সাদা বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের অবিসংবাদিত সেরা ব্যাটার তিনি। টি-টোয়েন্টিতে তো বটেই। জাতীয় দল কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট – সব জায়গাতেই রান করেন পাল্লা দিয়ে। তাঁকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী হয় কাড়াকাড়ি।
তবে, চলতি বিশ্বকাপের শুরু থেকেই যেন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। সেই প্রথম ম্যাচে চিরকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪২ রানের ইনিংস খেলার পর বিশ্বকাপের বাকিটা সময় যেন জশ বাটলার ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।
এই বাটলারের অধীনেই গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড। সেই আসরে বাটলারের ব্যাটও পুরো আসর জুড়েই হেসেছিল। ছয় ম্যাচে করেছিলেন ২২৫ রান। ব্যাটিং গড় ছিল ৪৫ আর স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৪৫!
তবে, বিশ্বকাপ জয়ের পরই যেন বাজে সময় শুরু হয় বাটলারের। ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে একদমই পারফরম করতে পারেননি এই ইংলিশ অধিনায়ক।
নয় ইনিংসে মোটে ১৩৮ রান করেছিলেন তিনি; গড় ছিল স্রেফ ১৫.৩৩। পুরো বিশ্বকাপে একটা হাফ-সেঞ্চুরিও দেখা যায়নি তাঁর ব্যাটে। নয় ম্যাচের মধ্যে ইংল্যান্ড জিততে পারে মাত্র তিনটি ম্যাচে। বাদ পড়ে যায় গ্রুপ পর্ব থেকেই।
এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল বাটলার বাহিনীর। তবে, সব শঙ্কা উড়িয়ে ঠিকই সুপার এইটে পৌঁছেছে দল।
প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালেও, দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ড হেরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে তাই শেষ ম্যাচে বড় জয় পাওয়ার কোনো বিকল্প ছিল না বাটলারদের জন্য। রান রেটটা তো বাড়িয়ে রাখা দরকার।
সেই কাজটা বেশ ভালভাবেই করতে পেরেছে ইংল্যান্ড। আর সেই কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাটলার। ক্যাপ্টেন লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট। যুক্তরাষ্ট্রকে মাত্র ১১৫ রানে অলআউট করার পর বলা যায় বাটলার একাই ম্যাচটা বের করেছেন।
৯.৪ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড, কোনো উইকেট না হারিয়েই। বাটলারের বাউন্ডারিতে নিশ্চিত হয় জয়। ১১৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাটলার একাই করেন ৮৩ রান, ৩৮ বল খেলে। স্ট্রাইক রেট প্রায় ২২০!
ইনিংসে ছিল ছয়টি চার ও সাতটি ছক্কা। হারমিত সিংয়ের এক ওভারেই হাঁকান পাঁচটি ছক্কা। আমেরিকাকে আর ক’টা রান করার সুযোগ দেওয়া গেলে হয়ত, চলতি বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিটা বার্বাডোজেই হয়ে যেত। তবে, বাটলারের এই ফর্ম অব্যাহত থাকলে বিশ্বকাপের বাকিটা সময় বোলারদের ঘুম নিশ্চিত ভাবেই গায়েব হতে চলেছে।