কামব্যাক কিং অশ্বিন

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে শক্তিমত্তার বিচারে ‘ফেবারিট’ তকমা পেলেও প্রথম দুই ম্যাচেই ভরাডুবির পর সেমির দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে যায় ভারত। পাকিস্তানের বিপক্ষে দশ উইকেটের বড় হার পরের ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আট উইকেটের হার! টানা দুই হারে বিধ্বস্থ ভারতীয় শিবির। শিরোপা তো দূর টুর্নামেন্টে টিকে থাকাই যেন দায়!

তৃতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারলেই ধরতে হবে বাড়ির পথ। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ঠিক কামব্যাক করলো বিরাট কোহলির দল। আফগানিস্তানকে পাত্তা না দিয়ে ৬৬ রানের বড় জয় তুলে নেয় ভারত। টসে হেরে প্রথম ব্যাট করে রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলের ঝড়ো ফিফটিতে ২১০ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যমাত্রা দাঁড় করায় ভারত। সেটি তাড়া করতে নেমে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, মোহাম্মদ শামিদের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে আফগান ব্যাটিং শিবির।

প্রায় চার বছর পর রঙিন পোশাকে জাতীয় দলে ফিরেই নিজের সেরাটা দিয়ে দলের জয়ে অবদান রাখলেন অশ্বিন। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে ৪ ওভারে ১৪ রানের বিনিময়ে শিকার করেন দুই উইকেট। বরুণ চক্রবর্তীর ইনজুরিতে দলে সুযোগ পেয়েই অশ্বিন করলেন বাজিমাত।

অভিজ্ঞতা আর সামর্থ্যের মিশেলে করলেন গুরুত্বপূর্ণ এক স্পেল। ম্যাচ শেষে তাই প্রশংসা পেলেন অধিনায়ক বিরাট কোহলির কাছ থেকেও। অশ্বিনের দলে কামব্যাক করাটা অনেক বড় প্রাপ্তি নি:সন্দেহে ভারতের জন্য। আর শুধু ফেরাই নয়, পারফরমও করেছেন অশ্বিন। মাত্র ১৪ রান দিয়ে পেয়েছেন দুই উইকেট।

প্রথম দুই ম্যাচে তিনি ছিলেন না। ভারতকে হারতে হয়েছে। বাইরে থেকে অশ্বিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য আহ্ববান করা হচ্ছিল বারবার। একটু দেরিতে হলেও ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট সেই কথাটা মেনেছে। আর ফলাফল এখন হাতে নাতে। উইকেট থেকে খুব বেশি সাহায্য না পেলেও অশ্বিন নিজের কাজটা করতে পেরেছেন বুদ্ধিদীপ্ততা কাজে লাগিয়ে।

অধিনায়ক বিরাট কোহলিও মনে করেন, অশ্বিনের দলে ফেরাটা ইতিবাচকতা ছড়িয়েছে দলের মধ্যে। বিরাট বলেন, ‘অশ্বিনের কামব্যাক করাটা বড় একটা পজিটিভ দিক ছিলো দলের জন্য। এটার জন্য সে কঠোর পরিশ্রমও করেছে। সে আইপিএলেও বেশ ভালো পারফরম করেছিলো এবং এই ছন্দটা ধরে রাখতে পেরেছিল। সে উইকেট নিতেও যেমন পারদর্শী একই সাথে অসাধারণ একজন বোলার।’

আগের দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে হতাশাজনক পারফরম্যান্স করলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওপেনাররা সহ ঋষাভ পান্ত, হার্দিক পান্ডিয়াও ব্যাট হাতে তান্ডব চালান। প্রতিপক্ষকে শুরুর দিকেই চাপে রাখার পরিকল্পনাও সার্থক ছিলো জানালেন ভারতীয় অধিনায়ক।

তিনি বলেন, ‘আগের দুই ম্যাচের তুলনায় অনেক ভালো উইকেট ছিলো। দুই ওভার মারমুখী হয়ে খেলতে পারা মানেই প্রতিপক্ষকে সেই মেসেজটা দেওয়া যে আমরা তাদেরকে চাপে রেখেছি। টিম মিটিংয়েও বলেছিলাম আমাদেরকে পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে হবে। ছোট ছোট সুযোগ গুলোও হাতছাড়া করা যাবে না।’

টানা দুই হারের পর আফগানদের বিপক্ষে ৬৬ রানের জয় নিয়ে এখন পয়েন্টস টেবিলের চারে অবস্থান করছে ভারত। এখনও বাকি পথটা খুবই কঠিন বিরাট কোহলির দলের জন্য। বাকি দুই ম্যাচে জয় পেলেও সেমিতে যেতে হলে তাকিয়ে থাকতে হবে আফগানিস্তান-নিউজিল্যান্ডের ম্যাচের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link