চেলসি ও ‘অর্থই সকল অনর্থের মূল’

দলবদলের বাজারে ব্যয়ের রেকর্ড গড়েছে চেলসি। দলটাকে তাঁরা ঢেলে সাজাতে আক্ষরিক অর্থেই আর্থিক ভাবে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি। তবে, জয় ফর্মূলার খোঁজে একজন কোচ যদি বারবার তার মূল একাদশের পরিবর্তন করে কিংবা দল খুঁজে নিতে শঙ্কায় পড়ে তবে তা নিয়মিতভাবেই সমালোচনার জন্ম দেয়। যা এই মুহূর্তে ঘটছে চেলসি কোচ গ্রাহাম পটারের ক্ষেত্রে।

উচ্চ মূল্যের খেলোয়াড় দলে ভিড়িয়েও জয়ের সন্ধানে পটার তার মূল দলটি বেছে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের উপরের দিকে উঠতে জয়ের বিকল্প নেই। আর চেলসি সেই জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে। শুক্রবার ফুলহ্যামের সাথে গোলশুন্য ড্র করার পর ট্রান্সফার উইন্ডোতে বিপুল পরিমান অর্থলগ্নি নিয়ে আবারো প্রশ্ন উঠেছে।

গ্রীষ্ম ও শীতকালীন দলবদল মিলিয়ে চেলসি প্রায় ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি ব্যয় করেছে। কিন্তু তার বিপরীতে খেলোয়াড়দের আস্থার জায়গাটি হারিয়ে ফেলছে। দুই ট্রান্সফার উইন্ডো মিলিয়ে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এসেছে সর্বমোট ১৭ জন নতুন খেলোয়াড়।

ট্রান্সফার উইন্ডোর দরজা বন্ধ হবার পর নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তারা গোলশুন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে চেলসি। পুরো ম্যাচে মাত্র তিনটি শট তারা টার্গেটে মেরেছিল যা থেকে একটি গোলও আদায় করতে পারেনি।

খেলোয়াড়দের মান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তার উত্তরে পটার বলেছেন, এটা নতুনদের সম্বয়ে গড়া একটি দল যাদের নিয়ে চেলসি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। নতুন মালিক টড বোহলিকে সন্তুষ্ট করতে পটারের সামনে এখন জয় ভিন্ন বিকল্প পথ খোলা নেই।

এর আগেও প্রিমিয়ার লিগের অনেক সেরা দলের মূল একাদশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ১৯৯৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড. ২০০৪ সালে আর্সেনাল ও গত বছর লিভারপুলের দল নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। কিন্তু চেলসির মত দলের জন্য বিশেষ করে আধুনিক সময়ের ব্যস্ত সূচিতে সেরা একাদশ বেছে নেয়া সম্ভব বলেই অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

ম্যানচেস্টার সিটি বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রমাণ করে আসছে একটি শক্তিশালী মূল একাদশ দলের সাফল্যের পিছনে মূল নিয়ামক। অন্যদিকে, লিভারপুল সাম্প্রতিক সময়ে গুটিকয়েক খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করেই দল গড়ছে। এবারের মৌসুমে হয়তো তারা সে ধরনের সাফল্য পায়নি। কিন্তু তারপরও দলবদলের বাজারে তারা নতুন খেলোয়াড়ের দিকে খুব একটা নজড় দেয়নি।

চেলসির সাবেক ফরোয়ার্ড প্যাট নেভিন বলেছেন, ‘সেরা একাদশ বেছে নিতে এখানে অত্যন্ত সহজ কিছু বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচে একই একাদশ বেছে নেয়াটা ঠিক নয়। যদি না সেই দলটি খুব বেশি শক্তিশালী কিংবা অপরিবর্তনীয় হয়।’

টেবিলের তলানির দিকে থাকা দলটির বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে লিগে যে দলটি খেলতে নামবে, অবশ্যই সেই দলটি থেকে কিছু খেলোয়াড় পরিবর্তন করেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে নামতে হবে। এর বাইরে পটার সব সময়ই নিজস্ব প্লেয়িং স্টাইল আরোপ করার কারণেও সমালোচিত হচ্ছেন।

বিশ্বের সেরা সব তরুণ প্রতিভাদের এই মুহূর্তে দলে ভেড়াতে চেলসি বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করেছে। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিগুলোতে তারা যে পরিমান অর্থ দিয়েছে তা চোখে পড়ার মত।

নেভিন মনে করেন বিষয়টা অত্যন্ত ঝুঁকির, ‘আট বছরের মেয়াদে একজন তরুণ খেলোয়াড় যদি নিজেকে প্রমান করতে না পারে তাহলে শতকরা হারে ব্যর্থতার পরিমানও বেড়ে যায়। কিন্তু বিপরীতে তারা যদি একবার সফলতা দেখাতে পারে তবে সেটা দলের এগিয়ে যাবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link