আমি ভুল সময়ে জন্মেছি তাই আমায় কেউ চিনতে পারেনি

‘আমি ভুল সময়ে জন্মেছি তাই আমায় কেউ চিনতে পারেনি’ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ভুল সময়ে’ কবিতার এই লাইনটি দিয়েই শুরু করি। কেন এই লাইনটি দিয়েই শুরু করলাম? কারণ ক্রিকেট ইতিহাসে সুনীলের এ কবিতার মত ভুল সময়ে জন্ম নেওয়া ক্রিকেটারের অভাব নেই। সে সব ক্রিকেটাররা চাইলেই নিজেদের নামের পাশে দুর্ভাগা শব্দটা যোগ করতে পারে। অবশ্য তারা নিজেরা না চাইলেও বহু ক্রিকেটানুরাগী তাদের নামের পাশে সে ট্যাগলাইন ইতোমধ্যেই বসিয়ে দিয়েছে।

‘আমি ভুল সময়ে জন্মেছি তাই আমায় কেউ চিনতে পারেনি’ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ভুল সময়ে’ কবিতার এই লাইনটি দিয়েই শুরু করি। কেন এই লাইনটি দিয়েই শুরু করলাম? কারণ ক্রিকেট ইতিহাসে সুনীলের এ কবিতার মতো ভুল সময়ে জন্ম নেওয়া ক্রিকেটারের অভাব নেই। সে সব ক্রিকেটাররা চাইলেই নিজেদের নামের পাশে দুর্ভাগা শব্দটা যোগ করতে পারে। অবশ্য তারা নিজেরা না চাইলেও বহু ক্রিকেটানুরাগী তাদের নামের পাশে সে ট্যাগলাইন ইতোমধ্যেই বসিয়ে দিয়েছে। 

নিজ দেশের জার্সিতে বিশ্বমঞ্চে যাওয়ার স্বপ্ন সব ক্রিকেটারেরই থাকে কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য শুধু প্রতিভাই  তো আর যথেষ্ট নয়, ভাগ্যও অনেক বড় একটা নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। তবে অনেক ক্রিকেটারেরই প্রতিভা থাকলেও সেই ভাগ্যটা আর ঠিকঠাক ভাবে ধরা দেয় না। তাই পুরো ক্যারিয়ারজুড়ে তাদের থাকতে হয় ব্রাত্য হয়ে। 

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে (আইপিএল) প্রতিভা আহরণের খনি বললে অবশ্য খুব একটা ভুল বলা হয় না। প্রতি আসরেই দেখা মেলে এক ঝাঁক তরুণ পারফর্মারের। সেই তরুণরাই ভারতের হয়ে পরবর্তীতে প্রতিনিধিত্ব করে। একই সাথে বিশ্বমঞ্চেও নিজেদের একটা জায়গা করে নেয়। তবে আইপিএলের পরীক্ষিত সব তরুণ ক্রিকেটারই যে ভারতের হয়ে আলো ছড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। কেউ কেউ হারিয়ে গিয়েছেন পর্যাপ্ত লাইমলাইটের অভাবে, আবার কেউ ব্রাত্য হয়ে থেকেছেন নিজের ভাগ্য আর পরিস্থিতির কারণে। তো আজকের গল্পটা কয়েকজন ভারতীয় ক্রিকেটারকে নিয়েই যাদের মাঝে দারুণ সম্ভাবনা আছে কিন্তু এখনো সেই ভাগ্যের সাথেই তাদের লড়ে যেতে হচ্ছে। 

  • সাঞ্জু স্যামসন

নিজেকে কিছুটা দুর্ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন  স্যামসন। বয়স ২৭ পেরিয়ে ২৮ হতে চলল। কিন্তু এখনও জাতীয় দলে নিজের অবস্থানটা শক্ত করতে পারেননি। অথচ প্রতিটা আইপিএলেই কী দুর্দান্ত পারফর্ম করেন তিনি। তারপরেও জাতীয় দলে থিতু না হওয়ার পেছনে কারণটা হচ্ছে, ভারতের এই বিশ্বকাপ দলটাতেই উইকেটরক্ষক ব্যাটার রয়েছেন তিনজন। 

মহেন্দ্র সিং ধোনি পরবর্তী যুগের উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে ঋশাভ পান্ত  ভালভাবেই পরিচর্যা করা হচ্ছে। সেই পরিচর্যার অবশ্য ভাল ফলই পাচ্ছে ভারত।  ওয়ানডে আর টেস্ট, দুই ফরম্যাটেই  পান্ত  রয়েছেন দারুণ ছন্দে। আর টি-টোয়েন্টিতে দীনেশ কার্তিক রয়েছেন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। এ ছাড়া কে এল রাহুল তো টপ অর্ডারেরই অন্যতম ভরসার নাম। সব মিলিয়ে এই তিনজনকে টপকে সাঞ্জু স্যামসনের জন্য জাতীয় দলে ঢোকার রাস্তাটা বেশ কঠিনই।

আর আরেকটা কারণ হলো, স্যামসন টপ অর্ডার ব্যাটার। এখন এই জায়টায় দলে ঢুকতে হলে তাকে কে এল রাহুল, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, সুরিয়াকুমার যাদবদের মত ব্যাটারদের টপকাতে হবে। যেটি অসম্ভব কল্পনা না হলেও প্রায় অসাধ্য সাধন করার মতই। তাই এক অর্থে বলাই যায়, বড্ড ভুল সময়েই জন্মেছেন এই ক্রিকেটার। 

  • সন্দ্বীপ ওয়ারিয়র

ভারতের হয়ে ক্যারিয়ারে একটি মাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছিলেন। উইকেট শূন্য সে ম্যাচের পর ওয়ারিয়রের ক্যারিয়ারের প্রাপ্তির খাতাটাও ছিল অনেকটা শূন্যের মতই। কারণ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সে ম্যাচের পর আর কখনোই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেখা যায় নি এ পেসারকে।

অথচ কেরালার এ পেসার ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন পরীক্ষিত এক পারফর্মার। তবুও জাতীয় দলের পথটা তাঁর জন্য ছিল বেশ অমসৃণ। এমন কি গত আইপিএলেও ছিলেন অবিক্রিত। মূলত হঠাৎই আভেশ খান, আর্শদ্বীপ সিং, উমরান মালিকদের উঠে আসার কারণে আড়ালে পড়ে যান ৩২ বছর বয়সী সন্দ্বীপ ওয়ারিয়র।  

  • রাহুল ত্রিপাঠি  

আইপিএলের বেশ কয়েক মৌসুম ধরেই দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন রাহুল ত্রিপাঠি। তবে এখনও ভারতের ব্লু জার্সি গায়ে চাপাতে পারেননি তিনি। অবশ্য তাঁর জন্য রাস্তাটা বেশ কঠিনই। কারণ ভারতের বর্তমান ব্যাটিং লাইনআপে ত্রিপাঠিকে যুক্ত করতে হলে বাদ দিতে হবে সুরিয়াকুমার যাদব, বিরাট কোহলি, কে এল রাহুলদের মধ্যে একজনকে।

যেটি এই মুহূর্তে প্রায় অসম্ভবই বটে। তবে সিনিয়র ক্রিকেটার বিশ্রামের সময়ের সিরিজ গুলোতে খুব শীঘ্রই সুযোগ পেতে পারেন ত্রিপাঠি। কিন্তু দলে নিজেকে অপরিহার্য সদস্য হিসেবে গড় তুলতে তাকে পাড়ি দিতে বহু পথ। 

  • শেলডন জ্যাকসন

চেতেশ্বর পুজারার পর সৌরাষ্ট্রে জন্মানো ক্রিকেটারের মধ্যে সর্বোচ্চ রঞ্জি সেঞ্চুরির রেকর্ডটা(১৭) তাঁর। তারপরও কখনোই ভারতের জার্সি গায়ে কখনো ম্যাচ খেলা হয়নি শেলডনের। অবশ্য দলে ঋশাভ পান্তকে  টপকে ভারতীয় দলে জায়গা করে নেওয়া বেশ কঠিনই শেলডন জ্যাকসনের জন্য।

এটা এক অর্থে দুর্ভাগ্যজনকও বটে যে,  তাঁর জায়গাতে ভারতের প্রচুর বিকল্প আছে। সেই বিকল্প তালিকাতেও শেলডন জ্যাকসন আছেন কিনা সন্দেহ। শেলডন জ্যাকসনের জন্য তাই জাতীয় দল এখনও অনেক দূরের পথ। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...