বছর দুয়েক আগে রবি শাস্ত্রীর ছেড়ে যাওয়া ভারতীয় দলের কোচিং পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। এবারের বিশ্বকাপ শেষেই তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠেছে, এরপর কি দ্রাবিড়ই থাকবেন কোচ নাকি অন্য কেউ দায়িত্ব নিবে টিম ইন্ডিয়ার।
দেখার বিষয়, বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) রাহুল দ্রাবিড়কে নতুন চুক্তির প্রস্তাব দেয় কি না। আবার দ্রাবিড় নিজেও বিশ্বকাপের পর কোচিং ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করতে আগ্রহী হবেন কি না সেটাও ভাবনার ব্যাপার।
তবে সব কিছু নির্ভর করছে বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্সের উপর। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলে তো ভালোই, সেমিফাইনালে অন্তত খেলা উচিত ভারতের। তা না হলে ‘বলির পাঁঠা’ হতে হবে কোচ রাহুল দ্রাবিড়কেই। যদিও কারো কারো মতে, বিশ্বকাপের পরই পরই অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আফ্রিকা আর ইংল্যান্ড সিরিজে কোচ হিসেবে দ্রাবিড়ের থাকা উচিত।
অবশ্য লাল ও সাদা বলে ভিন্ন কোচ রাখার চিন্তাও রয়েছে বিসিসিআইয়ের। ইংল্যান্ড যেমন সাদা পোশাকে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং রঙিন পোশাকে ম্যাথু মটের অধীনে খেলে, সেরকম করলেও করতে পারে ভারত৷
সেই বিবেচনা থেকেই হয়তো উঠে এসেছিল আশিষ নেহরার নাম। আইপিএলে সফল হওয়া এই কোচ অবশ্য এখনি জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করতে চান না। ২০২৫ সাল পর্যন্ত গুজরাট টাইটান্সের সঙ্গে চুক্তি থাকায় এই মুহূর্তে অন্য কিছু ভাবছেন না কিংবদন্তি পেসার।
মূলত ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সাহসী পদক্ষেপ নিতে না পারায় এই দুই সংস্করণের দলে অন্য কাউকে দেখতে ইচ্ছুক অনেকে। একই ঘরানার তিন ব্যাটসম্যানকে টি-টোয়েন্টি দলের টপ অর্ডারে খেলানো, ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলে কোন ডানহাতি স্পিনার না রাখা এবং ফিটনেস যাচাই ছাড়া লোকেশ রাহুলকে দলে জায়গা দেয়া – ইত্যাদি দ্রাবিড়ে বড় ভুল বলেই মানছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।
সবকিছু ছাপিয়ে অবশ্য বিশ্বকাপে রোহিত শর্মাদের পারফরম্যান্স নির্ধারণ করে দিবে রাহুল দ্রাবিড়ের ভবিষ্যত। ২০১১ সালের পর আবারো বিশ্বকাপ জিতে গেলে দ্রাবিড় হয়তো গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে হাত নেড়ে বিদায় বলে দিবেন। তবে উল্টেটা হলে গ্রেগ চ্যাপেলের ভাগ্য বরণ করে নিতে হবে দ্য ওয়ালকে।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে শচীন, শেবাগদের বাজে ফলাফলের কারণে পদত্যাগ করতে হয়েছিল গ্রেগ চ্যাপেলকে। অথচ এর আগের বছরগুলোতে কি দারুণভাবেই না দলকে গড়ে তুলেছিলেহ এই প্রোটিয়া।
পোর্ট অব স্পেনের সেই দু:খময় গল্পে অধিনায়ক ছিলেন রাহুল দ্রাবিড় নিজেই। সেসময় পোর্ট অব স্পেন তাঁর জন্য হয়ে উঠেছিল ‘পোর্ট অব পেইন’। এবার কি তবে কোচ হয়ে নতুন কোন ইতিহাস লিখবেন দ্রাবিড়, উত্তরের অপেক্ষায় আছে পুরো ভারতবাসী।