দিবু ম্যাজিকে আর্জেন্টিনার রক্ষা

দিবু মার্টিনেজ আবারও হাজির হলেন দেবতারুপে। কঠিন ম্যাচটায় মাথা সম্ভবত তিনিই রাখলেন সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা। আরও একটি শ্বাসরুদ্ধকর জয়ের নায়ক বনে গেলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ভাগ্যের খেলা টাইব্রেকারে নিজ হাতে ভাগ্য লিখলেন এমি। তাতে করে সেমিফাইনালের টিকিট কাটে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

যদিও এদিন বেজায় খাপছাড়া লেগেছে আর্জেন্টিনাকে। ইকুয়েডর রক্ষণে ভুল করেছ খুব কমই। প্রথমার্ধের শুরুর দিকে অগোছালো লেগেছে আলবিসেলেস্তাদের। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোছানো ফুটবল খেলার চেষ্টা চালিয়েছে ইকুয়েডর। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকেও ঘটেছে একই ঘটনা।

প্রথমার্ধে ভয় ধরাতে ব্যর্থ হন লাউতারো মার্টিনেজ, লিওনেল মেসিরা। তাতে করে আত্মবিশ্বাস খানিকটা বেড়ে যায় এনার ভেলেন্সিয়াদের। যদিও কাজের কাজটা আগেই করে রেখেছিলেন লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। কর্ণার কিক থেকে বল জালে জড়িয়েছিলেন আর্জেন্টাইন এই ডিফেন্ডার।

এরপর দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি পায় ইকুয়েডর। দলের সেরা খেলোয়াড় এনার ভেলেন্সিয়া গোল করতে ব্যর্থ হন। তার অধীনের তরুণ দলটা সম্ভবত তখন হারিয়ে ফেলে নিজেদের সমস্ত আত্মবিশ্বাস। কিন্তু তারুণ্যের জোরে তারা লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে একেবারে শেষ সময় অবধি।

কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল ম্যাচে নেই কোন অতিরিক্ত সময়। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে সোজা টাইব্রেকার। ইকুয়েডর খুব করে চাইছিল ম্যাচটাকে টাইব্রেকারে নিয়ে যেতে। অবশেষে ইনজুরি সময়ের তিন মিনিটের মাথায় অর্থাৎ ৯৩ মিনিটে গিয়ে গোলের দেখা পায় ইকুয়েডর।

বদলি খেলোয়াড় কেভিন রদ্রিগেজ হেডে বল জড়ান জালে। আনন্দে ভেসে যায় পুরো ইকুয়েডর ডাগআউট। কিন্তু সেই একটি গোলই যে তাদের দুঃখের তিক্ততা বাড়িয়েছে শেষ অবধি। কেননা টাইব্রেকারে যে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ নামক এক বিরল প্রজাতির গোলরক্ষক ছিলেন তার অপেক্ষায়। টাইব্রেকারে যাকে হারানো বড় দায়। শেষ অবধি হয়েছেও তাই।

আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম পেনাল্টি শট নিতে আসেন লিওনেল মেসি। অভিজ্ঞ এই তারকা মিস করে বসেন। বল গিয়ে লাগে টপবারে।  খানিক বিমর্ষ হয়ে পড়েছিলেন হয়ত। কিন্তু এরপরের দুইটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। হাত উঁচু করে মেসিকে যেন জানালেন, ‘চিন্তা করো কেন? আমি আছি তো!’

শেষ অবধি আর কোন ভুল করেনি আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা। তাতে করে টাইব্রেকারে ৪-২ গোল ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। কঠিন এক জয় তারা পেয়েছে বটে। কিন্তু তাদের খেলার ধরণ নিশ্চয়ই দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কোচ লিওনেল স্কালোনির কপালে। সেমিফাইনালের জন্যে নতুন ছক কষবেন বলেই, উদযাপনে তার ছিল না তেমন কোন মনোযোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link