ব্যাকড্রপে লেখা ‘আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ — পাকিস্তান’। মজার ব্যাপার হল, সংবাদ সম্মেলনের সেই কক্ষটির অবস্থান দুবাই। সেই ঘরে বসে গৌতম গম্ভীর হঠাৎ করেই ক্ষেপে গেলেন। চোখ গরম করে বলে দিলেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠের বাড়তি কোনো সুুবিধা তাঁরা পাননি। দুবাইয়ের ‘নিউট্রাল’ ভেন্যু – এই নিয়ে বেশ হাস্যরস হচ্ছে ক’টা দিন। অভিযোগের আগুন ছুটে আসছে ভারতের দিকে। আর সামনে যখন গৌতম গম্ভীর, তখন জবাব তো তিনি দেবেনই।
ক্রিকেটে আবহাওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশ, ভেন্যু আর সফরের ধকল। কিন্তু, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এবারের সংস্করণে ভারত যেন পুরোপুরি আরামের আসনে বসে আছে। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড আর অন্যান্য দলগুলোকে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর থেকে দুবাই আসতে হচ্ছে, আবার ফিরে যেতে হচ্ছে, সেখানে ভারত তাদের সব ম্যাচ খেলেছে দুবাইতেই। এই এক ভেন্যুতে খেলে দলটি চার ম্যাচেই অজেয় থেকেছে, ফাইনালেও খেলতে নামবে এখানেই।
ভারতের এই সুবিধাজনক অবস্থান নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তখনই সংবাদ সম্মেলনে আগুন ঝরালেন গৌতম গম্ভীর। ভারতীয় দলের সাবেক আগ্রাসী ওপেনার, এখন ড্রেসিংরুমের বাইরে থেকেও আগ্রাসন ধরে রাখা ধারাভাষ্যকার—গম্ভীর স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘হোয়াট রাবিশ! আমরা এখানে কোনো সুবিধা পাইনি। আমাদের কোনো পরিকল্পনা ছিল না যে দুবাইতে খেলতে হবে। দুইজন ফ্রন্টলাইন স্পিনার দলে রাখলে, সেটা পাকিস্তান হোক বা অন্য কোথাও, আমরা এমন দলই খেলাতাম।’
তবে গম্ভীর যতই বলুন, পরিসংখ্যান তো অন্য গল্প বলে। দুবাইতে ভারতের রেকর্ড চোখ ধাঁধানো—১০ ওয়ানডেতে ৯ জয়। অন্য দলগুলো যেখানে প্রতি ম্যাচের আগে নতুন শহরে উড়ে যাচ্ছে, নতুন উইকেট বুঝতে সময় নিচ্ছে, সেখানে ভারত একই মাঠে থেকে উইকেটের চরিত্র বুঝে নিয়েছে অনেক আগেই। দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্ভাগ্য আরও নির্মম—তারা জানতই না সেমিফাইনাল কোথায় খেলতে হবে, শেষ মুহূর্তে দুবাইতে উড়ে এসে খেলেও আবার পাকিস্তানে ফিরে গেছে!
কিন্তু গম্ভীরের কাছে এসব ‘অভিযোগ’ নিতান্তই বাজে আলাপ। সংবাদ সম্মেলনে একপর্যায়ে তিনি বলেই ফেললেন, ‘কিছু মানুষ সবসময় অভিযোগ করবেই। তারা যেন বড় হয়, একটু ম্যাচিউরিটি দেখায়। এখানে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা ছিল না।’ সে যাই হোক ভারত এখন ফাইনালে। ফাইনালে আসুক, ভারতের জন্য দুবাইয়ের উইকেট থাকবে চেনা – এটা প্রকাশ্য দিবালোকের মত সত্যি!