গত বছরও বাংলাদেশের তিন ফরম্যাটের দলে ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। শুধু গুরুত্বপূর্ণ সদস্যই নয়, তাঁকে ভাবা হতো ভবিষ্যৎ ক্যাপ্টেনও। এমনকি কয়েক ম্যাচে টাইগারদের নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি।
কিন্তু, কয়েক মাসের ব্যবধানে আজ এই উইকেটকিপার কোন আলোচনাতেই নেই, টি-টোয়েন্টিতে সন্তোষজনক পারফরম্যান্স না করায় সব সংস্করণ থেকেই বাদ পড়তে হয়েছে তাঁকে।
অথচ বড় দুই ফরম্যাটেই বাংলাদেশ দলের মিসিং পাজল হতে পারেন নুরুল হাসান সোহান। বিশেষ করে ওয়ানডেতে মিডল অর্ডার কিংবা লোয়ার মিডল অর্ডারে দারুণ সংযোজন এই তারকা।
তাঁর ছোট ওয়ানডে ক্যারিয়ারেরও পরিসংখ্যানই সেই কথা প্রমাণ করে, অথচ বিশ্বকাপ দলের সম্ভাব্য ক্রিকেটারদের আলোচনায় খুব একটা উচ্চারিত হচ্ছে না সোহানের নাম।
কিন্তু নিজের কাজটা ঠিকই করে যাচ্ছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। সম্প্রতি এশিয়ান গেমস স্কোয়াডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ টাইগার্স।
সেখানে দারুণ করছেন তিনি; এই যেমন গতকালের ম্যাচে ৩৮ বলে দুই চার এবং দুই ছয়ে করেছেন ৪৮ রান। এর আগের ম্যাচে ৪৫ বলে ৬৫ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস এসেছে সোহানের ব্যাট থেকে।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের মত ঘরোয়া আসরেও নুরুল হাসান সোহান ধারাবাহিক। ওয়ানডে দলের সাত নম্বরে ব্যর্থ আফিফ, শামীমরা; অন্যদিকে, একই পজিশনে একটানা পারফর্ম করেও উপেক্ষিত সোহান।
নিজের পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৯৪ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন তিনি। ব্যাটিং গড় আশিরও বেশি। এমন সংখ্যা দেখে ভাববেন না, দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কিংবা ঘরের মাঠে খেলেছেন তিনি – ক্যারিয়ারে এখনো দেশের মাটিতে ওয়ানডে না খেলা সোহান মোকাবিলা করেছন নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দলকে।
এছাড়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংসও আছে তাঁর। অবশ্য পরিশ্রমের মূল্য পেয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে ফিরতে যাচ্ছেন তিনি।
মুশফিকুর রহিম না থাকায়, ম্যাচ খেলার সম্ভাবনাও আছে, আর এমন সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ভারতের বিমান ধরা সোহানের জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র। সাত নম্বরের লড়াইয়ে নুরুল হাসান সোহানের মূল লড়াই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে, আবার সৌম্যকেও বিবেচনা করা হতে পারে এই পজিশনে।
তবে, সাম্প্রতিক ফর্ম, অ্যাপ্রোচ সবকিছু বিবেচনায় বাকিদের চেয়ে এগিয়েই আছেন এই আনঅর্থোডক্স ব্যাটসম্যান। নুরুল হাসান সোহানের উইকেটকিপিং নিয়ে কোন সংশয় নেই, দেশসেরা ভাবা হয় তাঁকে।
যত সমালোচনা তাঁর ব্যাটিং নিয়েই, নিয়মিত রান পেলেও টেকনিক নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে এবার কিছুটা বদলেছে পরিস্থিতি, টেকনিকের চেয়ে অ্যাপ্রোচ আর পারফরম্যান্সকেই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
আর তাই ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী রান করতে পারলেই নিজের হারানো জায়গাটা ফিরে পাবেন সোহান; ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপও হয়তো খেলতে পারবেন তখন।