ক্রোয়েশিয়ার মাদ্রিদ ডিএনএ

আগের বিশ্বকাপে ক্রোয়েট রূপকথার নেপথ্য নায়ক ছিলেন লুকা মদ্রিচ। জিতেছিলেন বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারের খেতাব গোল্ডেন বলও। সে বছর ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাবও পেয়েছিলেন এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। ক্রোয়েশিয়াকে এবারও টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ৩৭ বছর বয়সী মদ্রিচ মনে করেন, ক্রোয়েশিয়ার হার না মানা মানসিকতার মিল রয়েছে তার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের ডিএনএ’র সঙ্গে।

রাশিয়া বিশ্বকাপের পর কাতার বিশ্বকাপেও ক্রোয়েশিয়ার কাণ্ডারি লুকা মদ্রিচ। ক্রোয়েশিয়ার এই দল বুড়িয়ে গেছে বলেই মনে করছিলেন ফুটবল বোদ্ধারা। তাই এই বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে নিয়ে বাজি ধরেননি তেমন কেউই। সেই ক্রোয়েশিয়াই রাশিয়া বিশ্বকাপের ফর্ম যেন টেনে নিয়ে এসেছে কাতারে। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ব্রাজিলকে বিদায় করে তারা পৌঁছেছে শেষ চারে। ম্যাচের পর ম্যাচ দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছেন মদ্রিচ।

৩৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার ক্লাব এবং জাতীয় দলের জন্য এক অনুপ্রেরণাদায়ক চরিত্র হয়ে উঠেছেন। ২০১৮ সালে ক্রোয়েশিয়াকে ইতিহাসের প্রথম বারের মত ফাইনালে তোলার পর মদ্রিচ এবার রয়েছেন দলকে টানা দুই বিশ্বকাপ ফাইনালে তোলার পথে।

গত বিশ্বকাপে ফাইনালের আগে টানা ৩ নক আউট ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর পর এবারও রাউন্ড অব সিক্সটিনের পর ক্রোয়েশিয়ার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ গড়ালো ১২০ মিনিট পর্যন্ত। সব গুলোতেই জয়ী ক্রোয়েটরা। এতেই প্রমাণ হয় ক্রোয়েশিয়ার কঠিন এবং হার না মানা মানসিকতার।

মদ্রিচ বিশ্বাস করেন, রিয়াল মাদ্রিদের অদম্য মানসিকতা রয়েছে ক্রোয়েশিয়ানদেরও। তিনি বলেন, ‘বলা যেতে পারে লস ব্লাংকোদের মত একই ডিএনএ রয়েছে ক্রোয়েটদের কারণ আমরা সব সময় শেষ পর্যন্ত লড়তে চাই এবং কখনোই হার মানতে চাই না।’

লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামার আগে বেশ আত্মবিশ্বাসী মদ্রিচ, ‘আরেকটি বড় দলের বিপক্ষে সেমিফাইনালে নামব আমরা কোনো খেলোয়াড়ের বিপক্ষে নয়। অবশ্যই মেসি অনেক বড় মাপের খেলোয়াড়। সে তাদের সেরা খেলোয়াড় এবং তাকে থামাতে আমাদের অনেক কঠিন সময় পার করতে হবে মাঠে। আমরা প্রস্তুত মাঠে আমাদের সেরাটা দিতে।’

মদ্রিচ মনে করেন মাঠে নিজেদের সেরাটা দিলেই ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকবেন তারা। নিজেদের সাথে ফেভারিটের তকমা না থাকা নিয়েও কোনো সমস্যা নেই মদ্রিচের, ‘সবাই বড় দলের দিকেই মনোযোগী থাকে। অনেকেই আমাদের গোণায় ধরেনি কিন্তু এটি নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই যে বড় দল গুলোর ছায়ায় আমরা থাকি।’

বাইরের আলোচনার চেয়ে নিজেদের খেলা নিয়েই বেশি মনযোগী ক্রোয়েট অধিনায়ক। নক আউটের প্রতিটি ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে যাওয়া নিয়েও কথা বলেছেন মদ্রিচ, ‘অবশ্যই নির্ধারিত সময়েই ম্যাচ জিততে চাই আমরা যেন খেলা পেনাল্টি শ্যুটআউট অব্দি না যায়। কিন্তু আমরা জেতার জন্য যে কোনো কিছু করতে প্রস্তুত।’

টানা দুইবার ফেভারিটের তালিকায় না থেকেও সেমিফাইনাল খেলতে যাচ্ছে ক্রোয়েশিয়া। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গত বিশ্বকাপের সুখস্মৃতি ফিরিয়ে এনে নিশ্চই ফাইনালে পাখির চোখ করেছেন মদ্রিচ, লিভাকোভিচরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link