিং।

ঠিকঠাক বোলিং করার জন্যে মুস্তাফিজকেও বিশ্রাম দেওয়া প্রয়োজন। রাওয়ালপিন্ডির উইকেট স্বভাবতই ব্যাটিং সহায়ক। এমন উইকেটে মুস্তাফিজ যে নির্বিষ সে উদাহরণ তো রয়েছে অহরহ। দুবাইরের স্লো উইকেটেও ভারতের বিপক্ষে তিনি ছিলেন নির্জীব। তার পরিবর্তে একাদশে নাহিদ রানাকে নেওয়ার সাহসও দেখাতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে।

তানজিম হাসান সাকিব অবশ্য একটু হলেও বাড়তি ফায়দা তুলে নিতে পারবেন মুস্তাফিজের চাইতে। ব্যাটারদের উইকেট থেকে একটু হলেও সিম মুভমেন্ট আদায় করতে সক্ষম তানজিম সাকিব। এছাড়াও শেষের দিকে টুকটাক রান তুলতেও সক্ষম তিনি। সেজন্য হলেও তাকে বাদ দেওয়া হতে পারে বোকামি। এ ছাড়া আর তেমন পরিবর্তন প্রয়োজন নেই, বা বাংলাদেশের যথাযথ বিকল্পও নেই।

এখন দেখার বিষয়, নামের ভারে ঝুকে যায় বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট, নাকি সাহস দেখিয়ে মুস্তাফিজ ও মুশফিককে বসিয়ে রাখে।

Share via
Copy link