ছক্কা হাঁকালেন শ্রেয়াস আইয়ার। দল চলে গেছে ফাইনালে। গ্যালারিতে প্রীতি জিনতার বাঁধ ভাঙা উল্লাস। কিন্তু সহস্র স্রোতের ঝাপটা খেয়েও স্থির থাকা সমুদ্র তটের মতই ভাবলেশহীন শ্রেয়াস আইয়ার। যেন এ কাজ তার নিত্য দিনের। কঠিন মুহূর্তে দলকে তিনি জেতাতে পারেন তুড়ি মেরে।
পাঞ্জাব কিংসের সফলতার বড্ড অভাব। তাইতো নিলাম থেকে ২৬ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে শ্রেয়াসকে কিনেছিল পাঞ্জাব। গেল আসরের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ককে দলে ভিড়িয়ে তারাও স্বপ্ন বুনেছিল ফাইনাল খেলার, অন্তত শিরোপার জন্যে লড়াই করার। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে শ্রেয়াস দেখালেন হিমশীতল মানসিকতা।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স স্কোরবোর্ডে ২০৩ রান তুলেছে, প্রতিপক্ষ বোলিং আক্রমণে জাসপ্রিত বুমরাহ, ট্রেন্ট বোল্ট, মিচেল স্যান্টনাররা রয়েছেন। রান তাড়ায় শুরুতেই প্রিয়ানশ আরিয়া, প্রভসিমরান সিং ও জশ ইংলিস ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। তখনও জয়ের পথটা বেশ দুর্গম। তবুও বিন্দুমাত্র বিচলিত হলেন না শ্রেয়াস আইয়ার।
তিনি নিজের সক্ষমতা, দক্ষতার উপর রাখলেন পূর্ণ আত্মবিশ্বাস। তার থেকেও বেশি মনোযোগের সাথে ধরে রাখলেন নিজের স্নায়ুচাপ। ব্যাস! জয় নিয়ে বীরের বেশে মাঠ ছেড়েছেন তিনি। একেবারে অভিজ্ঞ বটবৃক্ষের মত তিনি শেকড় ছড়িয়ে স্থির হয়ে গেলেন বাইশ গজে। বল আসে, আর বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। বাহারী সব শট! কিন্তু শ্রেয়াস নির্বিকার ভঙ্গিমায়, মাথায় শুধু হিসেব কষতে থাকেন।
হিসেব কষে ৪১ বলে ৮৭ রানের ইনিংস উপহার দেন শ্রেয়াস। তাতে ভর করে ১১ বছর পর আইপিএলের ফাইনালে উঠল পাঞ্জাব কিংস। কিন্তু শ্রেয়াস খুব একটা উদযাপন করলেন না। তিনি জানেন তার দায়িত্ব এখানেই শেষ নয়।
শিরোপার জন্যে তীর্থের কাকের মত অপেক্ষমান এক জনগোষ্ঠীর তৃষ্ণা নিবারণ যে তাকেই করতে হবে। শ্রেয়াস হয়ত পারবেন কিংবা পারবেন না। তবে এবারের আইপিএল যে পেতে চলেছে নতুন চ্যাম্পিয়ন- সেটা নিশ্চিত। তবে ফাইনাল ছাপিয়ে শ্রেয়াস যেন এক প্রতিবাদ জানালেন।
ভারত জাতীয় দলে অনিশ্চিত হয়ে যাওয়ার তার ক্যারিয়ারকে একটা চ্যালেঞ্জ জানালেন। আর সাথে কলকাঠি নাড়া ব্যক্তিদেরও নিরব এক চিৎকারে জানিয়ে দিলেন- ‘ভুল করছেন, বেশ বড় ভুল করছেন!’