শেষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখল রাজস্থান

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) গ্রুপ পর্বে নিজেদের ১২ তম ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে শেষ চারের আশা বাঁচিয়ে রাখলো রাজস্থান রয়্যালস। আজ জিতে পয়েন্ট টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে রাজস্থান। তবে হারলেও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে চেন্নাই।

বড় ব্যবধানে হারলেও ঋতুরাজ গায়কোয়াদের সেঞ্চুরিতে ১৮৯ রানের বড় পুঁজি পেয়েছিল চেন্নাই। ৬০ বলে ১০১ রান করে অপরাজিত ছিলেন এই ওপেনার। রাজস্থান রয়্যালসের দুই ব্যাটসম্যান জয়স্বী জয়সওয়াল ও শিভাম দুবের ঝড়ে বৃথা যায় গায়কোয়াদের অনবদ্য সেঞ্চুরিটি।

ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ২১ বলে ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন জয়সওয়াল। আর দলের জয় নিশ্চিত করে দুবে অপরাজিত ছিলেন ৪২ বলে ৬৪ রান করে। তবে দল জিতলেও আজ বল হাতে ব্যর্থ ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশি এই পেসার আজ চার ওভারে ৫১ রান দিয়ে ছিলেন উইকেট শূন্য।

১৯০ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে যেমন শুরুর প্রয়োজন ছিল রাজস্থানকে সেটাই এনে দিয়েছিলেন জয়স্বী জয়সওয়াল ও এভিন লুইস। প্রথম পাঁচ ওভারেই দুই ওপেনার তুলে ফেলেন ৭৫ রান। ১২ বলে ২৭ রান করে শার্দুল ঠাকুরের প্রথম শিকার হয়ে লুইস ফিরে গেলে ভাঙে ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি।

লুইস ফিরে গেলেও মাত্র ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন জয়সওয়াল। তবে হাফ সেঞ্চুরির পর আর উইকেটে থাকতে পারেননি এই ওপেনার।
পরের বলেই কেএম আসিফের বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান জয়সওয়াল। ২১ বলে ৫০ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। ৮১ রানে দুই ওপেনার ফিরে গেলেও থেমে যায়নি রাজস্থানের রানের গতি।

উইকেটে এসেই ঝড় তোলেন শিভাম দুবে, আর তাকে সঙ্গ দেন সাঞ্জু স্যামসন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দু’জন যোগ করেন ৮৯ রান। এই জুটিতেই ম্যাচ পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় রাজস্থান। ২৪ বলে ২৮ রান করে ঠাকুরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে স্যামসন ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি। তখন জয় থেকে মাত্র ২০ রান দূরে ছিল রাজস্থান।

গ্লেন ফিলিপসকে সাথে নিয়ে ১৫ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন দুবে। ৪২ বলে ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। আর ফিলিপসের ব্যাট থেকে আসে ৮ বলে ১৪ রান। চেন্নাইয়ের বোলারদের ভিতর দুটি উইকেট শিকার করেন শার্দুল ঠাকুর।

এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা চেন্নাই সুপার কিংসকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার ঋতুরাজ গায়কোয়াদ ও ফাফ ডু প্লেসিস। উদ্বোধনী জুটিতে দুই ওপেনার তুলে ফেলেন ৪৭ রান। রাহুল তেওয়াতিয়াকে বাইরে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ১৯ বলে ২৫ রান করে ডু প্লেসিস স্ট্যাম্পিং হয়ে ফিরে গেলে ভাঙে এই জুটি।

এরপর উইকেটে এসে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি সুরেশ রায়না। রাহুলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৫ বলে ৩ রান করে ফিরে যান তিনি। ৫৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে মঈন আলীকে সাথে নিয়ে ৫৭ রান যোগ করেন গায়কোয়াদ। এই জুটি যখন ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল তখন আবার আক্রমণে আসেন রাহুল।

দ্বিতীয় স্পেলে বল হাতে নিয়েই অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দেন তিনি। ১৭ বলে ২১ রান করা মঈনকে ফিরিয়ে দিয়ে ভাঙেন এই জুটি। এরপর চেতন সাকারিয়ার প্রথম শিকার হয়ে ৪ বলে ২ রান করা আম্বাতি রায়ডু ফিরে গেলে ১৩৪ রানে ৪ উইকেট হারায় চেন্নাই। তবে তাতেও রানের গতি থেমে যায়নি চেন্নাইয়ের।

পঞ্চম উইকেটে গায়কড় ও রবীন্দ্র জাদেজার ২২ বলে ৫৫ রানের জুটিতে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান সংগ্রহ করে চেন্নাই। আইপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে গায়কোয়াদ অপরাজিত থাকেন ৬০ বলে ১০১ রান করে। আর জাদেজা অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ৩২ রান করে।

রাজস্থানের বোলারদের ভিতর তিনটি উইকেট শিকার করেন রাহুল তেওয়াতিয়া। এছাড়া একটি উইকেট শিকার করেন চেতন সাকারিয়া। চার ওভারে ৫১ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন মুস্তাফিজুর রহমান।

  • সংক্ষিপ্ত স্কোর

চেন্নাই সুপার কিংস: ১৮৯/৪ (ওভার: ২০; ডু প্লেসিস- ২৫, গায়ক- ১০১*, রায়না- ৩, মঈন- ২১, রায়ডু- ২, জাদেজা- ৩২*) (রাহুল- ৪-০-৩৯-৩, সাকারিয়া- ৪-০-৩১-১)

রাজস্থান রয়্যালস: ১৯০/৩ (ওভার: ১৭.৩; লুইস- ২৭, জয়সওয়াল- ৫০, স্যামসন- ২৮, দুবে- ৬৪*, ফিলিপস- ১৪*) (৪-০-৩০-২)

ফলাফল: রাজস্থান রয়্যালস ৭ উইকেটে জয়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link