টড বোহেলি চেলসির মালিকানা পাবার পর থেকেই দলবদলের বাজারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে চেলসি। দলকে পুরো ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে তরুণ তারকাদের দলে ভেড়াচ্ছেন তিনি। এছাড়া কোচ গ্রাহাম পটারও চাইছেন দীর্ঘ মেয়াদে দলকে গড়ে তুলতে।
নতুন তারকাদের আগমণের ফলে চেলসিকে তাই ছেড়ে দিতে হবে বেশ কয়েকজন পুরনো তারকাকে। আসুন দেখে নেয়া যাক, কারা আগামী মৌসুমে স্ট্র্যামফোর্ড ব্রিজ ছাড়ছেন।
- হাকিম জিয়েচ
মিখাইলো মুরডিক, ননি মাদুয়েকে, জোয়াও ফেলিক্সের আবির্ভাবে মরক্কোর উইংগার হাকিম জিয়েচের চেলসি ছাড়া সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অথচ বড় আশা নিয়েই আয়াক্স থেকে ৩৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে তাঁকে দলে নিয়েছিল লন্ডনের ক্লাবটি। কিন্তু আয়াক্সের সেই ফর্মের ছিটেফোঁটাও ব্লুজদের জার্সিতে দেখাতেই পারেননি এই তারকা। এই তারকা নিজেও তাই স্ট্যামফোর্ড ছাড়তে আগ্রহী।
বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে দারুণ পারফর্ম করলেও গ্রাহাম পটারের একাদশে জায়গা পাচ্ছিলেন না তিনি। জানুয়ারির দলবদলেই পিএসজিতে ধারে যোগ দেবার দ্বারপ্রান্তে ছিলেন তিনি। এমনকি প্যারিসে উড়েও গিয়েছিলেন চুক্তি সম্পন্নের আশায়। কিন্তু চেলসি কাগজপত্র পাঠাতে দেরি করায় ভেস্তে গেছে সে দলবদল।
আসন্ন গ্রীষ্মের দলবদলে তাই জিয়েচকে দেখা যাবে নতুন কোনো দলে।
- ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ
২০১৯ মৌসুমে ৬৪ মিলিয়ন ইউরোর বড় অংকের বিনিময়েই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইংগার ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচকে দলে ভেড়ায় চেলসি। কিন্তু স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে আসার পর থেকে ইনজুরির কারণে বেশিরভাগ সময় মাঠের বাইরেই কাটাতে হয়েছে তাঁকে।
তাছাড়া মাঠের পারফরম্যান্সও ছিল ছন্নছাড়া। এই মৌসুমেই ১৬ ম্যাচে মাঠে নেমে মোটে এক গোল করেছেন। তাছাড়া কোচ গ্রাহাম পটারের গুডবুকেও তাঁর নাম নেই। নতুন উইংগারদের আর্বিভাবে তাই পুলিসিচের চেলসি ছাড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।
- মাতেও কোভাচিচ
২০১৯ সালে সবাইকে অবাক করে দিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে চেলসিতে যোগ দিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার মাতেও কোভাচিচ। কিন্তু তাতেও প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি। বেশিরভাগ সময়ই তাঁকে মাঠে নামতে হয়েছে বদলি হিসেবে।
বক্স টু বক্স মিডফিল্ডার হিসেবে খেলতে পারদর্শী কোভাচিচের বড় সমস্যা তাঁর অধারাবাহিকতা। নিজের দিনে যেমন একাই প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিতে পারেন, তেমনি অফফর্মের দিনে তিনি হয়ে যান গড়পড়তা। তাছাড়া গ্রাহাম পটারের ট্যাকটিকসেও তাঁর খেলার সুযোগ কম। তাঁর জায়গায় তরুণ রুবেন লফটাস চিক, কনর গ্যালাঘারদের খেলাতেই বেশি আগ্রহী কোচ।
আসন্ন গ্রীষ্মে তাই চেলসি ছাড়ার গুঞ্জন রয়েছে কোভাচিচের।
- কালিদু কুলিবালি
গত গ্রীষ্মে আন্দ্রেস ক্রিশ্চেনসেন এবং আন্তোনিও রুডিগার ক্লাব ছাড়লে রক্ষণে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল চেলসির। সেই কারণেই তড়িঘড়ি করে নাপোলি থেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা সেন্টারব্যাক কালিদু কুলিবালিকে ৩৫ মিলিয়নের বিনিময়ে দলে ভেড়ানো হয়।
কিন্তু ইপিএলের গতিময় ফুটবলের সাথে মোটেই তাল মেলাতে পারেননি সেনেগালিজ এই তারকা। বরং তাঁর বাজে ডিফেন্সের মাসুল হিসেবে পয়েন্ট হারাতে হয়েছে দলকে। রক্ষণের এই সমস্যা সমাধানে নতুন আনা হয়েছে ওয়েসলি ফোফানা, বেনোয়িট বাদিয়াশিলের মত প্রতিভাবান তরুণদের।
নতুন মালিক টড বোহেলি চাইছেন তরুণদের নিয়ে দলকে ঢেলে সাজাতে। সেই কারণেই কুলিবালির চেলসির অধ্যায় শেষ হতে যাচ্ছে এক মৌসুম বাদেই।
- বেন চিলওয়েল
বেশ ঢাকঢোল পিটিয়েই ৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে লেস্টার সিটি থেকে লেফটব্যাক বেন চিলওয়েলকে দলে এনেছিল চেলসি। পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও ইনজুরি তাঁর ক্যারিয়ারকে বাঁধাগ্রস্ত করেছে বারবার।
এমনিতে চিলওয়েলকে ছেঁড়ে দেবার পরিকল্পনা না থাকলেও মার্ক কুকুরেলার উপস্থিতি তাঁর জায়গাকে ফেলে দিয়েছে হুমকির মুখে। ইংলিশ এই লেফটব্যাক মোটেই চাইবেন না বেঞ্চে সময় কাটাতে। সেই কারণেই কিনা তাঁকে ছেঁড়ে দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে আরেকটু শক্তিশালী হতে চাইছে ক্লাবটি।
গুঞ্জন আছে জোয়াও ক্যানসেলো দল ছাড়ার পর নিজেদের নতুন লেফটব্যাক হিসেবে চিলওয়েলকে মনে ধরেছে ম্যানসিটি কোচ পেপ গার্দিওলার। এখন দেখার বিষয় আগামী মৌসুমে প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরে নাম লেখান কিনা এই তারকা।