‘চিরতরুণ’ ধোনির ব্যাটিং কতটা কাজে লাগে চেন্নাইয়ের?

চেন্নাইয়ের দলীয় পরিকল্পনায় ধোনি কীভাবে ফিট হন? তার অভিজ্ঞতা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে, কিন্তু সেটা যদি খুব দেরিতে আসে, তাহলে দলের লাভ কতটা? ধোনিকে কি ফিনিশার হিসেবে না রেখে একটু আগে নামানো উচিত, যেখানে তিনি আরও বেশি বল খেলে দলকে লড়াইয়ে রাখতে পারেন?

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে চেন্নাই সুপার কিংসের হার যেন চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল। আলোচনার কেন্দ্রে তাই মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাটিং পজিশন। ধোনির দায়িত্ব আসলে কি? ম্যাচ জেতানো, নাকি শুধুই হাইপ বাড়ানো?

চেন্নাইয়ের ১৯৭ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে ধোনির যে ইনিংস প্রয়োজন ছিল, সেটা তিনি খেলেছেন—কিন্তু অনেক দেরিতে নেমে। প্রশ্ন উঠছে, ধোনিকে কি আরও আগে পাঠানো উচিত ছিল?

অস্বীকার করার উপায় নেই, ধোনি এখন আর টানা লম্বা সময় ব্যাটিং করতে পারেন না। তবে ১৫-২০ বলের জন্য তিনি দুর্দান্ত। কিন্তু তখন কি ম্যাচ থাকে? ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ১৬ বলে ৩০ রানের ঝড় তোলার পরেও জয় আসেনি, কারণ তখন দরকার ছিল আরও আগ্রাসী ব্যাটিং, যা শুরুতেই প্রয়োজন ছিল।

চেন্নাইয়ের দলীয় পরিকল্পনায় ধোনি কীভাবে ফিট হন? তার অভিজ্ঞতা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে, কিন্তু সেটা যদি খুব দেরিতে আসে, তাহলে দলের লাভ কতটা? ধোনিকে কি ফিনিশার হিসেবে না রেখে একটু আগে নামানো উচিত, যেখানে তিনি আরও বেশি বল খেলে দলকে লড়াইয়ে রাখতে পারেন? তাঁকে ফিনিশার হিসেবেই খেলতে হবে, ওটাই তাঁর কাজ। তিনি কোনো ভাবেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পর ব্যাটিং করতে পারেন না। কিন্তু, যখন নামলেন, তখন তো দলের হার নিশ্চিত হয়ে গেছে। ওই সময় নামলেই কি আর না নামলেই কি!

দিনের সেরা বোলার জশ হ্যাজলউডকে টানা দুই চার হাঁকিয়েছেন তিনি; এরপর ক্রুনাল পান্ডিয়াকে পরপর দুইটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন এখনো তাঁর ব্যাটে মরিচা ধরেনি। সুরিয়াকুমার যাদবকে চোখের পলকে স্ট্যাম্পিং করেছিলেন এই কিংবদন্তি।

সুরিয়ার সেই অসহায়ত্ব ফিরে এসেছিল ফিল সল্টের মাঝেও, দুর্দান্ত সূচনা পেয়েও ইংলিশ ওপেনার আটকা পড়েছেন ধোনির বিদ্যুৎ গতির স্ট্যাম্পিংয়ে। কয়েক মিলি সেকেন্ডের ব্যবধানই যথেষ্ট ছিল তাঁর জন্য।

তবে, ধোনির মতো কিংবদন্তিকে শুধু আবেগ দিয়ে দলে রাখলে চলবে না, সঠিক পরিকল্পনার অংশ করতে হবে—এটাই কি চেন্নাইয়ের ভাবার সময় নয়? মহেন্দ্র সিং ধোনি নামটাই একটা আবেগ, তাঁকে দেখার জন্য মাঠে ভীড় করেন দর্শকেরা। তাঁর জন্যই চেন্নাই কখনো অ্যাওয়ে ম্যাচের স্বাদ পায় না – আর এমন পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা চলে থাকলে তিনি থামবেন-ই বা কেন? – এই প্রশ্ন করাই যায়।

তেমনি, এটাও বলা যায় – ধোনি এখন যেভাবে খেলছেন, তাতে সিএসকে দলের কি লাভ হচ্ছে! হ্যাঁ, বড় একটা বানিজ্যিক লাভ হচ্ছে। স্পন্সরদের আগ্রহ বাড়ছে। কিন্তু, শিরোপার লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ার চাপটা চেন্নাই হজম করতে পারবে তো?

 

Share via
Copy link