কেলেঙ্কারির অভিযোগ আর অনিয়ম ঘিরে আছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে (বিপিএল)। শুধু সর্বশেষ আসরেই তিন সদস্যের স্বাধীন তদন্ত কমিটির হাতে সন্দেহজনক ঘটনা ধরা পড়েছে ৩৬টি। জড়িত তিন ফ্র্যাঞ্চাইজি, আছে অভিজ্ঞ ও জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নামও। সপ্তাখানেকের মধ্যে রিপোর্ট জমা হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি)।
এসব ঘটনায় অভিযুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা ১০–১২ জন। এর মধ্যে ৩–৪ জনকে রাখা হয়েছে ‘হাই ফ্ল্যাগড’ তালিকায়। অর্থাৎ তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রায় নিশ্চিত। এঁদের মধ্যে আছেন জাতীয় দলের সাবেক দুই ক্রিকেটার—একজন পেসার ও একজন অফ স্পিনার। সঙ্গে আছেন আরেকজন পেসার, যিনি গত আসরে অস্বাভাবিক ওয়াইড দিয়েছিলেন। তিনি অবশ্য জাতীয় দলে খেলেননি।
বাকি অভিযুক্তরা আছেন ‘মিডিয়াম ফ্ল্যাগড’ ও ‘লো ফ্ল্যাগড’ ক্যাটাগরিতে। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুরোপুরি প্রমাণিত না হলেও সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।
একজন অধিনায়ক ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এমন এক বিদেশি বোলারকে ওভার করান, যিনি আগের দিন দেশে এসে কোনো অনুশীলন ছাড়াই খেলতে নেমেছিলেন। ওই ওভারে হেরে যায় দল, অথচ হাতে অন্য নির্ভরযোগ্য বোলারও ছিলেন। এ কারণে সেই অধিনায়ককে রাখা হয়েছে ‘লো ফ্ল্যাগড’ তালিকায়।
তদন্ত বলছে, অভিযুক্তদের বেশির ভাগের বয়স ৩৫-এর বেশি। জাতীয় দলে ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে তালিকায় আছেন সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে খেলা এক ক্রিকেটার, আছেন এক ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচও। এমনকি বিসিবির এক সাব–কমিটির সদস্যের নামও আছে, যিনি সর্বশেষ বিপিএলে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
সুনির্দিষ্টভাবে তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজির জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি—দুর্বার রাজশাহী, সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ঢাকা ক্যাপিটালস। নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডে নিষিদ্ধ রাখার সুপারিশ করবে তদন্ত কমিটি!
সব মিলিয়ে, বিপিএলের শেষ পাঁচ আসরে পাওয়া গেছে ১৪০টির বেশি সন্দেহজনক ঘটনা। জড়িত থাকতে পারেন ৬০ জনের বেশি স্থানীয় ও বিদেশি ক্রিকেটার, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে একাধিকবার। এমনকি ২০২৩-২৪ মৌসুমে এক ফ্র্যাঞ্চাইজিকে একটি ম্যাচ হারতে জুয়াড়িরা প্রস্তাব দিয়েছিল ৪০০ কোটি টাকা।
প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়েছিল কি না, কমিটি নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে নিয়ম অনুযায়ী বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে কিছুই জানায়নি ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। আর ম্যাচটি তারা হেরে গিয়েছিল। সন্দেহ ঘণিভূত হচ্ছে সেখান থেকেই। তাহলে কি স্পট ফিক্সিংয়ের সাথে ম্যাচ ফিক্সিংও আছে বিপিএলে?