আইপিএলে বাংলাদেশিদের হতাশার কাব্য

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের বৈশ্বিক আসরে বাংলাদেশিদের খুব একটা কদর নেই। সাকিব আল হাসানকে ব্যতিক্রম ধরাই যায়, যিনি প্রায় সব বড় টুর্নামেন্টেই খেলে ফেলেছেন। মুস্তাফিজুর রহমানকেও মাঝেমধ্যে দেখা যায়, বিশেষ করে আইপিএলে। কিন্তু বাকিদের গল্পটা অন্যরকম— অনেকেই দল পেয়েছেন, কিন্তু মাঠে খুব বেশি সুযোগ পাননি। সুযোগ পেলেও অধিকাংশের ক্যারিয়ার সীমাবদ্ধ থেকেছে কয়েকটি ম্যাচেই।

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের বৈশ্বিক আসরে বাংলাদেশিদের খুব একটা কদর নেই। সাকিব আল হাসানকে ব্যতিক্রম ধরাই যায়, যিনি প্রায় সব বড় টুর্নামেন্টেই খেলে ফেলেছেন। মুস্তাফিজুর রহমানকেও মাঝেমধ্যে দেখা যায়, বিশেষ করে আইপিএলে। কিন্তু বাকিদের গল্পটা অন্যরকম— অনেকেই দল পেয়েছেন, কিন্তু মাঠে খুব বেশি সুযোগ পাননি। সুযোগ পেলেও অধিকাংশের ক্যারিয়ার সীমাবদ্ধ থেকেছে কয়েকটি ম্যাচেই।

আইপিএলের মঞ্চে এসে যারা হারিয়ে গেছেন, তাদের নিয়েই আজকের এই ফিরে দেখা।

  • আব্দুর রাজ্জাক (২০০৮) – ইতিহাসের প্রথম, তবে এক ম্যাচেই শেষ

বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনিই প্রথম আইপিএলে সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০০৮ সালের আসরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু তাঁকে দলে নেয় ৫০ হাজার ডলারে। তখনকার অন্যতম সেরা বাঁহাতি স্পিনার রাজ্জাক খেলেছিলেন মাত্র একটি ম্যাচ। দুই ওভারে ২৯ রান খরচ করার পর আর কখনোই তাকে ব্যাঙ্গালুরুর একাদশে দেখা যায়নি। ব্যাট হাতেও দুই বল খেলে শূন্য রানে ফিরেছিলেন।

  • মাশরাফি বিন মুর্তজা (২০০৯) – ছয় লাখ ডলারের এক ম্যাচ!

নিলামে মাশরাফিকে পেতে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের মধ্যে লড়াই হয়েছিল। শেষমেশ ছয় লাখ ডলারে তাঁকে দলে টানে কেকেআর। কিন্তু খেলতে দেন মাত্র একটি ম্যাচ— সেটাই হয়ে ওঠে ভুলে যাওয়ার মতো এক রাত।

ডেকান চার্জার্সের বিপক্ষে সে ম্যাচের শেষ ওভারে ২৬ রান দিয়ে কলকাতাকে হারিয়ে দেন মাশরাফি। চার ওভারে ৫৮ রান দিয়েছিলেন, ব্যাট হাতেও দুই বলে করেছিলেন দুই রান। তবে অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় রানআউট করেছিলেন। কিন্তু সেই স্মৃতিটুকুও হারিয়ে যায় শেষ ওভারের দু:স্বপ্নে।

  • মোহাম্মদ আশরাফুল (২০০৯) – শচীন-জয়াসুরিয়ার দলে জায়গা মিলল, কিন্তু এর আগেই সব শেষ!

বাংলাদেশের প্রথম সুপারস্টার ক্রিকেটার আশরাফুল আইপিএল খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে। কিন্তু দলে যখন শচীন টেন্ডুলকার, সনাথ জয়াসুরিয়ার মতো মহাতারকারা, তখন জায়গা পাওয়া সহজ নয়।

তিনি একমাত্র সুযোগ পেয়েছিলেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে এক অগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। ১০ বলে মাত্র ২ রান করার পর তাকে আর কখনোই আইপিএলে দেখা যায়নি। পরে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ক্যারিয়ার আরও পিছিয়ে যায়।

  • তামিম ইকবাল (২০১২-১৩) – দুই বছর দলে, কিন্তু একটিও ম্যাচ নয়!

তামিম ছিলেন অন্যরকম উদাহরণ। ২০১২ সালে পুনে ওয়ারিয়র্স তাকে দলে নেয়, কিন্তু একাদশে রাখেনি। পুরো আসর বেঞ্চে কাটিয়ে দেশে ফেরেন। পরের মৌসুমেও পুনে তাঁকে ধরে রেখেছিল, কিন্তু একই ঘটনা ঘটল— একটিও ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেন না। হতাশ তামিম এরপর আর আইপিএলে নাম লেখাননি। যদিও, তাঁকে অগুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচে সুযোগ দিতে চেয়েছিল পুনে, তবে তামিমই আর খেলতে চাননি।

  • লিটন দাস (২০২৩) – সাকিবের সঙ্গী হয়ে গেলেন, খেললেন মাত্র এক ম্যাচ

আইপিএল ২০২৩-এর নিলামে নাম উঠেছিল লিটনের। অবশেষে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাকে কিনে নেয়, সঙ্গে নেয় সাকিবকেও। বাংলাদেশি সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল, তিনি অন্তত কিছু ম্যাচ পাবেন।

কিন্তু কেকেআরের বিদেশি তারকায় ঠাসা স্কোয়াডে লিটনকে জায়গা দিতে চায়নি দল। সুযোগ পেলেন মাত্র এক ম্যাচ— দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে। ওপেনিংয়ে নেমে ৪ বলে ৪ রান করেই স্টাম্পড হলেন। এরপর তাঁর দিকে আর ফিরেও তাকায়নি কেকেআর, লিটনও ফিরে আসেন দেশে।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link