জুয়ার টেবিলে লিটন বাজি

জাতীয় নির্বাচকরা রীতিমত একটা জুয়া খেললেন। লিটনের উপর বাজি ধরলেন ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে।

লিটন দাস যে অধিনায়ক হবেন সেটি প্রায় অবধারিত ছিল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে টি-টোয়েন্টিতে লিটন কি অধিনায়ক হিসেবে যোগ্য? এই প্রশ্ন তোলার পেছনের কারণে ব্যাট হাতে তার পারফরমেন্স। শেষ কবে কোথায় চোখ জুড়ানো পারফরমেন্স লিটনের কাছ থেকে মিলেছিল? এই উত্তর খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

গেল বছরের শেষের দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিলেন বাংলাদেশ। ৩-০ ব্যবধানে ক্যারিবিয়ানদের ধবলধোলাই করেছিল লিটন দাসের দল। সেই সিরিজে লিটন নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে। কিন্তু ব্যাট হাতে ছিলেন একেবারেই নিষ্প্রভ।

তিন ম্যাচে ২৪ বলে ১৭ রান নিতে পেরেছিলেন লিটন। এর মধ্যে এক ম্যাচে ফিরেছেন শূন্য রানে, আরেক ম্যাচে ১০ বলে স্রেফ তিন রান নিতে সক্ষম হন। লিটনের এই ব্যাটিং ধারা পুরো ২০২৪ সাল জুড়েই অব্যাহত ছিল। মাত্র ১০০ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। এই সময়ে ২০ ইনিংসে লিটনের রান ছিল মাত্র ৩০৯। গড় ১৬ এর একটু বেশি।

এই পারফরমেন্সের বিশেষণ হতে পারে, ‘যাচ্ছেতাই’। আর ব্যাট হাতে বহুকাল ধরেই ধুকছেন লিটন। তিন ফরম্যাটেই তার নাজেহাল অবস্থা। যে কারণে তাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড থেকেও বাদ দিতে বাধ্য হয় বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।

এছাড়াও তার ব্যাটিং দুর্দশার জন্যে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশনেও উচ্চ পারিশ্রমিকে দল পাচ্ছিলেন না তিনি। যদিও শেষ অবধি নবাগত গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ পান। এমন দুরবস্থায় থাকা এখন খেলোয়াড়ের হাতে একটা ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত বটে।

জাতীয় নির্বাচকরা রীতিমত একটা জুয়া খেললেন। লিটনের উপর বাজি ধরলেন ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে। এখন লিটন নিজের স্বরুপে ফিরবেন কি-না সেটা তো খোদ লিটনের হাতেও সম্ভবত নেই। রয়েছে তার মস্তিষ্কে।

নিজের সামর্থ্য়ের যথাযথ মর্যাদা দিতে পারলে লিটনকে আবার দেখা যেতে পারে ভয়ংকর রুপে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাও ৫০/৫০। কিন্তু তিনি যদি ব্যাট হাতে নিজের চেনা ছন্দে ফিরতে পারেন, তবে সেটা হতে পারে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের একটা টার্নিং পয়েন্ট। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের বেহাল দশার একটা উত্তর হয়ত হতে পারবে লিটনের নেতৃত্বাধীন দল।

সেই বাজিটাই ধরতে চেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও টিম ম্যানেজমেন্ট। সবকিছুই তো যাচ্ছে রসাতলে, তার আগে বাউন্স ব্যাক করার একটা শেষ প্রচেষ্টা। লিটন দায়িত্বের ভারটা আন্দাজ করতে পারলেই হয়। নিজের দায়িত্ব, নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য ও প্রতিপক্ষকে যথাযথ সম্মান দেখালেই হয়ত লিটনের হাত ধরে টি-টোয়েন্টির সুদিনের গল্প লেখা হতে পারে। তবে এসবই প্রত্যাশার ঠুনকো কুড়েঘর।

Share via
Copy link