কখনও নায়ক, কখনও খলনায়ক – এভাবেই জীবন চলছে গৌতম গম্ভীরের। পরিস্থিতির খাতিরে নিজের পোশাক পাল্টাচ্ছেন তিনি। তবে বর্তমান সময়টা খুব একটা সহজ যাচ্ছে না তাঁর।
গৌতম গম্ভীরের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই ভারতীয় দল এক কঠিন রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তার আগমন ঘটে এমন সময়ে, যখন কোহলি ও রোহিত টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন এবং দলের নেতৃত্বের ভার ওঠে সুরিয়াকুমার যাদবের কাঁধে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে গম্ভীর- সুরিয়া জুটি ভালো সূচনা করলেও, টেস্ট ফরম্যাটে ভারত রয়েছে চরম ব্যর্থতায়।
দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। এরপর বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও ৩-১ ব্যবধানে হেরে যায় তারা। এই দুটি সিরিজ হারের পরই শুরু হয় গম্ভীরের কোচিং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন।
বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) পক্ষ থেকেও আসতে শুরু করে কড়া বার্তা। সেসময় জাতীয় দলের মূল খেলোয়াড়দের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতে দেখা যায়, রোহিত-কোহলির মতো তারকারা রঞ্জি ট্রফি খেলেন নিজেদের ফিরিয়ে আনতে।
এতকিছুর মধ্যেই আসে সবচেয়ে চমকপ্রদ ঘোষণা— দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা, দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। জানা যায়, ইংল্যান্ড সফরের দলে তাদের রাখার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না নির্বাচকদের। সেই আভাসেই তাঁরা নিজ থেকেই অবসরের সিদ্ধান্ত নেন।
এ নিয়ে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার আতুল ওয়াসন বলেন, ‘প্রতিটি কোচকেই স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। বিরাট ও রবি শাস্ত্রীও পূর্ণ ক্ষমতা পেয়েছিলেন। তারা অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কিছু ভুলও ছিল। যেমন ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমরা একজন লেগ-স্পিনারও পাঠাইনি।’
গম্ভীরের ক্ষেত্রেও এখন একই বাস্তবতা। তাঁকে পুরো স্বাধীনতা দেওয়া হলেও, ফলাফল যদি না আসে, তাহলে সেই দায়ও তাকেই নিতে হবে। বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা, ‘ডেলিভার করতে না পারলে বিকল্প ভাবা হবে।’
ভারতের ক্রিকেট গল্পে ব্যর্থ চরিত্রের স্থান দেওয়া হয় না। সাদা বলে গম্ভীর যুগ বেশ ভালোভাবে চললেও লাল বলের ক্রিকেট নিয়ে দুশ্চিন্তার রেখা দেখা দিচ্ছে। আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজটা তাই তো মহাগুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। গম্ভীরের কাঁধে তাই তো বাড়তি চাপ। এই চাপ সামলে কি সফল হবেন তিনি, নাকি এই গল্পের শেষেও থাকবে ব্যর্থতার গ্লানি?