আমি খুব বিস্মিত হই, আশ্চর্য হই যখন আমাদের সেরা অলরাউন্ডারদের নাম উঠলে ‘মনি’র নামটা শুনিনা তেমন !
এনামুল হক মনি আমাদের ইতিহাসে অনন্য এক ক্রিকেটার। যার বাঁ-হাতি স্পিন ছিলো খুব কার্যকর, ব্যাটিংও ছিলো দুর্দান্ত।
লেট মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নেমে ঠাণ্ডা মাথায় বড় বড় শট খেলতে পারতেন তিনি কম ফুটওয়ার্কে এবং দলের প্রয়োজনে। ঢাকার প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে তার বেশ কিছু ভালো ইনিংস যেমন আছে, জাতীয় দলের হয়েও তার পারফরম্যান্স খুব খারাপ না। আইসিসি ট্রফিতে তাকে ভালো ইনিংস যেমন খেলতে দেখেছি ইউরোপের মাটিতে, ঢাকা স্টেডিয়ামে পশ্চিমবঙ্গ (কলকাতা) দলের বিপক্ষে হার্ড হিটিং সেঞ্চুরিও করতে দেখেছি।
এনামুল হক মনি খুব ভালো ফিল্ডারও ছিলেন। তার হাত থেকে ক্যাচ পড়তোই না। মজার ব্যাপার হলো, হাঁটার ধরণ বা চালচলন-কথায়বার্তায় মনিকে খুব একটা ইমপ্রেসিভ লাগতো না। মনেই হতোনা তিনি একজন ডেডিকেটেড, বড় মাপের ক্রিকেটার।
অথচ, খেলার মাঠে এত কনফিডেন্ট দেশি ক্রিকেটার আমি কমই দেখেছি জীবনে। লিগে যে দলেই খেলতেন তিনি – হয়ে উঠতেন সেই দলের মূল ভরসা।
জাতীয় দলে তাঁর এমন অনেক ইনিংস আছে, যেখানে তিনি লেট মিডল অর্ডারে বিপদের সময় দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। জরুরী সময় দলকে দিয়েছেন ব্রেক থ্রু। পরিসংখ্যান দিয়ে এই আধুনিক ক্রিকেটের যুগে সেসব ব্যাখ্যা করা যাবে না। কার্যকারিতা ছিল তাঁর, দলের জন্য সম্পদ ছিলেন।
বোলিং, ব্যাটিং,ফিল্ডিং কিংবা আত্মবিশ্বাস – একসাথে সবকিছুতেই নিয়মিত উজ্জ্বল এই ক্রিকেটার যদি এই সময়ে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড় হতেন, আমি বিশ্বাস করি আরেকজন সাকিব আল হাসান অথবা ‘প্রায়’ সাকিব আল হাসান থাকতো আমাদের।
এনামুল হক মনির ক্যারিয়ার
- টেস্ট – ১০ টি (১৮ উইকেট ও ১৮০ রান)
- ওয়ানডে – ২৯ টি (১৯ উইকেট ও ২৩৬ রান)
- প্রথম শ্রেণি – ৩৪ টি (১২৯ উইকেট ও ১০৩৩ রান)