দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগে খেলবেন ধোনি!

আপাতত ধোনি যেন দূরের এক ধ্রুবতারা, যার দিকে তাকিয়ে স্মিথের স্বপ্নের নৌকা ভেসে চলেছে। তবে এই নৌকা তীরে পৌঁছাবে কিনা, তা নির্ধারণ করবে সময়ের ঢেউ।

দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগে খেলবেন মহেন্দ্র সিং ধোনি! সাবেক দক্ষিন আফ্রিকার অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথের কণ্ঠে আরও একবার ধোনি বন্দনা। তিনি জানান, সব ভারতীয় সুপারস্টারকেই তিনি দক্ষিন আফ্রিকার ঘরোয়া ফ্রাঞ্চাইজি লিগ এসএ-টোয়েন্টিতে খেলতে দেখলে খুশি হবেন। তবে তিনি যেকোনো মূল্যে ভারতের সর্বজয়ী সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে এই লিগে অংশগ্রহণ করাতে চান।

এবছরের শুরুতেই এসএ-টোয়েন্টির লিগ কমিশনার স্মিথ জানিয়েছিলেন যে, তিনি ধোনির অবসরের পরে তাকে দক্ষিন আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগে খেলতে দেখতে চান। মুম্বাইয়ে ‘এসএ-টোয়েন্টির ভারত’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিজের পুরনো বাসনা আরও একবার জানান দিলেন তিনি।

মহেন্দ্র সিং ধোনিকে বিশেষণ দিয়ে বিশেষায়িত করা কঠিন। ঠাণ্ডা মাথার বিচক্ষণতা, কারিশম্যাটিক নেতৃত্বগুন, অভাবনীয় ব্যাটিং দিয়ে লিগ,দেশের গন্ডি পেড়িয়ে ধোনির জয়জয়কার আজ বিশ্বজুড়ে। ভারতীয় ক্রিকেটে রীতিমতো বিপ্লব এনেছিলেন নিজের সময়ে তিনি। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সহ প্রায় সকল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শিরোপাই তিনি জিতিয়েছেন ভারতকে।

তার নেতৃত্বগুন বাদ দিলেও ম্যাচে তার ইম্প্যাক্ট অপরিহার্য। লাখো ভারতীয় তরুণের আবেগ ও পরিশ্রমের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে ক্রিকেটকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন তিনি। ধোনি যেমন ঠান্ডা মাথার কৌশলী অধিনায়ক, ঠিক ততটাই বিধ্বংসী একজন ব্যাটার হিসাবে, নিত্যনতুন উদ্ভাবনী শট বা চাপের মুহূর্তে নিজেকে শান্ত রাখা সব মিলিয়ে তাকে বানিয়েছে ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফিনিশার।

এজন্যই ধোনিকে পেতে এত মরিয়া গ্রায়েম স্মিথ। তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি বহুবছর ধরে ধোনিকে জ্বালাতন করছি ধোনিকে অবসর নিতে। কারন আমি চাই, অবসরের পর অন্তত একটা বছর সে সাউথ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি লিগে খেলুক। হ্যাঁ, আমি অনেক ভারতীয় কিংবদন্তির বিপক্ষে খেলতে অনেক সংগ্রাম করেছি। ধরুন,আমি যদি এখন খেলতাম তাহলে জহির খানকে লিগ থেকে দূরেই রাখতে চাইতাম। কিন্তু সব ভারতীয় সুপারস্টাররা এসএ২০ তে খেলতে আমি বেশ খুশি হব।কিন্তু আপনি জানেন, আমি সর্বদাই ধোনিকে অবসর নিতে বলি, যেন তাকে যতদ্রুত সম্ভব একবার আফ্রিকায় নিয়ে খেলাতে পারি।’

এছাড়াও স্মিথ আশা করছেন বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) অনান্য ভারতীয়দেরও ভারতের বাইরে লিগগুলোতে খেলার সুযোগ করে দিবেন। ভারতীয় প্রতিভাবানদের দক্ষিণ আফ্রিকায় বেশ নামডাক আছে বলেই জানান স্মিথ। তিনি বলেন, ‘ভারতের তারকা প্রতিভাবানদের বেশ সুনাম আছে তার দেশে। ভারতীয়দের দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে লড়াকু মানসিকতা দেখতে মুখিয়ে আছে তাঁরা।’

একদম শেষের দিকে স্মিথ এটাও বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা যখন থেকে খেলাধুলায় ফিরে এসেছে তখন থেকেই ভারত বন্ধুর মত পাশে থেকেছে। ভারতের দক্ষিন আফ্রিকা সর্মথকরাও তাদের ক্রিকেটর ঐতিহ্যর সাথে মিশে গিয়েছে। তাই দক্ষিণ আফ্রিকার দিক থেকে, এটা একটি বড় মার্কেট, আমাদের নিজস্ব লিগকে বড় করতে আর খেলাটির প্রতি ভালোবাসা ছড়াতে আমরা অবশ্যই ভারতীয়দের এত বিশাল বড় ফ্যানবেসকে নিজেদের করে নিতে চাইবো।’ আপাতত ধোনি যেন দূরের এক ধ্রুবতারা, যার দিকে তাকিয়ে স্মিথের স্বপ্নের নৌকা ভেসে চলেছে। তবে এই নৌকা তীরে পৌঁছাবে কিনা, তা নির্ধারণ করবে সময়ের ঢেউ।

Share via
Copy link