অলিখিত নকআউট। হারলেই বাদ সমীকরণের ম্যাচ ঠিক যেমন হওয়া উচিত তেমনই হয়েছে। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মধ্যকার ম্যাচটার ফলাফল এসেছে একেবারে শেষ বলে। ম্যাচের অধিকাংশ সময়ে লাগাম নিজেদের দখলেই রেখেছিল শ্রীলঙ্কা।
তবে হুট করেই ম্যাচের পেন্ডুলাম ঝুকে গিয়েছিল পাকিস্তানের দিকে। ঠিক যেমনটি চেয়েছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। তিনি বলেন, ‘আমরা স্রেফ আমাদের শ্রেষ্ঠ ওভারগুলো করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’ ইফতেখার আহমেদ আর শাহিন শাহ আফ্রিদি সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েই বল করেছিলেন। হুট করেই শ্রীলঙ্কার সব পরিকল্পনা ওলোট-পালোট হয়ে যেতে শুরু করে।
স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকেই পড়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে একজন অন্তত নিজের স্নায়ুচাপটা রেখেছিলেন নিজের দখলে। তিনি চারিথ আসালাঙ্কা। শেষ বল অবধি আসালাঙ্কা নিজের উপর রেখেছিলেন আস্থা। এমনকি তার সতীর্থরাও ভরসা রেখেছিলেন তার উপর।
অধিনায়ক দাসুন শানাকা বলেন, ‘আমরা তাদের (পাকিস্তানকে) ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছিলাম তবে চারিথ নিজের নার্ভ ধরে রেখেছিল।’ ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় কুশল মেন্ডিসও প্রশংসা করেছেন আসালাঙ্কার। তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকটি উইকেট পড়ে গিয়েছিল। তবে আমি আশা করছিলাম যে চারিথ ম্যাচ শেষ করেই আসবে। সে আগেও জয় নিয়ে ফিরেছে এবং সে এবারও ফিরল।’
শেষ ওভারে নয় রান ছিল প্রয়োজন। শেষ দুই বলে ছয়। তবে ৪২ তম ওভারের তৃতীয় বলে প্রমোদ মাদুশাঙ্কা নিজের উইকেটটি বিলিয়ে দেন। বৃহত্তর স্বার্থেই আসলে সেই আত্মত্যাগ। কেননা তখনও যে সেট ব্যাটার চারিথ আসালাঙ্কা ছিলেন নন স্ট্রাইক প্রান্তে। তিনিই তো শেষমেশ ম্যাচ জেতালেন।
তবে জয়টা আরও একটু মসৃণ হতেই পারত শ্রীলঙ্কার। কুশল মেন্ডিসের অনবদ্য ৯১ রানের ইনিংসটি সেই পথেই নিয়ে যাচ্ছিল লঙ্কানদের। তবে হুট করেই ইফতেখার আহমেদ বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন। তবে তার তোলা দেয়ালকে শক্ত করে মোহাম্মদ হারিসের দূর্দান্ত এক ক্যাচ।
সেখান থেকেই আসলে মোমেন্টাম পাকিস্তানের দিকে ঝুকতে থাকে। তবে শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা আগে থেকেই পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছিলেন। তারা কোনভাবেই শুরুর দশ ওভারের মধ্যে উইকেট হারাতে চাননি। যেমনটা হয়েছিল ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে।
এ নিয়ে অধিনায়ক শানাকা বলেন, ‘ব্যাটিং করবার আগে আমরা আলাপ করছিলাম। কোচিং স্টাফ এবং আমি বলেছিলাম যে আমরা ভারতের বিপক্ষেই ভুল করে ফেলেছি। শুরুর ১০ ওভারেই উইকেট দিয়ে এসেছি। আজকে আমরা একই ভুল করতে চাইনি।’
ভুল থেকেই শিক্ষা নিয়েছেন লঙ্কান ব্যাটাররা। পাকিস্তানের পেস আক্রমণের সামনে দাঁড়িয়ে তারা বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেছেন। সফলতাও পেয়েছেন। আর শেষ অবধি পেয়েছেন ফাইনালের টিকিট।