একটা মুহূর্ত, একটা ম্যাচ – কখনো কখনো কাউকে আজন্ম মনে রাখার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। এই যেমন বেন কাটিং, আইপিএলের খোঁজ খবর রাখা ক্রিকেটপ্রেমীরা তাঁকে মনে রাখবেন ২০১৬ সালের ফাইনালের জন্যই। হয়তো তাঁর ক্যারিয়ারে আরো অনেক সুখকর স্মৃতি আছে, তবে ওই একদিন তিনি হায়দ্রাবাদের গলি থেকে শুরু করে বাংলাদেশ কিংবা ক্রিকেট বিশ্বের আরো অনেকটা জিতে নিয়েছিলেন।
কাটিং কখনোই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারদের তালিকায় ছিলেন না, অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের হয়েও বেশি কিছু করার সুযোগ আসেনি তাঁর সামনে। তবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে তিনি পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার হয়ে উঠেছিলেন; জ্যাক ক্যালিস কিংবা কপিল দেবের আত্মা ভর করেছিল বোধহয় তাঁর ওপর।
১৭ ওভার শেষে মাত্র ১৫০ রান পার করেছিল হায়দ্রাবাদ, সেট ব্যাটার যুবরাজ সিং ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে। এরপরই কাটিং ঝড়ের সঙ্গে পরিচয় হয় সবার, চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম কেঁপে ওঠে তাঁর তান্ডবে।
মাত্র ১৫ বলে ৩৯ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলে দলকে ২০৮ রানে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। এই ইনিংস খেলার পথে তিনটা চারের পাশাপাশি চারটা ছয় হাঁকিয়েছিলেন; এর মধ্যে শেন ওয়াটসনকে হাঁকানো বিশাল ছয়ের দৃশ্য এখনো চোখে ভাসার কথা।
ব্যাটিংয়ে এত কিছু করেও অবশ্য মন ভরেনি অজি তারকার, গেইল-কোহলির দাপটে ব্যাঙ্গালুরু সহজ করে ফেলেছিল জয়ের পথ, শেষ দশ ওভারে প্রয়োজন ছিল একশেরও কম রান। ঠিক তখনি আঘাত হানেন তিনি, গেইলকে আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন সবার প্রথমে। লোকেশ রাহুলও ড্রেসিংরুমের পথ খুঁজে নিয়েছেন তাঁর ডেলিভারিতে।
সবমিলিয়ে চার ওভারে ৩৫ রান দিয়ে দুই উইকেট, রানবন্যার ম্যাচে এমন বোলিংয়ের ইম্প্যাক্ট আসলে সংখ্যা দিয়ে বোঝা যায় না। তবে তাঁকে স্বীকৃতি দিতে ভুল হয়নি, ম্যান অব দ্য ফাইনালের পুরষ্কার উঠেছে তাঁর হাতে।
বিরাট কোহলিকে ট্রফি শূন্য রাখার জন্য তাই চাইলে বেন কাটিংকে কাঠগড়ায় তোলা যায়। আবার মুস্তাফিজুর রহমান সে বছর হায়দ্রাবাদে থাকায় টাইগার সমর্থকদের কাছে নায়ক বনে যান তিনি – ক্রিকেট তো এমনিই, কারো কাছে নায়ক হতে চাইলে খলনায়ক হতে হবে অন্য কারো গল্পে।