মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স প্রমান করল ক্রিকেট ইজ এ টিম গেম।
দলে এক জন কিংবা দুই জন খেলোয়াড়ের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স আপনাকে একটা বা দুইটা ম্যাচ জিতিয়ে দেবে হয়তো, কিন্তু একটা মেগা টুর্নামেন্ট জিততে হলে একটা দল হয়ে পারফরম্যান্স করাটা খুব জরুরী।
এখন এই দল হয়ে ওঠার গল্পটা আমরা দেখি মাঠের ক্রিকেট থেকে। কিন্তু পেছনেও অনেক গল্প থাকে। শুরুটা হয় কোচিং স্টাফ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে, এরপর নিলামে বুদ্ধির খেলা বা কূটনীতি, তারপর বিশ্লেষণ, পুরো স্কোয়াডকে নিয়ে চর্চা, বিপক্ষ দল নিয়ে বিস্তর গবেষণা এবং সর্বোপরি স্কোয়াডের প্রত্যেককে দলে তাঁর ভূমিকা সম্পর্কে অবগত করা! আদতে এমন লাইন দশেকের একটা দুর্দান্ত লেখা লিখে ফেলা যতটা সহজ, কার্যসিদ্ধি ততটাই কঠিন!
হার্দিক পান্ডিয়া বল করার মত ফিট ছিলেন না। রোহিত শর্মাও ছিলেন না তার সেরা ফর্মে, জাসপ্রিত বুমরাহকে প্রথম কয়েক ম্যাচ বেশ শেকি মনে হয়েছে, ক্রুনাল পান্ডিয়ার এক্সক্লুসিভ ফিনিশ দেখা যায়নি, অথচ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স টুর্নামেন্ট জিতেছে আয়েসি ভঙ্গিমায়, যেন স্রেফ ‘নরমাল ডে অ্যাট অফিস’ স্টাইলে!
কখনো হার্দিকের ঝড়, কখনো কাইরেন পোলার্ডের ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশ, কখনো তরুণ প্রতিভা কিশানের নির্মম-নৃশংস ব্যাটিং, কখনো ডি ককের কাউন্টার পাঞ্চ, কখনো বোল্টের আনপ্লেয়েবল স্পেল, কখনো বুমরাহর ‘অ্যাজ ইউ উইশ উইকেট টেকিং হ্যাবিট’, আবার কখনো স্টাইলিশ সুরিয়া কুমার যাদবের ভরসা হয়ে ওঠা! ১৫/১৬ জনের স্কোয়াডে যখন ১০ জন ক্রিকেটার ভিন্ন ভিন্ন পথে আপনাকে জয় এনে দেবে, তখন দল হিসেবে আপনি অজেয় হয়ে উঠবেন প্রতিপক্ষের কাছে।
এবারের ইন্ডিয়া প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) দলগুলো শক্তির বিচারে প্রায় কাছাকাছি লেভেল মেইনটেইন করেছে, পার্থক্য ছিল শুধু মুম্বাই! মিরাকল ছাড়া তাদেরকে এই মৌসুমে শিরোপা বঞ্চিত করা সম্ভব ছিল না। রাখাটা পসিবল ছিল না। মিরাকল ঘটাতে পারেনি দিল্লি, অধিনায়ক রোহিতের হাতে তাই পঞ্চমবারের মত আইপিএল ট্রফি!
ফিক্সিং ইস্যু, কোভিড ইস্যু, এবং আরো কিছু ইস্যুর ভিড়ে এই দেড় মাসব্যাপী আইপিএল টুর্নামেন্ট ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য কিছুটা অক্সিজেনের খোরাক। থ্যাঙ্কস টু সৌরভ গাঙ্গুলি। এক সাথে অনেক স্টারকে পারফর্ম করতে দেখাটাও ছিল পুলকের ব্যাপার। কিছুদিনের ভেতর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় দলগুলো মাঠে নামবে। ততদিন পর্যন্ত দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর জন্য আইপিএল ছোট্ট একটা ধন্যবাদের দাবীদার।