বড় মাপের ক্রিকেটাররা বড় মঞ্চেই সেরাটা দেন, বর্ডার গাভাস্কার ট্রফিতে তাই বিরাট কোহলি জ্বলে উঠবেন এটাই ছিল সবার প্রত্যাশা। কিন্তু বাস্তবতা ঠিক উল্টো; জ্বলে উঠা তো দূরে থাক, রান করতেই পারছেন না তিনি। কি জানি, অদৃষ্টের কোন ইশারায় একেবারে অসহায় অবস্থা তাঁর। পাঁচ ইনিংসের মধ্যে চারবারই তাঁকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছে অজি বোলাররা।
অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনে বোলার বিশেষ করে পেসাররা অনেক কিছু করার সুযোগ পান; উইকেটে সিম মুভমেন্ট থেকে শুরু করে বাউন্স সবরকমের সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু কোহলি কখনোই এসব দেখে ব্যাটিং করেননি, উইকেট যেমনই হোক তিনি একই স্টাইলে খেলেছেন – সেটা অবশ্য তাঁকে সফলতা এনে দিয়েছে। এজন্যই নিজের ব্যাটিংয়ের ওপর এমন অগাধ বিশ্বাস তাঁর।
কিন্তু চলতি সিরিজে অন্যরকম একটা দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছে। ভারতীয় তারকা পুরনো দিনের স্মৃতি ফেরাতে পারছেন না, বরং নিজের মত করে খেলতে গিয়ে বারবার ব্যর্থতার বৃত্তে আটকা পড়ছেন। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বল পেলেই কেন যেন হাঁসফাঁস শুরু হয়ে যায় তাঁর।
অথচ – স্টিভেন স্মিথ, লোকেশ রাহুল প্রত্যেকেই বোলিংয়ের ধাঁচ বুঝে ব্যাটিংয়ের ধরন পাল্টে ফেলেন। আর তাতেই রানের দেখা পেয়েছেন তাঁরা; কিন্তু কোহলি ভুগছেন দ্বিধা দ্বন্দে; ব্যর্থতার সংখ্যা যত বাড়ছে ততই যেন সংশয়ের সাগরে ডুবে যাচ্ছেন তিনি। এইতো গোলাপী বলের টেস্টে শট খেলবেন না ছাড়বেন এই দোটানার মধ্যেই উইকেট দিয়ে এসেছেন।
চাপ কাটিয়ে ওঠার জন্য রান করাটাই সর্বোত্তম উপায়, এই ডানহাতি নিজেও সেটা বিশ্বাস করেন। ক্যারিয়ার জুড়ে সেটাই করার চেষ্টা করেছেন, বোলারদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে তবেই রান করেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে, আরো স্পষ্ট করে বললে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম বা অ্যাওয়ে সিরিজে এমনটা করতে পারেননি তিনি – প্ল্যান বি এর অভাবেই কি এমন হাল?
স্মিথ স্ট্যান্স বদলেছেন, রাহুল সফট হ্যান্ডে খেলার অভ্যাস করেছেন, ট্রাভিস হেড যতটা সম্ভব জায়গা নিয়ে খেলার চেষ্টা করেন, লাবুশানে কিংবা ম্যাকসুইনি সবসময় বল ছাড়ার জন্য প্রস্তুত – সফল হন বা না হন, ভাল বলের বিপক্ষে তাঁদের সবারি কোন না কোন পরিকল্পনা আছেই। বিরাট কোহলি ঠিক এই জায়গায় পিছিয়ে আছেন। খুব বেশি দেরি হওয়ার আগে তিনি কি পারবেন এই কমতি কাটিয়ে উঠতে?