আমাদের গেছে যে দিন একেবারেই কি গেছে ? কিছুই কি নেই বাকি? – এই দুনিয়ার তামাম তারকার রশ্মিতে আলোকিত হতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। শীতের দিনে মাঠের ক্রিকেটে উত্তাপ ছড়াত নামকরা সব বিদেশিরা। এখন যেন কৃত্রিম আলোর পথ পাড়ি দিচ্ছে বিপিএল।
ঢাকার ডাগআউটে একটা সময় বসে কাটিয়েছেন লংকান মাহেলা জয়াবর্ধনে। তার সঙ্গী হিসেবে থেকেছেন ক্যারিবিয়ান কাইরন পোলার্ডও। সেই ঢাকা দলে আজ নাম না জানা বিদেশিদের আনাগোনা। যাদের কোথাও হয়না ঠাই বিপিএল তাদের জন্যে আশ্রয়কেন্দ্র।
এই তল্লাটে খেলে গেছেন হার্শেল গিবস, সনাথ জয়াসুরিয়া, আজহার মেহমুদ, আব্দুল রাজ্জাকরা। ক্রিস গেইল, ডেভিড ওয়ার্নার, শেন ওয়াটসন, স্টিভেন স্মিথদের মত ব্যাটাররা চার-ছক্কার পসরা সাজিয়ে বসতেন। এবি ডি ভিলিয়ার্স, কুমার সাঙ্গাকারা, ব্রেন্ডন ম্যাককালামরা দেখিয়েছেন নিজদের ‘ক্লাস’। মুত্তিয়া মুরালিধরণ, সাঈদ আজমল বা অজন্থা মেন্ডিসরা ঘূর্ণি জাদু দেখিয়ে গেছেন।
অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদিও নিজস্ব দ্যুতিতে উজ্জ্বল করেছিলেন বিপিএলকে। এইতো ক’দিন আগেও মঈন আলী, সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলরা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন মিরপুর থেকে চট্টগ্রাম। শন টেইট, জোফরা আর্চার, সোহেল তানভিররা বাইশ গজে তুলেছেন গতির ঝড়।
সেসব আজ কেবলই অতীত। এখন বিপিএলের সবচেয়ে বড় তারকা শাহীন শাহ আফ্রিদি। অথচ, একটা সময় এই আফ্রিদও থেকেছে বিপিএল ফ্রাঞ্চাইজির বেঞ্চে। তাকে কেন দলে নেওয়া হয়েছে তা নিয়েও একটা সময় সমালোচনা হয়েছে। সেই তিনিই সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।
পাহাড় চূড়ায় বসে তারার মেলায় হারিয়ে যাওয়া বিপিএল আজ ক্রমশ পিছলে নেমে যাচ্ছে গহীন অরণ্যে। কেউ যেন আটকানোর নেই। কারও সেই ইচ্ছেটুকুই যেন নেই। খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নিয়ে এখনো হট্টগোল হয়। দু’চার জন ভিনদেশি যদিও বা আসেন খেলতে, তারাও আজকাল সন্দিহান।
বিপিএল তাইতো হাসপাতালের জেনারেল বেড থেকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে আইসিইউ-এর দিকে। আজকাল এখানে মিগুয়েল কামিন্স বা থিসারা পেরেরাদের মত হারিয়ে যাওয়া ক্রিকেটাররা খেলেন। সিনেমায় দেখা বিধাতার অবতার হয়ে কেউ কি এগিয়ে আসবেন? নাকি সেসব কেবলই কল্পকথা? সেই রঙিন দিন, বর্ণালির আলোকচ্ছটা কি আর ফিরবে না এই তল্লাটে?