রোমাঞ্চকর এক ফাইনালের মাধ্যমে পর্দা নামলো গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ ফুটবল বিশ্বকাপের। ফাইনালের মঞ্চে ছিল ব্যক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিও। পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলা আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুর্দান্ত দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দলকে তোলেন সেমিফাইনালে। এরপর ফাইনালে অতিরিক্ত সময়েরও যোগ করা সময়ে এক অতিমানবীয় সেভের পর টাইব্রেকারেও করেন আরেকটি দুর্দান্ত সেভ। বিশ্বকাপের ‘সোনালি দস্তানা’ এমিলিয়ানো দিবু মার্টিনেজ এর হাতেই সবচেয়ে বেশি মানায় সম্ভবত।
পুরো বিশ্বকাপেই দুর্দান্ত ছিলেন এমি মার্টিনেজ। রাউন্ড অফ সিক্সটিনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার একদম শেষ মুহুর্তে দুর্দান্ত এক সেভ করেন এই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক। তার সেই সেভেই অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে আলবিসেলেস্তেরা। কোয়ার্টার ফাইনালে একের পর এক সেভের পর টাইব্রেকারেও দলের নায়ক মার্টিনেজ। সেমিফাইনালের ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে তেমন বড় কোনো পরীক্ষা দিতে না হলেও ফাইনালে মার্টিনেজ ছিলেন অসাধারণ।
ম্যাচের ১২২ তম মিনিটে এক অতিমানবীয় সেভ করে ম্যাচ বাঁচান মার্টিনেজ। টুর্নামেন্টে এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে আসরের ‘সেরা গোলরক্ষক’-এর খেতাব জেতেন এমি। কিন্তু ‘গোল্ডেন গ্লাভস’ হাতে পাবার পর এমিলিয়ানো মার্টিনেজের উদযাপন ভঙ্গি নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। সোনালি গ্লাভস জোড়া কুঁচকির কাছে ধরে উদযাপন করেন এমি।
ফাইনালের মঞ্চে শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারেও নিজের নার্ভ ধরে রেখেছিলেন এমি মার্টিনেজ। টাইব্রেকারে ফ্রান্সের দ্বিতীয় শট ফেরানোর পরেও নেচে উদযাপন করেন তিনি। ফাইনাল শেষে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম লা রেডকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গোল্ডেন গ্লাভস হাতে নিয়ে এমন অঙ্গভঙ্গির ব্যাখ্যা দেন এমি।
তিনি বলেন, ‘আমি এমন উদযাপন করেছি কারণ ফ্রান্সের খেলোয়াড়রা আমারে নিয়ে মজা করছিল, উপহাস করছিল। আমি এতে খুশি ছিলাম না।’
তিনি পুরস্কারটা নিজের পরিবারকে উৎসর্গ করতে চান। বললেন, ‘আমি আমার এই স্বীকৃতি আমার পরিবারকে উৎসর্গ করতে চাই। আমি খুবই নম্র একটি পরিবার থেকে উঠে এসেছি। আমি খুবই ছোট বয়সেই ইংল্যান্ড চলে গিয়েছিলাম তাই এই এওয়ার্ড টি আমার পরিবারের জন্য।’
উদযাপন ভঙ্গি নিয়ে আলোচনা হলেও ম্যাচ শেষে স্পোর্টসম্যানশিপ এর জন্য বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছেন এমি। টাইব্রেকারে হেরে ভেঙে পড়া ফ্রেঞ্চ তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায় এমি মার্টিনেজকে।
টাইব্রেকারে প্রথম শটে এমবাপ্পে মার্টিনেজকে পরাস্থ করলেও ফ্রান্সের পরের শটটি ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনার ফাইনালের নায়ক এমি। শিরোপা নিশ্চিতের পর আর্জেন্টিনার উদযাপনের প্রাণভোমরা হয়েও ছিলেন আগ্রাসী মানসিকতার এই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।