ধোনি-রাহুল, ব্যাট হাতে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

ভারতের হয়ে সম্ভাব্য সকল শিরোপা জিতেছেন ধোনি। রাহুল যদিও সে উচ্চতায় পৌঁছাতে পারেননি। তবে ব্যাট হাতে নিশ্চয়ই ধারেকাছে কোথাও একটা রয়েছেন রাহুল।

ঋষাভ পান্তের মত একজন আগ্রাসী ধাঁচের ব্যাটারকে পাশ কাটিয়ে একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন লোকেশ রাহুল। চাপ ছিল, চাপকে ঠান্ডা মাথায় সামলেছেন লোকেশ রাহুল। আর শীতল মস্তিষ্কের প্রসঙ্গ আসলেই মহেন্দ্র সিং ধোনির কথাই যেন মনে পড়ে যায় সকল ক্রিকেটপ্রেমীদের।

ভারতের হয়ে সম্ভাব্য সকল শিরোপা জিতেছেন ধোনি। রাহুল যদিও সে উচ্চতায় পৌঁছাতে পারেননি। তবে ব্যাট হাতে নিশ্চয়ই ধারেকাছে কোথাও একটা রয়েছেন রাহুল। আইসিসির ওয়ানডে ফরম্যাটের বৈশ্বিক আসরে এই দুইজনের পারফরমেন্সের একটা তুলনা কিন্তু চাইলেই করা যায়।

লোকেশ রাহুল, এখন অবধি দুইটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেছেন। ১৯ ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমেছেন তিনি। এর মধ্যে ৫৮.০৭ গড়ে ৮১৩ রান এসেছে রাহুলের ব্যাট থেকে। পক্ষান্তরে ধোনি ইনিংস খেলেছেন ২৫টি, রান করেছেন ৪৩.৩৩ গড়ে। ৭৮০ রান করেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।

ধোনি কোন সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও রাহুলের দুইটি সেঞ্চুরি রয়েছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের মঞ্চে। অর্ধশতকের দিক থেকে অবশ্য ধোনি এগিয়ে। পাঁচটি হাফসেঞ্চুরি করতে পেরেছেন ধোনি। অন্যদিকে রাহুলের ঝুলিতে আছে চারটি হাফসেঞ্চুরি।

রানের বিচারে ধোনি এগিয়ে আছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। কিন্তু ইনিংসও প্রায় দ্বিগুণ বেশি খেলেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। রাহুলের চার ইনিংসের বিপরীতে ধোনির ইনিংস সংখ্যা আটটি। ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটাই ছিল রাহুলের প্রথম। আর প্রথম আসরেই বাজিমাত করেছেন তিনি।

১৪০ গড়ে রান করেছেন তিনি সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার মত উপায়। তিন ম্যাচেই তিনি থেকেছেন অপরাজিত। ধোনির গড়টা বেজায় মন্দ, মাত্র ২২.৮৭। দুইটি ফিফটিতে তিনি ১৮৭ রান করেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মঞ্চে। তবে তার ঝুলিতেও কিন্তু শিরোপা রয়েছে। ২০১৩ সালে তার নেতৃত্বেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম শিরোপা জেতে ভারত।

এই দুই সমীকরণের ভিত্তিতে ধোনিকে একেবারেই সাদামাটা ভাবলে ভুল ভাবা হবে। কেননা এই দুই টুর্নামেন্টের নকআউট পর্যায়ে ধোনির পরিসংখ্যান যথেষ্ট ঈর্ষনীয়। ছয় ইনিংসে ২৩৫ রান করেছেন। তিনটি হাফসেঞ্চুরি আছে এর মধ্যে। কিন্তু রাহুলের হাফ সেঞ্চুরির সংখ্যা মাত্র একটি।

পাঁচ ইনিংসে রাহুল ১৮২ রান করেছেন নকআউট ম্যাচে। যদিও গড়টা তার বেজায় ভাল। ৯১ গড়ে রান তুলেছেন লোকেশ রাহুল। অন্যদিকে ধোনির গড় ৪৭। রাহুল অবশ্য একটি ওয়ানডে বিশ্বকাপও জিততে পারেননি এখন অবধি। কিন্তু ধোনি ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন ২৮ বছরে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে।

ভারতীয় ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে ধোনি অমর এক চরিত্র। তিনি আছেন সর্বত্র। তাকে নিয়ে আলোচনা হবে, সমালোচনা হবে, তুলনাও হবে। কিন্তু তার অস্তিত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলা কঠিন। তাকে এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। তাকে অন্য কারও চাইতে স্রেফ একটা নিরিখে পিছিয়ে রাখা দুষ্কর।

Share via
Copy link