তামিল সিনেমার এক ঝলক, ব্যাকগ্রাউন্ডে একদল কিশোর হাততালি দিচ্ছে। তাদের মধ্যেই এক ছেলেকে দেখা যায়—চোখে স্বপ্ন, মুখে উচ্ছ্বাস। সেটার পর্দায় থাকা চরিত্রটা হয়তো জানত না, বাস্তবেও গল্পটা একদিন এমন মোড় নেবে।
বরুণ চক্রবর্তী —একসময় তামিল সিনেমার এক্সট্রা চরিত্রে অভিনয় করতেন, লাইট-ক্যামেরার ফ্রেমে চোখের আড়ালে থাকা সেই ছেলেটাই আজ ভারতীয় ক্রিকেটের নীল জার্সিতে বিশ্ব জয়ের কারিগর!
সাধারণ ক্রিকেটারদের গল্প থাকে একরকম, কিন্তু বরুণেরটা যেন অন্যরকম। ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে আর্কিটেকচার, সেখান থেকে ক্রিকেটে ঝোঁক। অফস্পিন, ক্যারম বল, গুগলি—একজন লেগ স্পিনারের হাতে যত অস্ত্র থাকা সম্ভব, তার সবই যেন বরুণের ঝুলিতে!
আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সই তার ভাগ্য বদলে দেয়। ব্যাটসম্যানদের ধোঁকা দেওয়া তার বোলিং নজর কাড়ে নির্বাচকদের, আর সেখান থেকেই জাতীয় দলে ডাক।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক, তারপর বড় মঞ্চে নিজের দক্ষতার প্রমাণ। ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতীয় দলের হয়ে তার স্পিন ভেলকিতে প্রতিপক্ষ দলগুলো দিশেহারা। ফাইনালে তাঁর বোলিং-জাদুতেই ভারত পেল কাঙ্ক্ষিত ট্রফি।
পুরো আসর জুড়েই বরুণের স্পিন ঘূর্ণিতে নাকানি চুবানি খেয়েছে বিশ্বের নামকরা সব ব্যাটাররা। এক সময় যে ছেলেটা সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ডে হারিয়ে যেত, সে-ই আজ ক্যামেরার ফোকাসে, গলায় স্বর্ণপদক ঝুলিয়ে হাতে ট্রফি উঁচিয়ে ধরে আছেন!
বরুণ চক্রবর্তীর জীবনের গল্পটা যেন নিখুঁতভাবে লেখা এক সিনেমার স্ক্রিপ্ট—যেখানে প্রতিটি বাঁক, প্রতিটি উত্থান-পতন শেষে নায়ক বিজয়ী হয়!