বহুদেশিক ফুটবলার সমগ্র

ঢাকার কিংবা কলকাতার কোন এক এলাকার দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাড়া কিংবা মহল্লার মধ্যকার ম্যাচ। পুরো এলাকা জুড়েই থমথমে আবহাওয়া বিরাজমান। বিকেল হলেই মাঠে বসবে বুড়ো থেকে ছোকড়া সবার মিলনমেলা। কিন্তু হঠাৎ করে খবর এলো উত্তর পাড়ার একজন খেলবেন দক্ষিণ পাড়ার হয়ে। উত্তর পাড়ায় দিয়ে বয়ে যাবে এক নি:শব্দ ঝড়। যে ঝড়ের তাণ্ডব দেখা যায় না, যে ঝড় শুধু অনুভব করা যায়। ম্যাচে কি ঘটবে?

ম্যাচে যাই ঘটুক, এমন দলবদল গোটা বিশ্বের পেশাগত ফুটবলে খুব অপরিচিত নয়। বিশ্বের এমন অনেক খেলোয়াড়ই রয়েছেন যারা দু’টো ভিন্ন দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন তাদের পেশাগত জীবনে। কাগজে কলমে এমন খেলোয়াড়ের সংখ্যা অসংখ্য। তাঁদের মধ্য থেকে আজ এমন কিছু  খেলোয়াড়দের পসরা নিয়ে এসেছি যারা খেলেছেন দু’টো ভিন্ন জাতীয় দলে। চলুন তবে শুরু করা যাক।

  • উইলফ্রেড জাহা

তালিকার শুরুতেই হাজির ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় উইলফ্রেড জাহা। তিনি বর্তমানে খেলছেন ক্রিস্টাল প্যালেসের হয়ে। ক্রিস্টাল প্যালেস একাডেমির এই খেলোয়াড় খেলেছিলেন ইংল্যান্ড বয়স ভিত্তিক দলে। ২০১২ তে ডাক পান ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেলার। অংশও নেন দু’টি ম্যাচে।

কিন্তু, মূল একাদশে জায়গা না পাওয়ার শঙ্কা এবং নিজের দেশেকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগের হাতছানি উপেক্ষা করতে না পেরে তাঁর ২০১৭ সালে আফ্রিকান নেসন্স কাপে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আইভেরি কোস্ট জাতীয় দলের যাত্রা শুরু করেন। আইভেরি কোস্টের হয়ে এখন পর্যন্ত খেলা ২০ ম্যাচে পাঁচ বার বল জালে জড়িয়েছেন ক্রিস্টাল প্যালেসের আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় উইলফ্রিড জাহা।

  • ডেকলান রাইস

ইংল্যান্ডের হয়ে ২০২০ এর ইউরো খেলা ডেকলান রাইসের জন্ম লন্ডনে। তার আদিনিবাস আয়ারল্যান্ডে হওয়ায় তিনি তাঁর পেশাগত জীবনের শুরুতে খেলেছেন আয়ারল্যান্ড অনূর্ধ্ব ১৬ থেকে অনূর্ধ্ব ২১ পর্যন্ত সব দলে খেলেছেন। আয়ারল্যান্ড জাতীয় দলের হয়েও তিন ম্যাচ খেলেছেন রাইস।

তবে ইংল্যান্ডের মতো দাপুটে ও বড় দলে খেলার ইচ্ছে পাশাপাশি বড় অর্জনের ইচ্ছেতেই তিনি যোগ দেন ইংলিশ দলে। ইংল্যান্ডের হয়ে ২৬ ম্যাচে অংশ নিয়েছেন তরুণ এই মধ্যমাঠের খেলোয়াড়। দু’টো গোলও করেছেন ব্রিটিশদের হয়ে। আয়ারল্যান্ড থেকে ইংল্যান্ডে স্থানান্তরিত হওয়াতে তাকে অনলাইনে জীবননাশের হুমকিরও সম্মুখীন হতে হয়েছে। ভাবখানা পাড়ার ফুটবলের মতোই।

  • নাসের চাডলি

দু’টো ভিন্ন দেশের নাগরিকত্ব থাকা সুবিধা কিংবা অসুবিধার কিনা তা যাচাই করা বড্ড মুশকিল। তবে সবচেয়ে বড় সুবিধাটা হলো দু’টোর মধ্যে তূলনামূলক লাভজনক দিকটা বেছে নেওয়া যায়। তেমনটাই করেছেন নাসের চাডলি। পৈতৃক সূত্রে মরোক্কোর নাগরিকত্ব থাকার পাশাপাশি চাডলি ছিলেন বেলজিয়ামেরও নাগরিক৷

সুযোগ-সুবিধার বিচারে ফুটবলে বেলজিয়ামের হয়েই প্রতিনিধিত্ব করবার সিধান্তই নিয়ে বসলেন নাসের চাডলি। মরোক্কোর হয়ে একটি মাত্র প্রীতি ম্যাচে অংশ নেওয়ায় বেলজিয়ামের হয়ে খেলতে তেমন কোন বাঁধার মুখোমুখি হতে হয়নি চাডলিকে। ২০১৪, ২০১৮ বিশ্বকাপ ও ২০২০ ইউরোতে বেজলজিয়াম জাতীয় দলের হয়ে অংশগ্রহণকারী চাডলি মোট ৬৬ ম্যাচে গোল পেয়েছেন ৮ টি।

  • জারমেইন জোনস

আমেরিকান আর্মির সদস্য বাবার ছেলে জারমেইন জোনসের জন্ম জার্মানিতে। সে সুবাদে সুযোগ ছিলো ফুটবলে যেকোন এক দেশের জার্সি গায়ে জড়ানোর। আপাত দৃষ্টিতে জার্মানির মতো ফুটবলীয় পরাশক্তি দলেই খেলার প্রবল ইচ্ছে ছিলো জোনসের৷ খেলেছেনও তিনটি প্রীতি ম্যাচ।

তবে, জার্মান কোচ জোয়াকিম লোর মতিগতি আন্দাজ করতে পেরে জারমেইন জোনস ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলার। ৬৯ ম্যাচ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে চার গোল করেছেন মধ্যমাঠের এই খেলোয়াড়। বর্তমানে ফুটবলের ছোট সংস্করণ ফুটসালে মনোনিবেশ করেছেন ৩৯ বছর বয়সী জারমেইন জোনস।

  • ডিয়েগো কস্তা

পাঁচ বারের বিশ্বকাপ জয়ী দল ব্রাজিল। স্বভাবতই অধিকাংশ ব্রাজিলে জন্মগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের ইচ্ছে জাতীয় দলের সেই হলুদ জার্সিটা গায়ে জড়িয়ে দাপিয়ে বেড়াবে ফুটবল মাঠ। কিন্তু ডিয়েগো কস্তা ছিলেন খানিকটা ভিন্ন। ব্রাজিল কোচদের অবহেলার স্বীকার এবং স্পেন ফুটবল সংস্থার ইচ্ছায় প্রভাবিত হয়ে ডিয়েগো কস্তা যোগ দেন ২০১০ বিশ্বকাপ জয়ী স্পেন শিবিরে৷

ব্রাজিলের হয়ে দু’টি  প্রীতি ম্যাচে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামবার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি৷ দর্শক সমর্থকরা যখন আশায় ছিলেন যে এথলেটিকো মাদ্রিদের এই তারকা আসন্ন বিশ্বকাপে খেলতে চলেছেন ব্রাজিলের হয়ে সে আশায় পানি ঢেলে ২০১৪ বিশ্বকাপ স্পেনের হয়ে খেলেন কস্তা। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপেও তিনি স্পেনের প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০১৮ সালে সর্বশেষ স্পেনের হয়ে খেলা কস্তা সর্বমোট ২৪ ম্যাচে ১০ গোল করেছেন।

  • থিয়াগো মোত্তা

২০১৮ সালে খেলোয়াড়ের পাঠ চুকিয়ে বর্তমানে পুরোদস্তুর কোচ বনে যাওয়া থিয়াগো মোত্তার জন্ম ব্রাজিলে। তবে তিনি তাঁর খেলোয়াড়ী জীবনে ইতালি জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে খেলেছেন ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল অবধি। এই সময়ে খেলা ৩০ ম্যাচে করেছেন এক গোল। তবে তিনি একটা দিকে খানিকটা ব্যতিক্রম।

ফিফার নিয়ম মোতাবেক কোন খেলোয়াড়ের যদি দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকে তবে তিনি যেকোন এক দেশ বাছাই করতে পারবেন। ততক্ষণ অবদি যতক্ষণ না পর্যন্ত তিনি কোন একটি দেশের হয়ে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশগ্রহণ করছেন।

থিয়াগো মোত্তা ব্রাজিল অনূর্ধ্ব ২৩ দলের হয়ে কনকাকাফে অংশ নেওয়ায় তার ইতালি জাতীয় দলের হয়ে খেলা নিয়ে জল ঘোলা হলেও, পরবর্তীতে ইতালির অনুরোধে ফিফা বিশেষ ছাড়পত্র প্রদান করে৷ ২০১১ সালে ইউরোপের প্রাচীনতম নগরীর দেশ ইতালির হয়ে অভিষেক ঘটে মোত্তার।

  • ওলেগ সালেঙ্কো

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ওলেগ সালেঙ্কো ম্যাচ খেলেছেন সর্বমোট ১৩ টি। এর মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে খেলেছেন চারটি, ইউক্রেনের হয়ে একটি ও রাশিয়ার হয়ে বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ মিলিয়ে খেলেছেন আটটি।

১৯৯৪ সালের যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে সালেঙ্কো গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের বিপক্ষে করেছিলেন পাঁচ গোল। তাঁর অভূতপূর্ব নৈপূন্যে ৬-১ গোলের জয় পায় রাশিয়া। তবুও রাশিয়া ব্যর্থ হয় পরবর্তী রাউন্ডে উত্তীর্ণ হতে। কিন্তু সেবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ খেলে ছয় গোলের সুবাদে গোল্ডেল বুটটি বুলগেরিয়ান খেলোয়াড় হিস্টো স্টোইচকভের সাথে যৌথভাবে জিতে নেন ওলেগ সালেঙ্কো। তিনিই একমাত্র ফুটবলার যিনি বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুটের খেতাব জিতেছেন শুধু প্রথম রাউন্ড খেলেই।

  • মিশেল প্লাতিনি

দূর্নীতির দায়ে জেল খাটা উয়েফার ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনিও খেলেছেন দু’টো ভিন্ন দেশের হয়ে৷ ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে স্বর্ণালি দিন পার করা প্লাতিনি তিন তিন বার জিতেছেন ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের একক পুরষ্কার ব্যালন ডি’অর৷ তাছাড়া ফ্রান্সের হয়ে জিতেছেন ১৯৮৪ সালের উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও ১৯৮৬ এর মেক্সিকো বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান দখলের সম্মান জোটে তাঁর।

পেশাগত জীবনের শেষের দিকে মাত্র একটি ম্যাচের জন্যে কুয়েত জাতীয় দলের হয়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে ম্যাচ খেলেন মিশেল প্লাতিনি। ফ্রান্সের হয়ে ৭২ ম্যাচে ৪১ গোল করা তাঁর সময়কার অসাধারণ এই এটাকিং মিডফিল্ডার ১৯৮৮ তে অবসর গ্রহণ করেন।

  • ফেরেঙ্ক পুসকাস

ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার ফেরেঙ্ক পুসকাস ও খেলেছেন দুইটি দেশের হয়ে। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা পুসকাস ছিলেন অদম্য, প্রতিপক্ষ রক্ষণের ত্রাস। হাঙ্গেরিয়ান ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ও সেরা এই ফুটবলার ৮৫ ম্যাচে ৮৪ গোল করেছেন তার পেশাগত জীবনে, হাঙ্গেরির হয়ে।

১৯৫২ এর অলেম্পিকে হাঙ্গেরির স্বর্ণ জয়ে রেখেছিলেন অনস্বীকার্য ভূমিকা। দলের হয়ে চার গোল আদায় করেন পুসকাস। স্বর্ণ জয়ের ফাইনালে একটি মাত্র গোলটিও করেন ফেরেঙ্ক পুসকাস, যুগোস্লাভিয়ার বিপক্ষে। পরবর্তীতে ১৯৫৪ এর বিশ্বকাপে তিন ম্যাচ খেলে করেছিলেন চার গোল।

ফাইনালেও এক গোল করেছিলেন তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে। তবুও হেরে গিয়েছিল পুসকাসের দল হাঙ্গেরি। পরবর্তীতে ক্যারিয়ারের শেষের দিকে ১৯৬১-৬২ এই দুই সালে স্পেনের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ান ইতিহাস বিখ্যাত ফেরেঙ্ক পুসকাস। ১৯৬৬ সালে রিয়াল মাদ্রিদে থাকাকালীন অবসর ঘোষণা করেন এই কিংবদন্তি।

  • হোসে আলতাফিনি

‘মাজ্জোলা’ খ্যাত এই ফুটবলার দু’টি বিশ্বকাপ খেলেন। সেটাও আবার দুটি ভিন্ন দেশের হয়ে। প্রথমটি খেলেন ১৯৫৮ সালে, ব্রাজিলের হয়ে। তখন তাঁর বয়স ১৯। পেলে পর দলের সবচেয়ে তরুণ খেলোয়াড়। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ জিতে ব্রাজিল। ব্রাজিলের হয়ে মোট আট ম্যাচ খেলে করেন চার গোল।

পরের বিশ্বকাপটা তিনি খেলেন ইতালির হয়ে, ১৯৬২ সালে। ইতালি প্রথম পর্ব থেকেই বাদ পড়ে। ইতালির হয়ে তিনি ছয় ম্যাচ খেলে করেন পাঁচ গোল। মোট ১৪ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই স্ট্রাইকার করেন নয় গোল।

  • আলফ্রেডো ডি স্টেফানো

রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব কিংবদন্তিদের তালিকার সবার উপরে হয়ত স্থান পাবেন আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণকারী আক্রমণভাগের এই খেলোয়াড় গায়ে জড়িয়েছিলেন তিনটি দেশের জার্সি। যথাক্রমে আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া ও স্পেন৷ বর্ণিল খেলোয়াড়ী জীবনে ডি স্টেফানোর আক্ষেপ বিশ্বকাপ খেলতে না পারার।

রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সম্ভাব্য সবকিছু জয়েও কেমন একটা শূন্যতা রয়েই গেলো কিংবদন্তি এই খেলোয়াড়ারের অর্জলের শেলফটাতে। তিনটি দেশের হয়ে ফুটবল খেলেও জেতা হয়নি বিশ্বকাপ। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় তিনি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন অদ্ভুতুড়ে সব কারণে৷ আর্জেন্টিনার হয়ে দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতেন ডি স্টেফানো। তবে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময় কেটেছে স্পেনের জার্সি গায়ে। স্পেনের হয়ে ৩১ ম্যাচে করেছেন ২৩ গোল। এছাড়াও কলম্বিয়ার হয়ে বেশকিছু প্রীতি ম্যাচেও অংশ নিয়েছিলেন কিংবদন্তি আলফেডো ডি স্টেফানো।

দ্বৈত নাগরিকত্ব ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্যে যেমন সুযোগের দাড় খুলে দেয় তেমনি করে সৃষ্টি করে নানা বিতর্কের। সব রকম বিতর্কের উর্ধ্বে গিয়ে খেলোয়াড়রা কখনো চেয়েছেন নিজের মাতৃ কিংবা পিতৃভূমির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে। অথবা সুযোগ-সুবিধা, অর্থ, যশ এসবের হাতছানিতে গায়ে জড়িয়েছেন অন্যকোনো দেশের জার্সি। কালক্রমে আরো এমন ঘটনা ঘটবে তা বলাইবাহুল্য। উদাহরণ হতে পারে নাইজেরিয়ান বংশদ্ভূত এলিটা কিংসের বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে সাফের স্কোয়াডে জায়গা করে নেওয়া। যে করেই হোক ফুটবলটা খেলুক ফুটবলেরা, নিন্দা করুক নিন্দুকেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link