অভিষেক শর্মা খুব মারমুখী মেজাজে ছিলেন। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ওপেনারের ব্যাটে আগুন, চোখে আত্মবিশ্বাস। ঠিক তখনই এল দিগভেশ রাঠির জাদু — অষ্টম ওভারে তাকে তুলে নিলেন ক্যাচ আউটের ফাঁদে ফেলে। উদযাপনও ছিল প্রস্তুত—নোটবুক সেলিব্রেশন!
আসরের শুরু থেকেই অদৃশ্য এই নোটবুক কম নষ্টের কারণ হয়নি। তবে, অভিষেক শর্মা মোটেও সেই কাতারে পড়েন না, যারা মুখ বুঝে অপমান গিলে নেন।
তাই, তো প্রতিক্রিয়া এল সঙ্গে সঙ্গেই। অভিষেক রেগে গিয়ে এগিয়ে গেলেন রাঠির দিকে। মাঠের খেলোয়াড়, এমনকি আম্পায়ারদেরও মাঝখানে ঢুকতে হল। জটলার মধ্য থেকে আম্পায়াররা অনেকটা জোর করেই মাঠের বাইরে নিয়ে গেলেন অভিষেক শর্মাকে।
এই ম্যাচে জয়-পরাজয় নয়, মুখ্য হয়ে থাকল সেই মুহূর্ত। ম্যাচ শেষে অবশ্য সব চুকেবুকে গেছে। রাঠি ও অভিষেক দু’জনে আলিঙ্গন করলেন। অভিষেক নিজেই বললেন, ‘ম্যাচের পরে কথা হয়েছে, এখন সব ঠিক আছে।’
লখনৌয়ের একানা স্টেডিয়ামে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক কিছুই ঘটল। বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সহ-সভাপতি রাজীব শুকলার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হল দুই ক্রিকেটারের।
এমনকি লখনৌ সুপার জায়ান্টসের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা নিজে অভিষেকের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বললেন, পাশে ছিলেন ঈশান কিষাণও। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার সকল চেষ্টা অবশ্য ব্যর্থ হয়ে গেল বিসিসিআইয়ের দেওয়া সিদ্ধান্তে।
সাজার মুখোমুখি হয়েছেন দু’জনই। একটুই বেশিই তোপ গেছে রাঠির ওপর। ম্যাচ ফি’র ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। দুই ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছেন।
আগের তিনটি-সহ মোট পাঁচ ডিমেরিট পয়েন্ট নিয়ে পরবর্তী ম্যাচে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। ২২ মে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে খেলতে পারবেন না তিনি।
এই নোটবুক সেলিব্রেশন নিয়ে চলকি আইপিএলে আগেও বিতর্ক হয়েছে। গেল এপ্রিলে দুইবার শাস্তি পেয়েছিলেন—এটা তার তৃতীয় অপরাধ। অভিষেক শর্মার ম্যাচ ফি’র ২৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। প্রথম লেভেলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য একটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়েছেন।
প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান বজায় না রাখলে, নান্দনিক উদযাপনও বুমেরাং হয়েই ফিরে আসে। অন্যদিকে, মারকাটারি ব্যাটিংয়ের সাথে সাথে মাথা ঠাণ্ডা রাখাও জরুরী। এই দু’টি বিষয় নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে ফেলেছেন দিগভেশ রাঠি ও অভিষেক শর্মা।